মেধাভিত্তিক তরুণ নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষিত তরুণ নেতৃত্ব বিকাশের লক্ষ্যে দীর্ঘ ২৮ বছর পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ডাকসু নির্বাচন দিয়ে শুরু। ধারাবাহিকভাবে দেশের সব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খালিদ বলেন, দেশের মেধাভিত্তিক নেতৃত্ব সৃষ্টির জন্য জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি তরুণদের নিয়ে ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডাকসু নির্বাচন মানেই হচ্ছে মেধাভিত্তিক তরুণ নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রথম ধাপ। প্রধানমন্ত্রী আজকে জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি তরুণদের নিয়ে ভাবছেন বলেই দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ২৮ বছর পর তার নির্দেশনায় ডাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘শুধু ডাকসু নয়; বাংলাদেশের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধার নেতৃত্ব তৈরি করার জন্য ছাত্রসংসদ শুধু নয়; স্কুলেও ক্লাস প্রতিনিধি নির্বাচন করা হচ্ছে; সেই নির্বাচনের লক্ষ্যও হচ্ছে মেধাভিত্তিক নেতৃত্ব তৈরি করে নিয়ে আসা’।
পঁচাত্তরে সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার ঘটনা তুলে ধরে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন মেধাভিত্তিক একটা সমাজ ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে শুধু শারীরিকভাবে হত্যা করা হয়নি; বাংলাদেশকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। জিয়া-এরশাদ-খালেদা যারা ধারাবাহিকভাবে এই দেশ পরিচালনা করেছে, তারা আমাদের মেধা, আমাদের শক্তি, এবং আমাদের স্বপ্নকে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশের মানুষ, তরুণ প্রজন্ম, শিশু, ব্যবসায়ী, শিক্ষিত সমাজ আজকে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে; এই বাংলাদেশকে বিজ্ঞানভিত্তিক মেধাভিত্তিক বিনিয়োগের মধ্যে দিয়ে কিভাবে সোনার বাংলা বির্নিমাণ করা যায়।’
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের মতো বহুমাত্রিক পরিবার পৃথিবীতে আর কোন দেশের নেই জানিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের মতো একটি বহুমাত্রিক পরিবার পৃথিবীর কোনো দেশে আছে বলে আমার জানা নাই। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সপরিবারের হত্যাকাণ্ডের মতো অমানবিক ঘৃণিত হত্যাকাণ্ড আর পৃথিবীতে কোনটা হয়নি। আজকে অনেকেই মানবাধিকারের কথা বলেন। অনেকেই বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত এই ঘৃণিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন না। আমরা তাদের ঘৃণা জানাই। আমরা জানতে চাই, সেই ছোট শিশু শেখ রাসেলকে হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ আর কী হতে পারে।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আজকে যারা বাংলাদেশে মানবাধিকারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, তারা এই অপরাধীদের আশ্রয় প্রশ্রয় শুধু দেয় নাই; সেই অপরাধীদের নিয়ে তারা এখন পর্যন্ত চলার চেষ্টা করছে। যারা আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে তারা বাংলাদেশকে হত্যা করার জন্য যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই দিয়েছিল। জাতীয় সংসদের সদস্য করেছিল এই খুনিদের। তাদের কাছে আমাদের গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। এর থেকে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না।’
কিশোরদের উদ্দেশ্যে খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদেরকে এখন থেকে দৃঢ় প্রত্যয় নিতে হবে; আমরা বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস উন্মোচন করে, এই ধরনের দালালদের শুধু প্রতিহত করবো তা শুধু নয়; এদেরকে আমরা নির্মূল করবো। তোমাদের শপথ নিতে হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার। যারা শেখ রাসেলের মতো শিশুকে হত্যা করেছে; তার হত্যার প্রতিশোধ নিবো আমরা সোনার বাংলা বির্নিমাণের মধ্য দিয়েই।’ পরে প্রধান অতিথি বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ী শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা তরফদার রুহুল আমিন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এ কে এম মোহাম্মদ আলী শিকদার, দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি কে এম শহীদুল্লাহ প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন