সৈয়দপুর উপজেলার প্রতিটি আমের গাছেই ভরে গেছে মুকুল। গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন মুকুল হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন প্রতিটি গাছসহ আমের বাগান মালিকরা। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের পাড়া মহলাসহ শহর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমের মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন আমচাষিরা। গাছে গাছে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াও গাছের গোড়ায় সার ও পানি দিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।
বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লালদিঘি এলাকার আমচাষি মনোয়ার হোসেন সেভেন্টি জানান, এবারে গতবারের তুলনায় অনেক বেশি আমের মুকুল হয়েছে এবং এবারে আমের বাম্পার ফলন হওয়ার কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, তার আমের বাগানে গাছ রয়েছে প্রায় দেড় হাজারের মত। এসবের মধ্যে উলেখযোগ্য ও সুস্বাদু আম রয়েছে যেমন- হাড়িভাঙ্গা, ল্যাংড়া, মিস্রি ভোগ, গোপাল ভোগ, খিরসাপাত, দুধ আম, গোলাপজাম, সূর্যপুরি, ফজলি আমসহ আরো একাধিক আম। আর এ কারণেই আমগাছের মুকুল ধরার আগেই দেশের বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীরা আসেন তার বাগানে এবং সেখান থেকে বড় বড় ব্যবসায়ীরা উপজেলার আমচাষি ও বাগান মালিকদের অগ্রিম টাকা প্রদান করা হয় ।
কামারপুকুর ইউনিয়নের আমচাষি আমিরুজ্জামান জানান, বাণিজ্যিক শহর হিসেবে খ্যাত এলাকা হলো সৈয়দপুর। রংপুর বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগের সকল ব্যবস্থা আছে । দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীদের অবস্থানসহ দৃষ্টি এখন সৈয়দপুরের দিকে। ব্যবসায়ীক অবস্থা সুদৃঢ় হওয়ার কারণেই সৈয়দপুর দেশের অক্ষম বাণিজ্যিক শহর। কৃষিক্ষেত্রেও অধিক সম্ভাবনা থাকার পরও এ অঞ্চলের কৃষকরা সহজ উপায়ে কৃষি ঋণ থেকে বঞ্চিত হওায় সকল সম্ভবনাই মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে। কৃষকরা অতিকষ্টে ঘাম ঝড়িয়ে ফল বা ফসল উৎপাদন করার পর পরই সেগুলি নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন অঞ্চলের বড় বড় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করে লাভবান হলেও কৃষকরা সকল কিছু উৎপাদন করেও সম্ভাবনার চুড়ায় পৌছাতে পারছে না। তিনি বলেন, বর্তমান মৌসুমে উপজেলার প্রতিটি আম গাছেই মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে এবং চাষিরা শত কষ্ট হলেও তা পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। মুকুল ধরা থেকে আম ফল ফলন পর্যন্ত যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে শুধুমাত্র সৈয়দপুর উপজেলাতেই প্রায় ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার আমের বিক্রি হতে পারে বলে জানান তিনি।
আম বাগান মালিক, সেভেন্টি ও আমিরুজ্জামান বলেন, রংপুর বিভাগের সবচেয়ে সুস্বাদু আম হলো হাড়িভাঙ্গা, মিস্রিভোগ, খিরসাপাত, ফজলি আম ও সূর্যপুরি আম। এসব আম রংপুর বিভাগের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করার জন্য নীলফামারীর সৈয়দপুরে আম সংরক্ষণের জন্য একটি সরকারী কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের দাবি জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুরা মন্ডল জানান, গাছে গাছে যেভাবে আমের মুকুল দেখা গেছে তাতে আবহাওয়ার পরিবর্তন না ঘটলে এবারে এ উপজেলায় ৫/৬ কোটি টাকারও বেশি আম বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন