সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের কান্ড সম্পত্তির লোভে বাড়ি ছাড়া করলো পিতাকে

প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এস মিজানুল ইসলাম, বানারীপাড়া (বরিশাল) থেকে
কি ঘর বানাইলো মুক্তিযোদ্ধা আঃ জব্বার। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর তারই সম্পত্তির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পরেছে দুই ছেলে ও এক মেয়ের। তাদের দেয়া জীবননাশের হুমকিতে জব্বার এখন দিশেহরা। জীবন বাঁচাতে ঘুরে ফিরছে এখান থেকে ওখানে। পাড়াপরশী, আত্মীয়স্বজন কিংবা কারো বাড়িতে। বীর মুক্তিযোদ্ধা বৃদ্ধ আঃ জব্বার হাওলাদার (৭৬)। তিনি বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন নিজের জন্ম দেয়া সন্তানদের দ্বারা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেনাবাহিনীর ১২ ব্যাঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি নিয়ে সার্জেন্ট পদ থেকে অবসর নেন। বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের নরেরকাঠী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ জব্বার হাওলাদার। তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। ২০১০ সালে তার স্ত্রী হামিদা বেগমের মৃত্যু হয়। তাকে ও তার পরিবারকে দেখভাল করার জন্য বরিশাল সোনামিয়ার পোল এলাকা থেকে মৃত হাসেম হাওলাদারের মেয়ে বিউটি বেগম (৪৬)-কে বিয়ে করেন। যিনি সন্তান ধারণে অক্ষম। সম্প্রতি জব্বার হাওলাদারের দুই ছেলে ঢাকার উত্তরায় র‌্যাব-১ এ নিয়োজিত পুলিশ কনেস্টবল (কং- ৫৫৬), সাইফুল ইসলাম ও গার্মেন্টস কর্মী শফিকুল ইসলাম ছুটিতে বাড়ি আসেন। এ সময় তাদের সাথে যোগদেন ছোট মেয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলার ডিগ্রির চর এলাকার বাহারুল ইসলামের স্ত্রী বেবী বেগম। তাদের দাবি তার পিতার নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পত্তি তাদের নামে লিখে দিতে হবে। বৃদ্ধ পিতা তাতে রাজি হননি। তিনি সব কিছু ছেলেমেয়েদের নামে শর্ত সাপেক্ষে লিখে দিতে চান। তিনি যত দিন বেঁচে থাকবেন তত দিন ভোগদখলে থাকবেন। তার মৃত্যুর পর ওই সম্পত্তির প্রকৃত মালিক হবেন তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। এতে তার বড় মেয়ে কামরুন নাহার বেগম রাজি হলেও দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম, গার্মেন্ট কর্মী শফিকুল ইসলাম এবং ছোট মেয়ে বেবী বেগম রাজি হননি। মুক্তিযোদ্ধা জব্বার হাওলাদার জানান, গত ৬ এপ্রিল বিকেলে তার তিন ছেলে মেয়েসহ ৫/৬ জন অজ্ঞাত লোক তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এ সময় তিনি সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি না হওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এক পর্যায় জব্বারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা আঃ জব্বার প্রাণনাশের ভয়ে পার্শ্ববর্তী গাভা বাজারের ভাগ্নি জামাই হক ঢালীর বাড়িতে ও স্ত্রী বিউটি বেগম বরিশালে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে তার ভাতিজা টাইস ব্যবসায়ী আলম তার বাড়িতে নিয়ে যান বলে তিনি জানান। এর পূর্বে ওইদিন দুপুরে আঃ জব্বার বাদী হয়ে দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ও ছোট মেয়ে বেবী বেগমের বিরুদ্ধে বানারীপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওসি জিয়াউল আহসান অভিযোগেরভিত্তিতে এসআই আল মামুনকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। আঃ জব্বার বড় ছেলে র‌্যাব সিপাই সাইফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার পিতার অভিযোগ সম্পূর্ণ সঠিক নয় বলে জানান। তিনি আরো বলেন, তার পিতা তাদেরকে না জানিয়ে গাছপালা বিক্রি করে দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন