রূপসী ম্যানগ্রোভ। দেবহাটার ইছামতি নদীর তীরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গড়ে ওঠা নয়নাভিরাম এই পর্যটন কেন্দ্রটি মন জুড়াচ্ছে পর্যটকের। মাত্র কয়েক বছরেই এই পর্যটন কেন্দ্র নদী ভাঙন রোধ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার সাথে সাথে বিনোদনের খোরাক জোগাচ্ছে সব বয়সের মানুষের।
৫-৬ বছর আগে বিনোদনের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সুন্দরবনের আদলে ইছামতি নদীর তীরে গড়ে তোলা হয় ‘রূপসী ম্যানগ্রোভ’ পর্যটন কেন্দ্রটি। ইছামতির চরে গড়ে ওঠা এই পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রশাসক ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
প্রথমে সুন্দরবন থেকে বিভিন্ন প্রজাতির চারা এনে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে গড়ে তোলা হয় ম্যানগ্রোভ বন। খনন করা হয় একটি বিশাল দীঘি, তৈরি করা হয় একটি রেস্ট হাউজ। সময়ের পরিক্রমায় বাড়ে বনের পরিধি। শুরুতে ধীর গতিতে উন্নয়ন হলেও দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল-আসাদ যোগদানের পর থেকে বদলে যাচ্ছে রূপসী ম্যানগ্রোভের দৃশ্যপট। এই বিনোদন কেন্দ্রকে আরো নান্দনিক ও নয়নাভিরাম করতে নির্মাণ করা হয়েছে বনের ভেতর হাটার ট্রেল নির্মাণ, দীঘিতে নামানো হয়েছে প্যাডেল বোট, বিভিন্ন কৃত্রিম পশুপাখি ও ছোটদের জন্য শিশুপার্ক। এছাড়া উপজেলা সদর থেকে রূপসী ম্যানগ্রোভে যাতায়াতে পিচের রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজের বরাদ্দ হলেও টেন্ডার নিচ্ছেন না কোন ঠিকাদার।
উদ্বোধনের পর থেকেই ‘রূপসী ম্যানগ্রোভ’ পর্যটন কেন্দ্রে দূর দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেন দর্শনার্থীরা। খুব অল্প সময়েই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের মানুষের বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয় ‘রূপসী ম্যানগ্রোভ’।
রূপসী ম্যানগ্রোভে ঘুরতে এসে কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, ইছামতির তীরে নিরিবিলি ও মনোরম পরিবেশ হওয়ায় সকলের মনে স্থান করে নিয়েছে এই পর্যটন কেন্দ্রটি। এখানে ঘুরতে আসলে প্রকৃতির সাথে একাকার হওয়া যায়।
যদিও শীতের মৌসুমে প্রতিদিন পিকনিক হলেও নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় বনের পরিবেশ অনেকটা নষ্ট হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ঘুরতে আসা অনেকেই।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল আসাদ-জানান, দেবহাটা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ বন জেলার উল্লেখযোগ্য একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। দূরদূরন্ত থেকে আসা পর্যটকরা বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীর সৌন্দর্য এবং রূপসী ম্যানগ্রোভ বনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন। ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি আরও আকর্ষণীয় করা সম্ভব হলে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে দেবহাটা উপজেলা তথা সাতক্ষীরা জেলার সুনাম বয়ে আনবে। এজন্য একটি কটেজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। সাথে সাথে যোগাযোগের রাস্তা নির্মাণসহ নানামুখি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন