ঠাকুরগাঁওয়ে বিচারাধীন প্রায় ২শ’ মামলা দীর্ঘসূত্রতায় পরে রয়েছে। এ অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে পরে থাকায় কয়েক কোটি টাকার যানবাহন নষ্ট হতে বসেছে। আর কর্তৃপক্ষ বলছেন আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করে এই সমস্ত যানবাহনের ভবিষ্যৎ।
রুট পারমিট, লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিভিন্ন সময়ে আটক মোটরসাইকেল, ট্রাক, প্রাইভেটকার ও অন্যান্য যানবাহন আটক করা হয়। আর এসব যানবাহন আটকের পর গাড়ির ড্রাইভার ও মালকরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারলে আইনুযায়ী মামলা দেয়া হয়। আইনের লড়াইয়ে দীর্ঘদিন চলতে থাকে মামলার তারিখ। ফলে আটকৃত যানবাহনগুলো জায়গার অভাবে খোলা আকাশের নীচে ফেলে রাখা হয়। আর বছরের পর বছর যানবাহনগুলো পড়ে থাকায় তা নষ্টের দিকে যাচ্ছে। ঘরের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় অসংখ্য মোটরসাইকেল বহু বছর থেকে খোলা আকাশের নিচে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বেশকিছু যানবাহ ইতোমধ্যে রোদে ও বৃষ্টিতে প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে।
বিআরটিএ এর তথ্য মতে, বর্তমানে আটককৃত ও জব্দকৃত যান বাহনের মধ্যে রয়েছে ট্রাক, মিনি ট্রাক, ট্রাক্টর ও মোটরসাইকেল। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যাই বেশি। যে সমস্ত যানবাহন পরে রয়েছে তার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। কোর্ট ভবনের কক্ষের ভেতরে ও বাইরে দু’শতাধিক মোটরসাইকেল।
ঠাকুরগাঁও কোর্টের সাব ইন্সপেক্টর আহম্মদউল্লাহ জানান, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি কর্তৃক আলামত হিসাবে আটক বা জব্দকৃত প্রায় সব মোটরসাইকেলই চোরাচালানের কাজে বিশেষ করে ফেন্সিডিল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয়। বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় দু’শ হতে পারে। ১০/১২ বছর ধরে এই মামলাগুলি বিচারাধীন রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় মোটরসাইকেল এভাবেই পড়ে রয়েছে। আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করবে এই সমস্ত যানবাহনের ভবিষ্যৎ।
এছাড়া বিভিন্ন থানাতেও মোটরসাইকেল আটক রয়েছে। মালিকবিহীন গাড়ি আটক হলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলি নিলামের আদেশ দেন। পরে নিয়ম মেনে নিলাম ডাকের ব্যবস্থা করা হয়। নিলাম কমিটি এর দাম নির্ধারণ করবে। বিআরটিএ’র এক কর্মকর্তা জানান, বছরের পর বছর মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন পড়ে থেকে এগুলি প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। নিলাম হলে অনেক যানবাহন ভাংগারির দোকানে লোহালক্কর হিসেবে বিক্রি হতে পারে।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ মনে করেন, যেসব গাড়ির কাগজপত্র রয়েছে সেসব গাড়ির বিরুদ্ধে হওয়া মামলা দ্রুত সময়ের মধ্যে নিস্পতি হলে। গাড়ির মালিক ও রাষ্ট্র উভয়েই লাভবান হতো।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. আব্দুল হালিম জানান, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। শুধু মোটরসাইকেলই নয়, ট্রাক, কার, ট্রলি ইত্যাদি বিভিন্ন যানবাহন বছরের পর বছর অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মামলার দীর্ঘসূত্রিতার জন্য রাষ্ট্রের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন