শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পীরগঞ্জে উঠান জুড়ে ধান কৃষকের মন জুড়ে কষ্ট

মজুর সংকট ও বাজার মূল্য কম

প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা
রংপুরের পীরগঞ্জে বোরো ধান কর্তনের শেষ মওসুম চলছে। সোনালী রং এ ভরে যাওয়া ফসলের মাঠ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। কিন্তু তার পরেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। তাদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। কারণ তারা ফসলের তো ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনই না তার পরেও চলছে তীব্র মজুর সংকট। উৎপাদিত ধান কৃষকরা ঠিকমত ঘরে তুলতে পারবেন কি না এ নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন। পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী এলাকার মিলকি, হরিপুর, মির্জাপুর, ভীমশহর, ভুজুবাড়ীসহ বেশ ক’টি গ্রাম ঘুরে সাধারণ কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বোরো ধান নিয়ে তাদের উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার কথা। সরেজমিন ওইসব গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে ধান কর্তনের পুরো মওসুম চললেও পুরো ফসলের মাঠ ভরে আছে পাকা সোনালী রং এর বোরো ধানে। ফসল কর্তনের উপযোগী হয়েছে। তার পরেও কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারছে না মজুরের অভাবে। তারা শুধু ফসলের ক্ষেত প্রত্যক্ষ করে সান্ত¦Íনা পাওয়ার চেষ্টা করছেন। মির্জাপুর গ্রামের কৃষক জুয়েল মিয়া, আকমল, ভীমশহরের গফুর আলী, জোনাব আলী, ভুজুবাড়ীর স্বাধীন, রইচ উদ্দিনসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ধান পাকলেও মজুর সংকটের কারণে তারা ধান কর্তন করতে পারছেন না । অনেকে এ কাজে অভ্যস্ত না থাকলেও বাধ্য হচ্ছেন নিজেরাই ধান কেটে ঘরে তুলতে। যে সীমিত সংখ্যক মজুর কাজ করছেন তাদেরকে প্রতি ৫০ শতক জমির ধান কর্তনের জন্য সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা বেশি। কালবৈশাখির এই মওসুমের প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের অনেকেই চড়া মূল্যে ধান কর্তন করে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতেও ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের কতদিন সময় লাগবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তারপরেও লাভ লোকসান তো রয়েছেই। রওশনপুর গ্রামের কৃষক মোকসেদ আলী জানান, তিনি ৮ একর জমিতে বোরো ধান উৎপাদন করেছেন। অথচ এখন পর্যন্ত অর্ধেক জমির ধান ঘরে তুলতে পারেননি। তার হিসেব মতে উক্ত ধান উৎপাদনে তার খরচ পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আর ধান পেয়েছেন কেজির ৭০ মণ। বর্তমান বাজার মূল্যে ৪শ’ টাকা হিসেবে উক্ত ধানের মূল্যর ২৮ হাজার টাকা। গোটা উপজেলার সব কৃষকেরই একই অবস্থা। কৃষকদের মতে সেচ, মজুরী ও সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ যেভাবে বেড়েছে তাতে ধান আবাদ করে কৃষকরা আশানরূপ ধানের মূল্য না পাওয়ায় চরম হতাশায় ভুগছেন। তার পরেও ওই এলাকায় কৃষকদের জমিতে এ সময় বিকল্প কোন ফসল উৎপাদনের সুযোগ না থাকায় অনেকটাই লোকসান স্বীকার করে বোরো আবাদ করতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের জন্য প্রতি কেজি ২৩ টাকা এবং প্রতি কেজি ৩২ টাকা দর বেঁধে দিলেও এখন পর্যন্ত অনেক সরকারি গুদামেই লাকি পারচেজ হয়নি। কবে নাগাদ ক্রয় শুরু হবে? তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন