রাষ্ট্রে পিছিয়ে পড়া মানুষ নিদারুণ কষ্টে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও টিআইবির ট্রাস্টি সুলতানা কামাল। তিনি বলেছেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং পিছিয়ে পড়া নাগরিকের অধিকার না দেয়া হলে দেশ পিছিয়ে যাবে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং আয়োজিত ‘সমাজে বৈচিত্র্যতার গুরুত্ব ও ভবিষ্যত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের মূল দায়বদ্ধতা সমাজে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা। যারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দাবি করে ক্ষমতায় রয়েছেন তাদের মূল দায়বদ্ধতা হলো এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই শক্ত করা। নাগরিকের যার যে বিষয়ে কষ্ট আছে সে বিষয়ে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। কারণ বাংলাদেশ জন্মের পর সবচেয়ে বড় কথা ছিল, কোনও মানুষের প্রতি বৈষম্য করা হবে না। কিন্তু বাস্তবতা সেটাই হচ্ছে। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিংয়ের সভাপতি ডেবরা ইফরইমসন, সচেতন সমাজ সেবার সভাপতি ইভান আহমেদ প্রমূখ।
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, পাবলিক বিল্ডিংসহ যেখানে হাঁটাচলায় সমস্যা আছে কিংবা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে সমস্যা হয়; সেখানে প্রতিবন্ধীদের জন্য তেমন কোনও ব্যবস্থা রাখা হয় না। লিফট ও টয়লেটের মতো কাঠামোগত সুবিধা প্রতিবন্ধী মানুষদের কথা চিন্তা করে তৈরি করা উচিত। নাগরিক হিসেবে আমরা প্রত্যেকেই যেসব সুযোগ-সুবিধা দাবি করি সেগুলো কিন্তু সাধারণ পাবলিকের জন্য তৈরি হয়। এই সুবিধার ন্যায্য দাবিদার প্রতিবন্ধীরাও। যেখানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই সেখানে প্রতিবন্ধীরা নিজেদের অধিকার পাবে প্রত্যাশা করা যেন দূরহ হয়ে গেছে।
সুলতানা কামাল আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সবারই সীমাবদ্ধতার জায়গায় কিছু দাবি রয়েছে। যেদিন আমরা সেগুলো পূরণ করতে পারবো, গ্রহণযোগ্য অবস্থানে নিয়ে যেতে পারবো; সেদিন আমরা নিজেদের উন্নত বলতে পারবো। কারণ সমাজে, রাষ্ট্রে পিছিয়ে পড়া মানুষরা কষ্টে থাকেন। পিছিয়ে পড়া মানুষরা যাতে সমান অধিকার নিয়ে, সমান মর্যাদা নিয়ে একটা জায়গায় দাঁড়াতে পারেন। প্রতিবন্ধী ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলো যাতে মনে না করেন যে, আমি এই পরিবার, এই সমাজে জন্মগ্রহণ করলাম বলে অবহেলিত, অপমানিত। যত মানুষ পিছিয়ে পড়ে থাকবে, তত আমরা সমাজ হিসেবে পিছিয়ে পড়ে থাকবো, বাংলাদেশও পিছিয়ে থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন