শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা
গাজীপুরের শ্রীপুরে ডাকাত আতঙ্কে এলাকাবাসী। গত পনের দিনে পাঁচ বাড়ি ও দোকানে ডাকাতি এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদের আঘাতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশের কোন ভূমিকা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, গত ১০ মে মঙ্গলবার গভীর রাতে থানা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার ব্যবধানে বরমী ইউনিয়নের গাড়ারণ গ্রামের আব্দুল হাই মন্ডলের বাড়িতে ২০/২৫ জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে বাড়ির লোকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আসবাবপত্র ভাংচুর তছনছ করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে যায়। একই রাতে ডাকাতদল পার্শ্ববর্তী নজরুল ইসলামের বাড়িতে হানা দিয়ে বাড়ির কর্তা নজরুল ইসলামকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মারপিট করে জখম করে। এ সময় তার স্ত্রী মনোয়ারা এগিয়ে এলে তার দুই কান ছিড়ে স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। তখন মনোয়ারা ডাকচিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। পরে আহত মনোয়ারাকে রাতেই শ্রীপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে, গত ২৫ এপ্রিল তেলিহাটি ইউনিয়নের ডুমবাড়িচালা গ্রামে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে স্থানীয় জনতার ধাওয়া খেয়ে ডাকাতদল পালিয়ে যায়। গত ৩০ এপ্রিল রাতে চন্নাপাড়া ২নং সিএন্ডবি বাজার এলাকার আবুলের টায়ারের দোকানে গভীর রাতে একদল দুর্বৃত্ত সার্টার ভেঙে দোকানের ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ টাকা ও প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। গত ৪ মে রাতে গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর এলাকার আনিছুর রহমান আনিছের তেলের দোকানে রাত ১ টার দিকে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে কর্মচারী তারেক ও আলামিনকে বেঁধে রেখে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ৪০ হাজার টাকা ও ৪টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আনিছ বাদী হয়ে ৫ মে থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এছাড়া, গত ৫ মে রাত ২টার দিকে প্রহলাদপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তালেব আকন্দের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ২০/২৫ জনের একদল মুখোশধারী ডাকাত ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওই বাড়িতে হানা দেয়। এসময় ডাকাতদল লোহার কাউয়াল দিয়ে ঘরের দরজার খিল কাটিয়া ভিতরে প্রবেশ করে বাড়ির সকল সদস্যকে হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি চালায়। এসময় ডাকাতরা আবু তালেবের পুত্রবধু লতা, কন্যা তানিয়া, স্ত্রী শাহনাজ পারভীনের ১২ ভরি স্বর্ণালংকার, ৪টি মোবাইল ফোন, নগদ ৬৭ হাজার টাকা নিয়ে যায়। আবু তালেবের ছেলে শামীম জানায়, ডাকাতির ঘটনায় শ্রীপুর থানায় মামলার করার চেষ্টা করলে শ্রীপুর থানার ওসি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এখন পর্যন্ত কোন মামলা নেননি। এদিকে শ্রীপুরে হঠাৎ করেই ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনায় স্থানীয়রা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয়দের ধারণা, শ্রীপুরের বেশ কয়েকটি স্থানে হাউজি, জুয়া, অশ্লীল নৃত্যসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ডাকাতরা এগুলো ব্যবহার করে নির্বিঘেœ ডাকাতি করে যাচ্ছে। এব্যাপারে শ্রীপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, ডাকাতদের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং চলছে। ডাকাতদের আটক করার পরেই মামলা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন