বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস

নীতিমালা উপেক্ষা করে অবাধ বাণিজ্য

লাকসাম (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

লাকসাম উপজেলার সর্বত্রই বিক্রি হচ্ছে বিপজ্জনক সিলিন্ডার গ্যাস। উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় সকল হাট-বাজারে পানের দোকান থেকে শুরু করে জুতার দোকান পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস। ফলে যে কোনো সময় অগ্নিকাণ্ড ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। উপজেলা ও পৌর শহরের দু’শতাধিক দোকানে সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ছাড়াই দোকানের সামনে এমনকি ফুটপাতে সিলিন্ডার ফেলে রেখে ব্যবসায়ীরা এলপি গ্যাসের ব্যবসা নির্বিঘে্ন চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্যাস সিলিন্ডার ফেলে রেখে এমন রমরমা ব্যবসার নজির দেশের অন্য কোথাও নেই। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
জনাকীর্ণ এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে। পৌর শহরের বাইপাস, উত্তর বাজার, চৌদ্দগ্রাম রোড, দক্ষিণ বাজার, ধান বাজার, নোয়াখালী রেলগেট, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, কলেজ রোড, আল-আমিন স্কুল সংলগ্ন, রাজঘাট, নশরতপুর, জংশন বাজারে হাত বাড়ালেই মিলছে গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার। তারা রাস্তার ওপর সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন গ্যাস সিলিন্ডার ও গ্যাসের চুলা। পাশাপাশি বিক্রি করছেন পেট্রোল ও ডিজেল। এছাড়াও ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, মুদি দোকান, হার্ডওয়্যার, ফাস্টফুড, কসমেটিক, তেল বিক্রয়, ফ্লেক্সিলোডের দোকানসহ হাইওয়ে রাস্তার পাশে, ফুটপাতে গ্রামের রাস্তার মোড়ে, ফার্মেসিতে, থান কাপড় বিক্রির দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে গ্যাসের সিলিন্ডার। এলপি গ্যাস সিলিন্ডারগুলো দোকানের সামনে বা ভেতরে খোলামেলা অবস্থায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখার ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির ঘটনা। এসব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার রাখার নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ দোকানই তা মানছে না। অচিরেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এসব বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কথা হয় কয়েকজন এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তারা জানান, এলপি গ্যাস ও পেট্রোল বিক্রয় নিয়মকানুন তারা জানেন না। কিভাবে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স করতে হয় তাও জানেন না তারা। অধিক লাভের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা গ্যাস সিলিন্ডার ও পেট্রোল মজুত ও বিক্রি করছেন। কোনো কোনো দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও তার বেশির ভাগই মেয়াদ উত্তীর্ণ।
জানা যায়, বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর অধীনে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা-২০০৪’র ৬৯ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া অনধিক ১০টি গ্যাসপ‚র্ণ সিলিন্ডার মজুত করা যাবে। তবে বিধির ৭০ ধারা অনুযায়ী এসব সিলিন্ডার মজুত করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং আগুন নিয়ন্ত্রক সরঞ্জাম মজুত রাখতে হবে। সিলিন্ডার গ্যাস স্থাপনা প্রসঙ্গে দিয়াশলাই বা আগুন লাগতে পারে এমন কোনো বস্তু বা সরঞ্জাম রাখা যাবে না। এসব আইনের তোয়াক্কা না করে চা দোকান থেকে আরম্ভ করে ভেরাইটিজ স্টোরেও বিক্রি হচ্ছে এ গ্যাস সিলিন্ডার। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিজেদের মনগড়াভাবে যেখানে-সেখানে ফেলে ব্যবসা করছে। ঝুঁকিপ‚র্ণ এ জ্বালানি যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই এসব দোকানের।
এ ব্যাপারে লাকসাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমাইল হোসেন জানান, খোলা বাজারে গ্যাস ও পেট্রোল বিক্রি করা যাবে না। শ্রীঘ্রই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরি
চালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন