॥ মোবায়েদুর রহমান ॥
মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে দুনিয়াব্যাপী কৌতূহলের অন্ত নেই। যদি তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে তার নীতি কী হবে? অভ্যন্তরীণ নীতি কী হবে? পররাষ্ট্রনীতি কী হবে? এসব নিয়ে পৃথিবীতে জল্পনা-কল্পনার অন্ত নেই। অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে তিনি কোন নীতি গ্রহণ করবেন? পূর্বসূরি বারাক ওবামার নীতি কতখানি গ্রহণ করবেন? আর কতখানি পরিবর্তন করবেন? সেসব নিয়ে আমরা, যারা আমেরিকার বাইরে বাস করি, তাদের তেমন একটা মাথাব্যথা নেই। তবে পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট হলে তিনি কতদূর হুলুস্থূল ফেলবেন, সেটি নিয়েই মানুষের যত মাথাব্যথা। কারণ, তার মনোনয়ন প্রচারাভিযানের পূর্বে এবং প্রচারাভিযানকালে এমন সব ভয়াবহ কথা তিনি বলেছেন, যেগুলো শুনে মানুষের পিলে চমকে গেছে।
অনেক দিন পর এই মাত্র সেদিন মি. ট্রাম্প তার পররাষ্ট্রনীতির রূপরেখা অঙ্কন করেছেন। সেটি আমাদের আজকের আলোচনার মূল বিষয়। তাই বলে তার অভ্যন্তরীণ নীতি কী হবে সে ব্যাপারে আমরা যে একেবারেই আগ্রহী নই, তা ঠিক নয়। কারণ, এর আগে তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে দুই ধরনের অভিবাসীদের তিনি সিধা করবেন। প্রথমটি হলো মুসলিম অভিবাসী এবং দ্বিতীয়টি হলো মেক্সিক্যান, যাদেরকে সাধারণত হিসপ্যানিক বলা হয়। এখন অর্ধ কোটিরও বেশি মুসলমান রয়েছেন আমেরিকায়। যদি তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে কি ওইসব মুসলমান আমেরিকায় থাকতে পারবেন? নাকি তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করা হবে? আমেরিকায় লক্ষাধিক বাংলাদেশি রয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে এই বাংলাদেশিদের ভাগ্য কী হবে? বাংলাদেশিদের মধ্যেও ৯৫ শতাংশই মুসলমান। তারাও কি উৎখাত হবেন? এসব কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে মুসলমানদের ভাগ্যে কী ঘটবে? সেটি জানার জন্য আমরা চিন্তিত। এ ছাড়াও মি. ট্রাম্প আরেকটি কথা বলেছেন যেটি কম ভয়াবহ নয়। সেটি হলো, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে বাইরের দুনিয়া থেকে তিনি আমেরিকায় মুসলমানদের আসার পথ বন্ধ করে দেবেন। তার এ বক্তব্য অত্যন্ত ভীতিকর, বাংলাদেশিদের জন্য তো বটেই। কারণ আমেরিকা কোটি বাংলাদেশির কাছে স্বপ্নের দেশ। এখন যদি আমেরিকার দুয়ার মুসলমানদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ মানুষের জন্যও সেই দুয়ার রুদ্ধ হয়ে যাবে। সুতরাং আমরাও অর্থাৎ বাংলাদেশিরাও ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতির খসড়া নিয়ে আগ্রহী।
তার আগে একটা ধারণা পাওয়া দরকার যে, আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আসলে কে হচ্ছেন? এ ব্যাপারে স্পষ্ট কথা বলা ভালো যে, পত্রিকার কলামিস্টরা জ্যোতিষীও নন, গণকও নন। আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রায় ৭ মাস আগে বলা সম্ভব নয় যে আমেরিকার আগামী প্রেসিডেন্ট কে হবেন?
॥ দুই ॥
আমেরিকায় রয়েছে দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা। একদিকে রিপাবলিকান আরেক দিকে ডেমোক্র্যাট। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্বে প্রথমে একটি রাজনৈতিক লড়াই হয়। সেটি হলো, এই দুটি রাজনৈতিক দল থেকে কোন দুই ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য দলীয় মনোনয়ন পাবেন, সেই মনোনয়ন পাওয়ার লড়াই। ডেমোক্র্যাটদের তরফ থেকে সেই মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দুজনের মধ্যে লড়াই চলে এবং এখনো চলছে। এরা দুজন হলেন আমেরিকার সাবেক ফার্স্টলেডি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, নিউইয়র্কের সিনেটের হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন এবং বার্নি স্যান্ডার্স। পক্ষান্তরে রিপালবিকানদের মধ্যে এই লড়াইটি চলছে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং টেড ক্রুজের মধ্যে। মার্কিন পদ্ধতিতে দলের প্রাইমারি সদস্য তথা ককাসের সদস্যরা ভোট দিয়ে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন। এ ক্ষেত্রে তাদের পদ্ধতিটি অত্যন্ত গণতান্ত্রিক। আমাদের দেশের মতো শীর্ষ নেতা বা নেত্রী যাকে নমিনেশন দেবেন তার বাইরে কারো প্রতিযোগিতার সুযোগ নেই। শীর্ষ নেতা-নেত্রীর কথা না শুনে কেউ যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যান তাহলে তার পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার ফিনিসড হয়ে যায়। ওই দেশে সেটি মোটেই হওয়ার নয়। লক্ষ লক্ষ প্রাইমারি সদস্যের ভোটে সিদ্ধান্ত হয় যে, কোন ব্যক্তির ভাগ্যে প্রেসিডেন্টসিয়াল মনোনয়নের শিকাটি ছিঁড়বে।
গত ২৮ তারিখ পর্যন্ত আমেকিার ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৩৬টি অঙ্গরাজ্যে প্রাইমারি ভোট বা নির্বাচন শেষ হয়েছে। সেই নির্বাচন থেকে দেখা যায়, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তরফ থেকে হিলারি ক্লিনটনের নমিনেশন পাওয়ার বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ বার্নি স্যান্ডার্স অনেক পেছনে আছেন। অবশিষ্ট ১৩/১৪টি রাজ্যের ভোটাভুটিতে হিলারির অগ্রগতি বা চূড়ান্ত নমিনেশন ঠেকানো যাবে না।
রিপাবলিকান পার্টির ক্ষেত্রে বিষয়টি ইতিমধ্যেই চূড়ান্তভাবে ফয়সালা হয়ে গেছে। ৩৬টি রাজ্যের ভোটাভুটিতে মি. ক্যাসি জিতেছেন একটি মাত্র রাজ্যে। সেটি হলো ওহায়ো। এটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি রাজ্য। অপর প্রার্থী রুবিও জিতেছেন একটি মাত্র রাজ্যে। সেটি হলো মিনোসোটা। সুতরাং এই দুজন প্রার্থী মনোনয়নের দৌড় থেকে এমনিতেই বাদ পড়ে যাবেন। মি. ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী টেড ক্রুজ মনোনয়নের দৌড়ে জয়লাভ করেছেন ১০টি রাজ্যে। এই ১০টি রাজ্যের মধ্যে ৬টি রাজ্য অত্যন্ত ছোট এবং ভোটার সংখ্যা কম। একমাত্র টেক্সাস বড় রাজ্য এবং ভোটার সংখ্যা বেশি। এতেও তেমন হেরফের হবে বলে মনে হয় না। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়লাভ করেছেন ২৪টি অঙ্গরাজ্যে। এর মধ্যে নিউ ইয়র্ক, ফ্লোরিডা, এ্যারিজোনা, ইলনয়, ভার্জিনিয়া, পেনসিলভেনিয়াসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য রয়েছে। সুতরাং অবশিষ্ট ১৩/১৪টি রাজ্যের ভোটাভুটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশাল ব্যবধানকে তেমন একটি প্রভাবিত করতে পারবে না। এখানে একটি বড় এবং জনবহুল অঙ্গরাজ্য রয়েছে। সেটি হলো লসঅ্যাঞ্জেলেস। এখানে এখনো ভোটাভুটি হয়নি। লসঅ্যাঞ্জেলেসের রাজনৈতিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এখানেও জয়লাভ করবেন মি. ট্রাম্প। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া হয় যে, এখানে মি. ট্রাম্প হেরে যাবেন তাহলেও প্রেসিডেন্সিয়াল মনোনয়নের চূড়ান্ত দৌড়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় সেটি প্রভাবিত করতে পারবে না। সর্বশেষ খবরে প্রকাশ, ইন্ডিয়ানায় বিশাল ভোটের ব্যবধানে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়লাভ করার পর তার প্রতিদ্বন্দ্বী টেড ক্রুজ এবং ক্যাসি মনোনয়নের দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এখন রিপাবলিকানদের তরফ থেকে মাঠে রয়েছেন একমাত্র প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন সবাই প্রতীক্ষা করছেন, কবে ট্রাম্পের নমিনেশন রিপাবলিকান পার্টির তরফ থেকে অফিসিয়ালি ঘোষণা করা হয়।
এই আলোচনা এবং বিশ্লেষণে একটি বিষয়ে সন্দেহের তেমন অবকাশ নেই যে, চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় রিপাবলিকান থেকে নমিনেশন পাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাটদের তরফ থেকে পাবেন হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন। এখন বিলিয়ন ডলার প্রশ্ন হলো, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে কে হবেন আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। সময় সেটি বলবে, আরো ৭ মাস পর।
॥ তিন ॥
সপ্তাহ দুয়েক আগে ৫টি অঙ্গরাজ্যে বিশাল বিজয়ের পর দিন ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বক্তৃতায় তার পররাষ্ট্র নীতির মূল পয়েন্টগুলো প্রকাশ করেছেন। মি. ট্রাম্প বলেন, তার পররাষ্ট্রনীতির মূল সূর হবে ‘সর্বাগ্রে আমেরিকা’। মি. ট্রাম্পের এ বক্তব্যে শ্রেষ্ঠ জাতির জাত্যাভিমানের (এৎবধঃ হধঃরড়হ পযধাঁরহরংস) গন্ধ পাওয়া যায়। অন্যভাবে এটিকে উগ্র জাতীয়তাবাদ বলা যায়। উগ্র জাতীয়তাবাদের ধুয়া তুলেছিলেন জার্মান ডিক্টেটর অ্যাডলফ হিটলার এবং সমগ্র বিশ^কে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের অনল কু-ে নিক্ষেপ করেছিলেন। পৃথিবী তখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছিল। হিটলার ছিলেন ইটালীয় ডিক্টেটর বেনিটো মুসোলিনীর ভাবশিষ্য। আর মুসোলিনী ছিলেন ফ্যাসিবাদের জনক। সেই সূত্রে হিটলার হলেন জার্মান ফ্যাসিবাদের নায়ক। এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘সর্বাগ্রে আমেরিকা’, এই স্লোগান তুলে ফ্যাসিবাদের নবতর তথা মার্কিনি সংস্করণ উদ্ভাবন করেন কিনা সেটি দেখার জন্য আমাদেরকে ফিঙ্গার ক্রস করে বসে থাকতে হবে। অবশ্য মার্কিন জনগণ তথা পশ্চিমা বিশ^ এখনো গণতন্ত্রের ঝা-া উড্ডীন রেখেছে। সেখানে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও মি. ট্রাম্প তার উগ্র জাতীয়তাবাদের বড়ি মার্কিনি জনগণ এবং পশ্চিমা বিশ^কে কতদূর গেলাতে পারবেন, সেটি নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ রয়েছে। গত ২৬ শে এপ্রিল মঙ্গলবার বক্তৃতা শুরুর আগে তিনি বলেন, পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আজকে আমি যা বলব সেটি হবে না কোন ‘ট্রাম্প ডকট্রিন’। তিনি যে পররাষ্ট্রনীতি উদ্ভাবন করবেন সেখানে পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পররাষ্ট্রনীতিকে তিনি একটি সার্বিক বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির ওপর যে মরচে ধরেছে সেগুলোকে তিনি ঝেড়ে ফেলবেন।
তার বক্তৃতার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে ছিল ইসলামিক স্টেট বা আইএস। তার মতে, তার আমলে আইএসের ধ্বংস হবে সময়ের ব্যাপার। তিনি বলেন, আমি বলব না, কীভাবে কখন সেটা করব। এর আগে তিনি বলেছিলেন, আইএসের তেলের সংযোগ কেটে দেওয়া হবে এবং তাদের শক্তভাবে জেরা করা হবে। কিন্তু মঙ্গলবারের বক্তৃতায় তিনি ওইসব কথা বলেননি। বুধবার তিনি বলেন, কট্টর ইসলামের (জধফরপধষ ওংষধস) বিস্তার ঠেকানো শুধুমাত্র আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির প্রধান লক্ষ্য হবে না, বরং সমগ্র পৃৃথিবীরই সেই লক্ষ্য হওয়া উচিত। তিনি বলেন, চরমপন্থাকে মোকাবেলা করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যারা মার্কিন মিত্র রয়েছে তাদের সাথে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। তিনি বলেন, তিনি রাশিয়ার সাথেও কথা বলবেন। রাশিয়ার সাথে কথা বলার সময় তিনি দেখবেন যে ইসলামী চরমপন্থা মোকাবেলার ক্ষেত্রে রাশিয়ার সাথে কোনো কমন গ্রাউন্ড পাওয়া যায় কিনা। গণচীনের ব্যাপারে তিনি বলেন, চীন শক্তির পূজারি। তারা আমাদের অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের সুযোগ নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের দুর্বল অবস্থানের কারণে আমরা মান সম্মান বিসর্জন দিচ্ছি। তাই চীনের সাথে আমেরিকার সম্পর্ক সোজা পথে আনতে হবে। কিন্তু কীভাবে সেটি সম্ভব, সে বিষয়ে তিনি পরিষ্কার করে কিছুই বলেননি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ওবামার ইরান নীতিরও কড়া সমালোচনা করেছেন। তার মতে, গত বছরের জুলাই মাসে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানের সাথে যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তার ফলে ওই অঞ্চলে ইরানকে ওবামা সবচেয়ে বড় শক্তিতে পরিণত করেছেন। তার মতে, এমন করে এই অঞ্চলে আমেরিকার মিত্র ইসরাইলসহ অন্যান্য মিত্রকে বিকিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। তিনি বারাক ওবামার জাপান ও দক্ষিণ কোরীয় নীতির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আমেরিকা এই দেশগুলোকে রক্ষা করে চলছে। অথচ বিনিময়ে তারা কোনো মূল্য দিচ্ছে না। তিনি বলেন, তারা যদি মূল্য দিতে না চায় তাহলে তাদের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব তাদের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হোক। তার মতে, আমেরিকা যদি আক্রান্ত হয় তাহলে জাপান তার সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারবে না। আর জাপান যদি আক্রান্ত হয় তাহলে আমেরিকাকেই তার সাহায্যে এগিয়ে যেতে হবে। আর এটিই হলো আসল সমস্যা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে যে চিন্তাভাবনা এ পর্যন্ত প্রকাশ পেয়েছে সেটি উপরে তুলে ধরা হলো। এর বাইরে তার আর কোনো চিন্তাভাবনা থাকলেও সেটি তিনি এখনো প্রকাশ করেননি। তবে এখানে কঠোর বাস্তব হলো এই যে, শুধু আমেরিকা নয়, অন্যান্য দেশও যারা রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানের পদে যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তখন তারা অনেক গরম কথা বলেন। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর দেখা যায়, তাদের বক্তৃতার সেই উত্তাপ বা ঝাঁজ তাদের নীতিতে পুরোপুরি প্রতিফলিত হয় না। যখন তারা চেয়ারে বসেন তখন তাদের সামনে অনেকগুলো বাস্তবতা এসে দাঁড়ায়। যেগুলো ইলেকশন ক্যাম্পেইনের সময় চোখে পড়ে না এবং যেগুলো চোখে পড়া সম্ভবও নয়। ক্ষমতার গদিতে বসলে ওইসব কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়। তখন তাদেরকে আবেগের সাথে বাস্তবতার মাঝে একটি আপসরফায় পৌঁছতে হয় এবং নির্বাচনকালীন উত্তেজনাকর আবেগের অনেকখানি অংশ কাটছাঁট করতে হয। এখন প্রথমে দেখার বিষয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন কিনা। দ্বিতীয়ত, আবেগের সাথে বাস্তবতার কম্প্রোমাইজ করেন কিনা।
E-mail: journalist15@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন