রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বিদ্যুৎ অফিসের তেলেসমাতি কারবার হয়রানির শিকার গ্রাহক

সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:৩৮ এএম

সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে শুরু হয়েছে তেলেসমাতি কারবার। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কোন প্রকার অনুমোদন না নিয়ে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রেখে বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনের নিকট স¤প্রসারন ও সংকোচনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে একটি চক্র। ১১ হাজার ভোল্টের এই লাইন সার্বক্ষনিক সঞ্চলিত থাকার কথা থাকলেও মাঝে মধ্যে ফল্ট দেখিয়ে তা অন্য পন্থায় কাজে লাগিয়ে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রটি।
জানা যায়, পৌর এলাকার বাহিগোলা নবজাগরণী সংঘের পেছনের সড়কে অবস্থিত ট্রান্সফরমার সংলগ্ন স্থানীয় সোনালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। আর ওই ভবনের ছাদ সমেত বিদ্যুৎ বিভাগের ১১ হাজর ভোল্টের লাইন সাটানো থাকায় ভবন মালিক স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের অপারেটর আব্দুর কুদসের সাথে গোপনে যোগাযোগ করে ওই লাইনে প্লাস্টিকের পাইপ পরানোর জন্য সমঝোতা করেন। সেই মোতাবেক গত মঙ্গলবার ভোরে ওই লাইন বন্ধ করে রাখে এবং গোপনে ৩০ মিনিটের মধ্যে কাজটি সেরে ফেলেন ভবন মালিক। প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যে কাজ সেরে আবার সংযোগ চালু করে দিয়ে সকাল ৮টার সময় অপরজনদে দায়িত্ব বুঝে দিয়ে বাড়ি চলে যান। কিন্তু লাইনটিকে ভোরে ইচ্ছাকৃতভাবে সার্টডাউন করা হলেও রেজিস্ট্রি খাতায় তার কোন প্রমাণ রাখেননি ওই অপারেটর।
পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিষয়টি লোকমুখে জানা জানি হলে অপারেটর আব্দুল কুদ্দুস প্রথমে ঘটনাটি এড়িয়ে যান। পরে দুপুর ২টার পর তিনি অফিসে গিয়ে কথা বলতেই তিনি লাইন সার্টডাউনের বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে স্বীকার করেন, ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, আকস্মিকভাবে সকালে ১০ মিনিটের জন্য লাইন বন্ধ হয়। পরে আবার তা চালু হয়। একটি ১১ হাজার ভোল্টের লাইন কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়া এক ভবন মালিকের পরামর্শে কিভাবে বন্ধ হলো এমন প্রশ্নের জবাব অপারেটর কুদ্দুস এড়িয়ে যান।
বিষয়টি ভবন মালিক ব্যাংক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পথমে অস্বীকার করলেও পরে সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমার বাড়ির ছাদে স্থানীয় বিদ্যুৎ মিস্ত্রী বাদশা কাজ করেছে। সেই বলতে পারবে কিভাবে অফিসের সাথে যোগাযোগ করেছে। কথা শেষ না হতেই তিনি বলেন আমার অফিসে এসে দেখা করে যান। পরবর্তিতে তিনি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য লোক মারফত ধমকিও দেন।
এদিকে ভোর বেলায় চলমান বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করায়, পৌর এলাকার রাণীগ্রাম ফিডারটি পুরো বন্ধ থাকে। এতে করে শহরের জানপুর, দত্তবাড়ি, একডালাসহ শহরতলির প্রায় ১৬টি গ্রাম থাকে বিদ্যুৎহীন। একই সাথে বন্ধ থাকে ছোট বড় বিভিন্ন শিল্প কারখানাসহ সেচ যন্ত্র।
মঙ্গলবার ভোরবেলায় এমন ঘটনা ঘটালেও দুপুর পর্যন্ত বুঝতে পারেননি কন্ট্রোল রুমের পরবর্তি দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি কমল চন্দ্র শিং। তিনি জানান খাতায় কোন সার্টডাউন/লাইন বন্ধ ছিলো এমন কথা বা কারন, লেখা নাই। লাইন বন্ধ থাকতেই পারে না। ঠিক এমন কথা জানানো হয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীকেও।
এবিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মাসুদ সন্ধ্যায় জানান, ১১ হাজার ভোল্টের লাইন বন্ধ রাখার কোন সুনির্দিষ্ট কারণ ও অনুমোদন থাকতে হবে। কিন্তু আমাকে বলা হয়েছে লাইন কোন প্রকার বন্ধ ছিলো না। তারপরও আমি অফিসে এসে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো এবং ব্যবস্থা নেব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন