শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

বাগান পরিচর্যা ও রফতানির শেষ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত চাষিরা এ বছরও সাতক্ষীরার আম যাবে ইউরোপে

প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে

বাগান পরিচর্যার কাজ শুরু হয়েছিল গত মৌসুমের শেষেই। তবে রাসায়নিক সার কিংবা ক্ষতিকর কীটনাশক দিয়ে নয়। জৈব সার, আর্সেনিকমুক্ত পানি ও মাছি পোকা দমনে ফেরোমন ফাঁদ দিয়েই চলেছে পুরো কর্মযজ্ঞ। মুকুল থেকে ফলের পরিপুষ্টতা- এভাবেই প্রস্তুত হয়েছে সাতক্ষীরার বাগানগুলো। আর এসব বাগানের আম যাবে ইউরোপে। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়েই আমগুলো যাতে রপ্তানি করা যায়, সেজন্য চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে চাষিদের দেয়া হয়েছে গাছ থেকে আম পাড়া, পচনরোধে হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাতকরণ ও প্যাকেজিংয়ের প্রশিক্ষণ। সরবরাহ করা হয়েছে হ্যান্ডগ্লোবসসহ অন্যান্য সরঞ্জামও। আর এসব কাজে সার্বক্ষণিক চাষিদের তদারকি করছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সহযোগী সংস্থা ও সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে স্বাদে, গুণে ও মানে বিখ্যাত সাতক্ষীরার ল্যাংড়া, হিমসাগর, আম্রপালি ও মল্লিকা যাবে ইউরোপের বাজারে। আর এ বছর রপ্তানির পরিমাণও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৩ হাজার ৮শ’ ২৫ হেক্টর জমি আম উৎপাদনের আওতায় এসেছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা ও কলারোয়া উপজেলার দুই শতাধিক বাগানে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন হয়েছে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হর্টেক্স ফাউন্ডেশন ও ন্যানো স্থানীয় বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় মৌসুমের শুরুতেই বাগান মালিকদের সাথে চুক্তি করে মানসম্মত ও পরিবেশ বান্ধব প্রক্রিয়ায় আম উৎপাদনে তদারকি করেছে। জেলার কলারোয়া উপজেলার ইলিশপুর গ্রামের আমচাষি শিমুল হোসেন জানান, তার ৮৫ শতক জমিতে ল্যাংড়া ও হিম সাগর আমের বাগান রয়েছে। এ বছর ফলন কম হলেও তার বাগানে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে আম উৎপাদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা গাছে স্প্রের ক্ষেত্রে আর্সেনিকমুক্ত পানি ব্যবহার করেছি। মাছি পোকা দমনে ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করেছি। এছাড়া গাছের পুষ্টি বাড়াতে জৈব সার দেয়া হয়েছে। আম চাষিরা আরো জানান, তারা মুকুল থেকে গুটি পর্যন্ত তিন স্তরে স্প্রে করার পর থেকে আমে আর কোনো রাসায়নিক অথবা কীটনাশক প্রয়োগ করেননি। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ন্যানোর সিইও ইকবাল হোসেন জানান, তিনি চুক্তিবদ্ধ আম বাগানগুলো ঘুরে দেখেছেন। বাগানগুলোতে এ বছর আমের ফলন কম এবং সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক আমে দাগ পড়েছে। তারপরও এ বছর গতবছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি আম রপ্তানি হবে বলে তিনি মনে করেন। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই সাতক্ষীরার আম রপ্তানি শুরু হবে। গত বছর সাতক্ষীরা থেকে ২৩ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছিল, এ বছর তা কয়েকগুণ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন