নাটোরের সিংড়ায় দিগন্ত মাঠ জুড়ে বইছে বোরো ধানের ক্ষেতে সবুজের সমারোহ। সবুজ মাঠের বোরো ক্ষেত দেখে কৃষকদের মুখে আনন্দের হাসি ফোটার কথা। কিন্তু গত ১ মাসের কয়েক দফা শিলাবৃষ্টিতে দুশ্চিন্তায় উপজেলার ৬৮ হাজার কৃষকের চোখে রাতের ঘুম নেই। তার ওপরে বিদ্যুৎ বিভ্রান্টে নাজেহাল কৃষকরা। গত বছর পাহাড়ি ঢলে অনেক কৃষকের স্বপ্ন পানিতে ডুবে যায়। উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে বোরো ধানের ক্ষেতগুলোতে সবুজে দোল খাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানান, এ বছর ইরি-বোরো আবাদের লাখ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৬ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৩৭ হাজার ১শ’ হেক্টর। লাখ্যমাত্রার চেয়ে ৬শ’ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বেশী হয়েছে। এ বার বীজতলা নিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পড়তে হয়নি কৃষকদের। ফলে ধান রোপনের ওপর কোন প্রভাব পড়েনি। আবাদি ধানের চাল উৎপাদন ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ১৭২ মেট্রিক টন। তবে উৎপাদনের লাখ্যমাত্রা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। শষ্যভান্ডার খ্যাত কৃষি নির্ভর উপজেলার মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ। দু’চোখ যেদিক যায় শুধু দেখা যায় বোরো ধানের ক্ষেত। কৃৃষকদের প্রধান এ ফসলটির সব ধরনের সার, কীটনাশক ও পরিচর্যার কাজ শেষ হয়ে গেছে। স্বপ্নের ফসল ঘরে উঠতে বাকি আর কিছুদিন। ঘরের টাকা মাঠে ছিটিয়ে অনেকটায় দুশ্চিন্তায় থাকা কৃষকরা স্বপ্ন পূরনের আশায় বুক বেঁধেছেন।
সরেজমিনে চলনবিল, তেলীগ্রামবিল ও কুমড়ারবিলসহ উপজেলার সকল বিলেই বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। কোনো কোনো বিলে আগাম জাতের বোরো ধানের শীষ দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সহাকরী কৃষি কর্মকর্তরা কৃষকদের সচেতনতা বাড়তে কাজ করে যাচ্ছেন।
চলনবিলের তিরাইল গ্রামের আব্দুল হামিদ মজনু জানান, গত ১ মাসের কয়েকদফা শিলাবৃষ্টিতে এমনিতেই রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তার ওপড়ে বিদ্যুৎ আসে আর যায়। উপজেলার বড়িয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, গত বছর আগাম বন্যায় অনেক কৃষকের স্বপ্নের ফসল পানিতে ডুবে যায়।
নাটোর পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি ২-এর জেনারেল ম্যানেজার সুলতান আহমেদকে বিদ্যুৎ বিভ্রান্টের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন জানান, গত ১ মাসে কয়েক দফায় শিলাবৃষ্টিতে ধানের কোন ক্ষতি হয়নি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের খুব ভাল ফলন হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন