অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে যশোর শ্রমনির্ভর মোটর শিল্পের। কিন্তু শিল্পটির স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারণ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা নেই। যশোরে একসময় চিরুনী ও সাবান শিল্প গড়ে উঠেছিল। টিকিয়ে রাখা যায়নি। বিরাট সম্ভাবনাময় মোটর শিল্পটি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অনেকদূর এগিয়ে নেয়া যেত বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের। শিল্পটির স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বহুবারই শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন এ দুয়ার ও দুয়ারে ঘোরাঘুরি করেও সফলতা আসেনি।
বাংলাদেশ ওয়ার্কসপ মালিক সমিতির যশোর শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহিন কবীর দৈনিক ইনকিলাবকে বলেছেন, মোটর শিল্পটি এখনো শিল্প হিসেবে অনুমোদন পায়নি। আমরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে একসময় চোরাইপথে ভারত থেকে মোটর গাড়ির কাটা চেসিস আসা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি। যশোরেই বেশ কয়েকবছর ধরে বাস ও ট্রাকের বডি তৈরী এবং ইঞ্জিন পার্টস ও অটোমোবাইলসহ ওয়ার্কসপ গড়ে উঠেছে প্রায় দেড় হাজার। রয়েছে ডেন্টিং-পেইন্টিং ও লাইটিংসহ সংশ্লিষ্ট ছোট-বড় আরো অসংখ্য কারখানা। সর্বসাকুল্যে এর সাথে জড়িত ২০ সহস্রাধিক মিস্ত্রি ও শ্রমিক।
যশোর শহরে বাস ও ট্রাকের বডি তৈরীর শুরু হয়েছিল একেবারে ছোট পরিসরে। দিনে দিনে আজ তা পরিণত হয়েছে রীতিমতো বিরাট শিল্পে। এতে যশোরের মোটর শিল্পের সাথে জড়িতরা গর্ব করে থাকেন যে, দেশের বিভিন্ন সড়কে চলাচল করা একটা অংশের ভলবো, হিনো ও চেয়ার কোচসহ বাস এবং ট্রাকের বডি যশোরের তৈরী। তাতে লেখা থাকছে ‘মেড ইন যশোর’।
সরেজমিনে যশোর শহরের আর এন রোড ও বকচর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মোটর শিল্প শ্রমিকদের প্রাণে ফূর্তির আমেজ। দিনরাত পরিশ্রম করে তারা লোহা, লক্কড়, রড, পাইপ ও স্টিল সিট হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে সোজা ও বাঁকা করছে। ওয়েল্ডিং করে তাতে ঝকঝকে রং করে বাস ও ট্রাকের শক্ত বডি তৈরী করছে। লোকাল বাস ও ট্রাকের চেসিসও তৈরী হচ্ছে। ইঞ্জিনের খোলনলচে পাল্টে লক্কড় ঝক্কড় বাস-ট্রাককে নিখুঁতভাবে তৈরী করে একেবারে নতুন করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন