শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

গোপালগঞ্জে বারি চিনা বাদাম ৮ পরীক্ষামূলক চাষে ব্যাপক সাফল্য

প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা
গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি চিনা বাদাম ৮ প্রথম পরীক্ষামূলক চাষাবাদে প্রতি হেক্টরে ২ থেকে আড়ই মে. টন উৎপাদিত হয়েছে। এ জেলায় এ বাদামের উপযোগিতা যাচাইয়ে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট। গত ৩৫ বছর ধরে গোপালগঞ্জের কৃষক ঢাকা ১ জাতের বাদামের চাষাবাদ করে আসছিলো। এ বাদামে রোগ বালই ও পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। ফলে বাদামের উৎপাদন কমে যাওয়ায় কৃষক বাদাম চাষে লাভের মুখ দেখ ছিলেন না। কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট (পিজিবি) সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প গোপালগঞ্জের কৃষকের হাতে এ বছই প্রথম বারি চিনা বাদাম ৮ তুলে দেয়। এ চিনা বাদামের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি ফুঁটিয়েছে। পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট (পিজিবি) সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প জানিয়েছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ৫০ বিঘা জমিতে বারি চিনা বাদাম ৮ এর প্রদর্শনী প্লট করা হয়। প্রতিটি প্লটেই বাদামের বাম্পর ফলন হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কংশুর গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, আগে ঢাকা ১ জাতের বাদাম আবাদ করতাম। এ বাদামে ফলন কমে গেছে। তাই এ বাদাম চাষাবাদে লাভ হয় না। আমরা নতুন জাতের বাদাম খুঁজছিলাম। পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট (পিজিবি) সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প আমার হাতে বারি বাদাম ৮ তুলে দেয়। আমি এ বছর প্রথম ৩ হেক্টর জমিতে বারি ৮ বাদাম চাষাবাদ করেছি। এ বাদাম চাষে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মাঠে বাদাম বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি বাদাম বিক্রি করে অন্তত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাব। এতে ৫৫ হাজার টাকা লাভ হবে। আমার দেখাদেখি এ গ্রামের অন্যান্য কৃষকও এ জাতের বাদাম আবাদের আগ্রহ দেখাচ্ছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কংশুর গ্রামের কৃষক বিজন বিশ্বাস ও গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, ঢাকা ১ জাতের বাদাম প্রতিটি গাছের গোড়ায় ১০/১৫টি ফলে। কিন্তু রাবি ৮ জাতের বাদাম সেখানে ২০/২৫টি ফলেছে। এ বাদামের সাইজও বড়। এ বাদাম চাষ করে আমরা লাভের মুখ দেখছি। এ বাদাম থেকে আমরা বীজ সংগ্রহ করেছি। আগামী বছর এ বীজ দিয়েই আমরা বাদাম চাষ করতে পারবো। পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট (পিজিবি) সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচএম খায়রুল বাসার বলেন, ঢাকা ১ জাতের বাদাম ১৯৭৮ সালে রারি উদ্ভাবন করে। বর্তমানে এ বাদামে রোগ বালাই ও পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। হেক্টরে এ বাদাম ১ থেকে দেড় টন উৎপাদিত হওয়ার কথা। কিন্তু বিভিন্ন করণে এ বাদামের ফলন কমে যাচ্ছে। বাদামের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বারি ৮ জাতের বাদাম উদ্ভাবন করেছে। এ বছই প্রথম আমরা কৃষকের হতে এ বাদাম তুলে দেই। এ জাতের বাদাম গোপালগঞ্জে আবাদ করে কৃষক ২ থেকে আড়াই টন ফলন পেয়েছে। এ বাদামের চাষ সম্প্রসারিত করা হলে তেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে। কৃষক অধিক বাদাম উৎপাদন করে লাভবান হবে। তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের ডিডি সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, গোপালগঞ্জে প্রথম বছর আবাদেই বারি উদ্ভাবিত চিনা বাদাম ৮ এর ফলন ২ থেকে আড়াই টন হয়েছে। গোপালগঞ্জে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়। এসব জমিতে এ জাতের বাদামের চাষ সম্প্রসারিত করতে পারলে গোপালগঞ্জের কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। বাড়বে উৎপাদন ও কৃষির উন্নতি ঘটবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
১২ জানুয়ারি, ২০১৭, ৮:০৩ পিএম says : 0
আমি চলতি মৌউশুমে বাদাম চাষ করতে চাই বারি আট জাত এর বাদাম বিজ কোথায় পাব আমার বারি দিনাজপুর
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন