মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

দিরাইয়ে প্রার্থীরা মানছেন না আচরণবিধি নীরব প্রশাসন

প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার, দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। গণসংযোগ ও প্রচারাণার নামে আইন লঙ্ঘনের এই প্রতিযোগিতায় আছেন কমবেশি সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। তবে নির্বাচনী এসব আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও নীরব ভূমিকা পালন করছেন স্থানীয় প্রশাসন। বিশ্বস্ত সূত্রে বিভিন্ন ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য লিখিত বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচন করার কথা থাকলেও কোন কোন ক্ষেত্রে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। সরকারি দল ও বিএনপিসহ অধিকাংশ প্রার্থী এসব আচরণবিধিকে থোড়াই কেয়ার না করে নিজেদের মতো করেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পোস্টার লাগানো, মাইকিং করা ও নগদ অনুদান প্রদান বা প্রতিশ্রুতি প্রদানসহ প্রতিনিয়তই আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে। চরনারচর ইউনিয়নের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পোস্টার দেয়ালে দেয়ালে লাগানো আছে। তাছাড়া কোথাও ১০/১১টার দিকেই প্রার্থীদের প্রচারণার মাইকিং শুরু হয়। একই অবস্থা কুলঞ্জ, জগদল, করিমপুর, ভাটিপাড়া, রফিনগর, রাজানগর ও তাড়লসহ সকল ইউনিয়নগুলোতেই। মাইকিংয়ের ক্ষেত্রে দুটি মাইক ব্যবহার, সকাল ১০/১১টা দিকে প্রচারণা শুরু হয়। অথচ নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ-এর আচরণবিধিতে যে ধারা রয়েছে, তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের কোন ভূমিকা নেই। অবাধেই চলছে দেয়ালে পোস্টার সাটানো, প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও এসব রোধে কোন ভূমিকা দেখা যাচ্ছেনা। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রচারিত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের “ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা”-এর ২-এর ৪-এ বলা হয়েছে, “দেওয়াল” অর্থ বাসস্থান, অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসাকেন্দ্র, শিল্প কারখানা, দোকান বা অন্য কোন স্থাপনা, কাঁচা বা পাকা যাহাই হউক না কেন, এর বাইরের ও ভিতরের দেওয়াল বা বেড়া বা উহাদের সীমানা নির্ধারণকারী দেওয়াল বা বেড়া এবং বৃক্ষ, বিদ্যুৎ লাইনের খুঁটি, খাম্বা, সড়কদ্বীপ, সড়ক বিভাজক, ব্রিজ, কালভার্ট, সড়কের উপরিভাগ ও বাড়ির ছাদও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।” প্রচারণার জন্য মাইকিংয়ের ক্ষেত্রেও আইন মানা হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রচারিত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের “ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা”-এর ২১নং ধারার (১)-এ উল্লেখ আছে, “কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে কোন রাজনৈতিক দল, অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান একটি ওয়ার্ডে পথসভা বা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে একের অধিক মাইক্রোফোন বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্র ব্যবহার করিতে পারিবেন না।” (২)-এ উল্লেখ আছে, “কোন নির্বাচনী এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর ২ (দুই) ঘটিকার পূর্বে এবং রাত ৮টার পরে করা যাইবে না।” তাছাড়া কোন ধরণের প্রতিশ্রুতি প্রদান না করার কথা থাকলেও তাও মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রচারিত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের “ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা”-এর ৪নং ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘কোন প্রার্থী বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে রাজনৈতিক দল, অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন-পূর্ব সময়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন এলাকায় অবস্থিত কোন প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন প্রকার চাঁদা বা অনুদান প্রদান করিতে বা প্রদানের অঙ্গীকার করিতে পারিবেন না।’ এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দিরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ না পাওয়ার কারণে আমরা পরিদর্শনে বের হইনি। তাছাড়া নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ সবে মাত্র শেষ হয়েছে। শীঘ্রই আমরা মোবাইলকোর্ট পরিচালনায় বের হবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন