শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

‘ছেলে বেঁচে আছে না মরে গেছে জানি না’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৪:৩০ পিএম

রাজধানীর চকবাজারে চুড়ি হাট্টা শাহী মসজিদের সামনের ভবনে ২৫ বছর ধরে মুদির দোকানীর ব্যবসা করছিলেন আলমগীর হোসেন। পঞ্চাশোর্ধ এই ব্যবসায়ী অগ্নিকান্ডের সময় তার দোকানেই ছিলেন। আগুনের তীব্রতা যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন তিনি বাঁচার জন্য তার দোকানের পানির ড্রামে ঢুকে আশ্রয় নেন। দুই ঘন্টা পানির ড্রামে আশ্রয় নিয়ে তিনি বেঁচে গেলেও তার ছেলে পারভেজকে আর খোঁজে পাওয়া যায়নি। মানবজমিনের কাছ তিনি তার চোখে দেখা ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আগুন লাগার ১০ মিনিট আগে আমার ছেলে মো. পারভেজকে (১৮) আমি রাতের খাবার খাওয়ার জন্য বাসায় যেতে বলি।

আমার কথা শুনে সে দোকান থেকে বের হয়ে যায়। কথা ছিল খাবার খেয়ে সে আবার দোকানে ফিরে আসবে। তারপর আমি বাসায় যাবো।

পারভেজ চলে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে হঠাৎ একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই। তার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একের পর এক বিকট শব্দ হতেই তাকে। আমি দোকানের বাইরে তাকিয়ে দেখি সামনের সড়ক ও আশে পাশের সব ভবনে আগুন আর আগুন। আগুনের শিখা যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন আমি বের হবার আর কোন রাস্তা খোঁজে পাইনি।

আলমগীর হোসেন বলেন, সময় যত যাচ্ছিলো আগুনের উত্তাপ বাড়ছিলো। ধীরে ধীরে আমার দোকানের দিকে আগুন চলে আসে। উপায়ন্তর না পেয়ে আমি দোকানে থাকা একটি পানির ড্রামে ঢুকে যাই। বেশি পানি থাকায় আমার শরীরের বেশির অংশই পানিতে ডুবে ছিল। ধীরে ধীরে আমার দোকানে এসে আগুন লাগে। তখন আমি আল্লাহর নাম জপছিলাম। মনে হয়েছিলো আর বাঁচার সম্ভাবনা নাই। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। বাইরে শুধু বাঁচাও বাঁচাও বলে কান্নার শব্দ আর চিৎকার শুনছিলাম। প্রায় দুই ঘন্টা পর আগুনের উত্তাপ কমে গেলে আমি দোকান থেকে বের হয়ে অন্যত্র যাই। আলমগীর বলেন, আমি বেঁচে গেলেও আমার ছেলে পারভেজের আর সন্ধান মেলেনি। সেই যে খাওয়ার জন্য বের হয়েছিলো তারপর থেকে সে নিখোঁজ। সে বেঁচে আছে না মরে গেছে আমি জানি না। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ও মর্গে খোঁজ নিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন