‘সাবধান বেইলি ব্রিজের ওপর সর্বোচ্চ ওজন সীমা ৫ টন।’ আদেশক্রমে নির্বাহী প্রকৌশলী সড়ক জনপথ বিভাগ (সওজ)। এমন নির্দেশনার বিলবোর্ড থাকলেও কে শুনছে কার কথা। এসবের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের ওপর দিয়ে চলতে অতিরিক্ত ওজনের মালবাহী পরিবহন। যেকোন সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা, এমন আশংকা এলাকাবাসী।
ঢাকা-আরিচা ও চন্দ্রা-মির্জাপুর-টাংগাইল মহাসড়কের বাইপাস ধামরাই থেকে কালিয়াকৈর আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রস্তকরণের কাজ চলছে প্রায় মাসখানেক ধরে। কিন্তু যানবাহন চলাচলে কোনো ডাইভারশন বা বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই ভেঙে ফেলেছে ধামরাই পৌরসভার আইঙ্গন এলাকায় বংশী নদীর ওপর প্রায় ১৫ বছর আগে নির্মিত সেতুটি। ফলে নিরুপায় হয়ে বিকল্প হিসেবে পৌরসভার মাধববাড়ি ঘাটে শরীফবাগ এলাকায় বংশী নদীর ওপর প্রায় ৩০ বছর আগে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজের ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ভারী যানবাহনসহ যাত্রীরা। প্রতিদিন তিন-চার সহস্রাধিক ছোটবড় যানবাহন চলাচল করায় যেকোনো মুহূর্তে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের ধামরাইয়ের ইসলামপুর-নয়ারহাট কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সংযোগ ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা থেকে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর আঞ্চলিক মহাসড়কটির ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ঢুলিভিটা থেকে আইঙ্গন সেতু পর্যন্ত ২৪ ফুট এবং ওই সেতু থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত ১৮ ফুট প্রস্তকরণের কাজ চলছে মাসখানেক ধরে। এরই ধারাবাহিকতায় বংশী নদীর ওপর নির্মিত ধামরাইয়ের আইঙ্গনের সরু সেতুটি ভাঙার কাজ চলছে। কিন্তু যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক বা কোনো ডাইভারশন তৈরি করা হয়নি। ফলে ধামরাই বাজারের ব্যস্ততম প্রধান সরু সড়ক হয়ে পৌরসভার মাধববাড়ি ঘাট শরীফবাগ এলাকায় বংশী নদীর ওপর ১৯৯১ সালে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজের ওপর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মালবাহী ভারী যানবাহন, গার্মেন্ট শ্রমিকবাহী বাস, ইট ও মাটিভর্তি ট্রাক, বালুভর্তি ড্রাম ট্রাক, বড়বড় কাভার্ড ভ্যান, ম্যাক্সি, ইজিবাইক, হ্যালোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকসাসহ অসংখ্য ছোটবড় যানবাহনে চালক ও যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
এতে সেতুটি অতিরিক্ত লোডে ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে গেছে অনেকাংশে। এ ছাড়া ধামরাই বাজার থেকে শরীফবাগ ব্রিজের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সড়কটুকু এমন সরু যে একটি বাস বা ট্রাক অথবা দুটি প্রাইভেটকার পাশাপাশি পাশ কাটতে পারে না। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে প্রতিদিন। এতে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পোশাক শ্রমিকরা কর্মস্থলে বা গন্তব্যস্থলে সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারছে না।
স্থানীয় পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সানাউল হক সুজন, ছাত্রলীগ নেতা স্বপন, মোশারফ হোসেন, দেলোয়ার হোসেনসহ অনেকে জানান, মাসখানেক ধরেই এ সেতু পার হওয়ার সময় বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। আবার পথচারীদের চলাচল করতে চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।
ধামরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন বলেন, যানচলাচলের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ডাইভারশন করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরণের বিপদ ঘটতে পারে।
ধামরাই মেয়র গোলাম কবির মোল্লা বলেন, যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না করায় অতিরিক্ত যানবাহনের ভারে যেকোনো মুহূর্তে মাধববাড়ির সেতুটি ভেঙে পড়তে পারে। এতে জীবননাশের আশঙ্কা রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ডাইভারশন বা বিকল্প রাস্তা করা অত্যন্ত জরুরি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন