শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

প্রচারণায় নৌকার চেয়ে এগিয়ে আনারস মেঘনার বড়কান্দা ইউনিয়ন

প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কুমিল্লা উত্তর সংবাদদাতা

আসন্ন অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা বড়কান্দা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম (নৌকা) এবং বিদ্রোহী স্বতন্ত্রপ্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলমের (আনারস) মধ্যে লড়াই হবে। এই দুই প্রার্থীর প্রচারÑপ্রচারণায় এখানকার নির্বাচনী মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে। তবে নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের ব্যাপক অভিযোগ থাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সমর্থক ভোটাররা বিদ্রোহী প্রার্থী (আনারস) বিশিষ্ট সমাজসেবি শাহ আলমের পক্ষে কোমর বেধে মাঠে নেমেছে। তারা শাহ আলমকে বিজয়ী করতে জন্য চ্যালেজ্ঞ নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত প্রচারণায় ও ভোটে শাহ অলম (আনারস) এগিয়ে আছেন। তবে নৌকার ভরাডুবি নিশ্চিত এটা এখন ভোটারদের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। কারণ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে খুন, মাদক ব্যবসা, রাহাজানি, লুটতরাজ, চাঁদাবাজিসহ নানা অনৈতিক কর্মকা-ের অভিযোগ থাকায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটাররাও নৌকাকে পিছন দিয়েছে। কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার সন্ত্রাসী বলে খ্যাত নৌকা মার্কার মাজহারুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি, দাঙ্গাÑহাঙ্গামা, লুটতরাজ, মাদক ব্যবসাসহ নানা অনৈতিক কুকর্মের অভিযোগ রয়েছে। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মাজহারুল ইসলামকে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বড়কান্দা ইউনিয়নে সরকারি দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়ায় মেঘনা উপজেলার আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ অঙ্গদলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়াও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক বোদ্ধাগণ, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ হতবাক ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে। তারা বলছেন, সরকার একদিকে যোদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে, অন্যদিকে রাজাকারপুত্রদের আওয়ামী লীগে ও সমাজে প্রতিষ্ঠা করছে। এসব বিশিষ্টব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলেন, মোটা অংকের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে কুখ্যাত এই সন্ত্রাসীকে আওয়ামী লীগ থেকে কেন মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। বিপুল পরিমাণের অর্থের মাধ্যমে নৌকার টিকিট নিয়ে এই সন্ত্রাসী এলাকার কি উপকার করবে এ নিয়েও ভোটারদের মধ্যে বিশাল প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এদিকে নৌকার প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম ১৯৭৮ সালে বিএনপি ও ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। সর্বশেষ গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারও তিনি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সরকারি দলের মনোনয়ন বাগিয়ে নেন। জানা যায়, ১৯৯০ সালে ১৭ এপ্রিল মেঘনা সোনাকান্দা গ্রামের চাঞ্চল্যকর রফিক হত্যার মামলায় বাবা-ছেলেকে আসামি করে ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০০৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গুলিসহ র‌্যাব-১১’র হাতে গ্রেফতার হন মাজহারুল ইসলাম। ২০০৭ সালে ১৪ এপ্রিল ও ০১ ডিসেম্বর মেঘনা থানায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও জমি দখলের মামলা হয়েছে। এরপর ওই বছরের ২২ এপ্রিল পাবনার ঈশ্বরদী থানা পুলিশের হাতে ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতার হন তিনি। মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, নেতারা টাকা খেয়ে একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে নৌকার টিকিট দিয়ে আওয়ামী লীগকে কলঙ্কিত করেছে। আরেক নেতা জয়নাল আবেদিন বলেন, রাজাকারপুত্রের হাতে নৌকার বৈঠা দেয়া এই নৌকা নিশ্চিত ডুববে। মেঘনা উপজেলা জাকের পার্টির নেতার মজিবুর রহমান তারা মিয়া বলেন, আর যাই হোক একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে ভোট দেয়া যায় না। বড়কান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবুল কাশেম বলেন, একজন সন্ত্রাসীকে ভোট দিয়ে পবিত্র ভোট কলঙ্কিত না করার জন্য তিনি ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছেন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, টাকা দিয়ে একজন সন্ত্রাসী মনোনয়ন কিনে এলাকার উপকার করবে এটা বিশ্বাস করতে আমার কষ্ট হয়। আরেক ব্যবসায়ী আবুল বাশার বলেন, নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হলে এলাকার রাজনীতি ও সমাজনীতি কুলষিত হয়ে পড়বে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন