মেহেদী হাসান পলাশ
গত ৮ মে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবের পাশে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর অবস্থান সম্পর্কে বলেন, “সেনা ক্যাম্পগুলো অধিকাংশই তুলে নেয়া হয়েছে। যা সামান্য কিছু আছে- চারটি জায়গায় কেবল ৪টি ব্রিগেড থাকবে। বাকিগুলো সব সরিয়ে নেয়া হবে। যেজন্য রামুতে আমরা একটা সেনানিবাস করেছি”। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি জনগোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়েছে। তারা এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছে। আগামী ২৬ মে তিন পার্বত্য জেলায় সর্বাত্মক হরতালের ডাক দিয়েছে তারা। গত সপ্তাহে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বাসিন্দা শওকত আকবর দৈনিক ইনকিলাবে এসেছিলেন। তার অভিযোগ, লংগদু উপজেলার ভাইবোন ছড়ার সাড়ে চারশত বাঙালি পরিবারের প্রায় ১২শ একর কবুলিয়তপ্রাপ্ত জমি উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা দখল করে নিয়েছে। সে জমিতে সৃষ্ট ফসল, বাগান, পোল্ট্রি ফার্ম ধ্বংস করে সেখানে মিনি ক্যান্টনমেন্ট তৈরি করেছে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা। নিজের জমি ফেরত পেতে ব্যক্তিগত চেষ্টায় কাজ না হওয়ায় শওকত আকবর পার্বত্য বাঙালি গণমঞ্চ নামে একটি সংগঠন তৈরি করে রাঙামাটিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের মতো কর্মসূচী পালন করেছে। শওকত আকবর জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর তাদের জমি দখলকারী পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা উল্লসিত ও আনন্দিত হয়েছে। তারা এখন আগের থেকে বেপরোয়া হয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। জমির মালিক বাঙালিদের ভয় দেখাচ্ছে এই বলে যে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে দ্রুত সেনাবাহিনী সরিয়ে নেবেন। এরপর তোদের দেখে নেবো।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণায় যুক্তির থেকে আবেগ বেশী কাজ করেছে। ফলে কেউ এতে ব্যথিত আবার কেউ এতে উল্লসিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কয়েক বছর আগে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এবং মিয়ানমারের সাথে সৃষ্ট উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে রাঙামাটির কাপ্তাই থেকে সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সরিয়ে নেয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন চারটি ব্রিগেডই রয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নতুন কোনো সেনা ব্রিগেড প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। একটি ব্রিগেড গঠিত হয় কয়েকটি ব্যাটালিয়নের সমষ্টিতে। এর অর্থ হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে চারটি ব্রিগেড ও তার অধিনস্ত ব্যাটালিয়নগুলো এবং তার অন্তর্গত সেনাসদস্যরা থাকছে। তাহলে বাঙালিদের বিক্ষুব্ধ হওয়ার ও পাহাড়ীদের উল্লসিত হওয়ার কী কারণ থাকতে পারে?
এখানে প্রধানমন্ত্রী কোন প্রেক্ষাপটে কথাটি বলেছেন সে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য। কারো কারো মতে, প্রধানমন্ত্রী হলেও শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। রাজনৈতিক নেতাদের সকল বিষয়ে ভোটের রাজনীতির কথাও মনে রাখতে হয়। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে প্রবল প্রতাপ প্রদর্শন করতে সক্ষম হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে ভিন্ন বাস্তবতা বিরাজ করছে। সেখানে সরকারী দল হয়েও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারছে না পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে। সে কারণে চলমান ইউপি নির্বাচনের অংশ হিসেবে রাঙামাটি জেলায় তৃতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও পরে তা সরিয়ে ৬ষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়ার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন পেছানো হলেও জেলার ৪৯টি ইউপির মধ্যে ৭টিতে আওয়ামী লীগ ও ২৭টিতে বিএনপি প্রার্থী দিতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ অনেক ইউপিতে এমন প্রার্থী দিয়েছে যারা পরোক্ষভাবে পাহাড়ী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সাথে সম্পর্কযুক্ত। আবার অনেক ইউপিতে প্রার্থী দিলেও তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। জেএসএসের সাথে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও বর্তমানে পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের প্রবল দাপটের কাছে মার খেয়ে খেয়ে রাঙামাটিতে আওয়ামী ক্রমশ বাঙালি নির্ভর দলে পরিণত হচ্ছে। সেখানকার ছাত্রলীগের বিভিন্ন কমিটিতে পাহাড়ী ছাত্ররা যোগ দিতে পারে না পিসিপির দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার ভয়ে। এমন বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে অনেকেই ইউপি নির্বাচনে পাহাড়ীদের মন জয় করার রাজনৈতিক কৌশল হিসাবেও দেখছেন।
তবে এটাই একমাত্র কারণ হলে শঙ্কা ছিলো না। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৬টি স্থায়ী সেনানিবাস রাখার কথা বলা হয়। শান্তিচুক্তির ঘ খ-ের ১৭(ক) ধারায় বলা হয়েছে, “সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে চুক্তি সই ও সম্পাদনের পর এবং জনসংহতি সমিতির সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসার সাথে সাথে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিডিআর) ও স্থায়ী সেনানিবাস (তিন জেলা সদরে তিনটি এবং আলীকদম, রুমা ও দীঘিনালা) ব্যতীত সামরিক বাহিনী, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল অস্থায়ী ক্যাম্প পার্বত্য চট্টগ্রাম হইতে পর্যায়ক্রমে স্থায়ী নিবাসে ফেরত নেওয়া হইবে এবং এই লক্ষ্যে সময়সীমা নির্ধারণ করা হইবে। আইন-শৃঙ্খলা অবনতির ক্ষেত্রে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে এবং এই জাতীয় অন্যান্য কাজে দেশের সকল এলাকার ন্যায় প্রয়োজনীয় যথাযথ আইন ও বিধি অনুসরণে বেসামরিক প্রশাসনের কর্তৃত্বাধীনে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করা যাইবে। এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন বা সময় অনুযায়ী সহায়তা লাভের উদ্দেশ্যে আঞ্চলিক পরিষদ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করিতে পারিবেন”।
এখানে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কারণ হচ্ছে, শান্তিচুক্তিতে ৬টি স্থায়ী সেনানিবাস স্থাপনের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ৪টি ব্রিগেড বাদে ‘বাকিগুলো সব সরিয়ে নেয়ার’ ঘোষণা দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কি শান্তিচুক্তি সংশোধনের কথা বললেন? এটাও ব্যাখ্যা সাপেক্ষ একটি ভুল বোঝাবুঝি। কেননা শান্তিচুক্তিতে ৬টি স্থায়ী সেনানিবাসের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেই সেনানিবাসগুলোর ফর্মেশনের কথা শান্তিচুক্তিতে স্পষ্ট করে বলা নেই। এই ৬টি স্থায়ী সেনানিবাস কিরূপে সেখানে অবস্থান করবে- ডিভিশন আকারে, ব্রিগেড আকারে না ব্যাটালিয়ন আকারে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা নেই। এই অপশনটি রাষ্ট্রের হাতে রয়ে গেছে। রাষ্ট্র প্রয়োজন মতো তা ব্যবহার করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অর্থাৎ ৪টি ব্রিগেড ও শান্তিচুক্তি সমন্বয় করলে আমরা দেখতে পাবো, তিন পার্বত্য জেলা সদরে তিনটি ব্রিগেড রয়েছে। এর বাইরে গুইমারা ব্রিগেড দিঘীনালায় সরে গেলে রুমা ও আলীকদমে দুইটি ব্যাটালিয়ন থাকতে পারে। তবে শান্তিচুক্তির মধ্যেই সমাধান খুঁজলে এ চুক্তির ঘ খ-ের ১৭(ক) ধারা গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। এই ধারায় যেমন স্থায়ী সেনানিবাসের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করা হয়নি। তেমনি অস্থায়ী সেনানিবাসের সংজ্ঞাও দেয়া নেই। অর্থাৎ অস্থায়ী সেনানিবাস বলতে ব্রিগেড, ব্যাটালিয়ন/জোন, সাবজোন, কোম্পানী স্থাপনা নাকি সেনা আউট পোস্ট বোঝানো হবে তার কিছুই চুক্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এই ব্যাখ্যাটাও রাষ্ট্রের হাতে রয়েছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান ৪টি ব্রিগেডের মধ্যে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান ব্রিগেডে ৫ ব্যাটালিয়ন করে সৈন্য রয়েছে, গুইমারায় রয়েছে ৩ ব্যাটালিয়ন। সব মিলিয়ে ১৮ ব্যাটালিয়ন সৈন্য রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে। একটি ব্যাটালিয়নে গড়ে ৭০০ করে সৈন্য ধরলে ১৮টি ব্যাটালিয়নে ১২-১৩ হাজার সৈন্য রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফর্মেশন অনুযায়ী ৩-৫টি ব্যাটিলিয়ন নিয়ে একটি ব্রিগেড গঠিত হয়। কাজেই পার্বত্য চট্টগ্রামে ৪টি ব্রিগেড থাকলে সেখানে ১২-২০ ব্যাটালিয়ন সৈন্য থাকতেই হবে। ব্যাটালিয়নগুলো আবার গড়ে ওঠে কতকগুলো সাবজোনের সমষ্টিতে। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, এই জোন, সাবজোনগুলো কোথায়, কিভাবে অবস্থান করবে?
শান্তিচুক্তির ঘ খ-ের ১৭(ক) ধারায় আরো বলা হয়েছে, “আইন-শৃঙ্খলা অবনতির ক্ষেত্রে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে এবং এই জাতীয় অন্যান্য কাজে দেশের সকল এলাকার ন্যায় প্রয়োজনীয় যথাযথ আইন ও বিধি অনুসরণে বেসামরিক প্রশাসনের কর্তৃত্বাধীনে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করা যাইবে”। উল্লিখিত বাক্যটি বিশ্লেষণ করলে যা পাওয়া যায় তা হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা অবনতির ক্ষেত্রে বা জাতীয় অন্যান্য দরকারে রাষ্ট্র প্রয়োজনানুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের যেখানে প্রয়োজন যে কোনো ফর্মেশনে সেনাবাহিনী রাখতে পারবে। এ ক্ষেত্রে চারটি ব্রিগেড বা ৬টি স্থায়ী সেনানিবাস বিবেচ্য নয়- রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন বিবেচ্য। একই ধারায় আরো গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটি বলা হয়েছে তাহলো সেনাবাহিনী ফিরিয়ে আনার শর্ত বাস্তবায়িত হতে হবে ‘জনসংহতি সমিতির সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসার সাথে সাথে’..। অর্থাৎ চুক্তিতে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার ও সেনাবাহিনী ফিরিয়ে আনার বিষয়টি শর্তহীন নয়। বরং এর সাথে ‘জনসংহতি সমিতির সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসার’ শর্ত যুক্ত রয়েছে। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই যে, জেএসএসের সকল সদস্য অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেনি। জেএসএস ও তার সকল সদস্যকে অস্ত্র সমর্পণ করিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে পারেনি। চুক্তি অনুয়ায়ী ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জেএসএসের অস্ত্র সমর্পণের সময় চুক্তির বিরোধিতা করে অস্ত্র সমর্পণ না করে তাদেরই একটি অংশ জেএসএস থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইউপিডিএফ নামে নতুন সংগঠন গড়ে তোলে। এরপর স্বার্থগত দ্বন্দ্বে জেএসএসও ভেঙে জেএসএস (এমএন লারমা) নামে নতুন আরো একটি সংগঠন তৈরি হয়। এদিকে জেএসএসের মূলের সামরিক শাখাও সম্পূর্ণরূপে অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেনি। এই তিন পাহাড়ী সংগঠন প্রকাশ্য ও গুপ্ত দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পাহাড়ে প্রকাশ্য ও গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গুপ্ত বা গোপন শাখা আসলে তাদের সাস্ত্রে সামরিক শাখা। যদিও প্রকাশ্যে তারা কখনই এই সামরিক শাখার অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে না। তবে এই তিন সংগঠনের সামরিক শাখার দৌরাত্ম্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থার ওপর কিঞ্চিত আলোকপাত উপরে করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বর্তমানে পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছে। চাঁদা ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে সাধারণ নাগরিক তো দূরে থাক, সরকারী কর্মকর্তাদেরও বসবাস অসম্ভব। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনটি পাহাড়ী সংগঠনের নির্ধারিত চাঁদা দিতে না পারলে সেখানে বসবাস যে কারো জন্যই অসম্ভব। সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে সাধারণ ও শান্তিপ্রিয় পাহাড়ীদের জিম্মি করে তাদের নির্দেশিত পথে পরিচালিত করতে বাধ্য করে। শুধু তাই নয়, পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অখ-তা, বাঙালি ও সরকার বিরোধী নানা তৎপরতায় লিপ্ত। এরূপ পরিস্থিতিতে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার শান্তিচুক্তির শর্তানুযায়ী বাধ্যতামূলক নয়।
তারপরেও প্রশ্ন থাকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম সেনাবাহিনী প্রত্যাহার কেন করতে হবে? কারো আবদারে? সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে গিয়েছে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অপরিহার্য প্রয়োজনে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দাবি করে। এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামে পোস্টিংকে পানিশমেন্ট পোস্টিং হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেই পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী গিয়েছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষাকল্পে সরকারী নির্দেশে। সাপ, মশা, জোক হিংস্র বন্যপ্রাণী, দুর্গম ও বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা, প্রতিকুল পরিবেশ, বৈরী ভূপ্রকৃতি ও খাদ্যাভ্যাসের সাথে মোকাবেলা করে এবং পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের হুমকি ও অপতৎপরতার মুখে সেনাবাহিনী রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব অটুট রেখেছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকের অনেকে এ কথা বহুবার বলেছেন যে, সেনাবাহিনী না থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বহু আগেই বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তো। এ কাজে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ৩৫১ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৮৪ জন এবং অন্যভাবে ২২৭ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারপরও সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সরে আসেনি। এখনো রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাষ্ট্রীয় নির্দেশ পালনে নিয়োজিত। শুধু রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায়ই নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী অপারেশন উত্তোরণের আওতায় অসংখ্য উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজের সাথে জড়িত। এরমধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফ্রি বিষেশায়িত ও সাধারণ চিকিৎসাসেবা, ব্লাড ব্যাংক পরিচালনা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৭টি বিনামূল্যে চক্ষুশিবির পরিচালনা করে। এতে ৩৫২৫ জন লোক সেবা গ্রহণ করে- যার মধ্যে ২১১৮ জন পাহাড়ী ও ১৪০৭ জন বাঙালি। একই বছরে ৮২৮টি বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পরিচালনা করে। এতে ১২৯১৪৯ জন সেবা গ্রহণ করে। এর মধ্যে পাহাড়ী ৫৪৫৯৬ জন এবং বাঙালি ৭৪৭০৩ জন রয়েছে। গত বছর সাজেকের শিয়ালদহে হঠাৎ করে ডায়রিয়া মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত ডাক্তার পাঠানো জরুরি হয়ে পড়ে। কিন্তু অত্যন্ত দুর্গম শিয়ালদহে স্বাভাবিকভাবে ডাক্তার ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো যেমন কষ্টকর ছিল, তেমনি নিরাপত্তার কারণে ডাক্তারগণও সেখানে যেতে দ্বিধান্বি^ত ছিলেন। এরূপ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সেখানে ডাক্তার, চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানোর পাশাপাশি ডাক্তারদের নিরাপত্তা বিধান করে মহামারী রোধ করতে সক্ষম হয়েছিল। ২০১৫ সালে সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৫৯৮০ জনের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ, ৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ বা সংস্কার, ২৬টি গভীর নলকূপ স্থাপন, ২৭৭৩৩ জনকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, ৩৯০৮ জনকে আর্থিক অনুদান, ১২২টি ধর্মীয় উপাসনালয়কে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা, ৪৮টি ব্রিজ ও যাত্রী ছাউনি নির্মাণ ও সংস্কার, ১৪০টি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা, ৩৬১টি উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনসহ ৯২টি অন্যান্য সহায়তা করে। প্রত্যেক বছরই এই সেবা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়নে সেনাবাহিনীর ব্যাপক অবদান রয়েছে। এরমধ্যে বিদ্যালয় নির্মাণ, সংস্কার, পরিচালনা, শিক্ষকদের বেতন প্রদান, বই, খাতা, কম্পিউটার, পোশাকসহ বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী প্রদান, ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান, সহশিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা ইত্যাদি রয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের বেকার তরুণদের উন্নয়নে নানা ধরনের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, কম্পিউটারসহ আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করে থাকে। মহিলাদের জন্য নানা ধরনের আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রশিক্ষণ পরিচালনা, কম্পিউটার ও সেলাই মেশিন বিতরণ করে। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সংস্কারের পাশাপাশি ফ্যান, লাইট, চার্জার, মাইক বিতরণ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে সারা বছর বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করে থাকে। একইভাবে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক সামগ্রী বিতরণ করে থাকে। গভীর নলকূপ স্থাপনসহ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে ফিল্টার প্রদানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম, দরিদ্র জনগণের বসতঘর নির্মাণ, হাঁস-মুরগী-ছাগলের খামার ও কুটির শিল্প স্থাপনে সহায়তা, যাত্রী ছাউনি নির্মাণ, সৌর প্যানেল প্রদান, সাংবাদিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। কৃষকদের জন্য প্রশিক্ষণ, কৃষি সরঞ্জাম, সার, বীজ, কীটনাশক বিতরণ করে থাকে। পাহাড়ী-বাঙালিদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন ধরনের কর্মকা- পরিচালনা করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে কোনো উদ্ধার ও সংস্কার তৎপরতায় সেনাবাহিনী সর্বাগ্রে এগিয়ে আসে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারে সেনাবাহিনীর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। দুর্গম পাহাড়ে সড়ক নির্মাণ, সংস্কার এ কাজে জড়িতদের নিরাপত্তা প্রদান, পর্যবেক্ষণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা অবিচ্ছিন্ন রাখতে নিরাপত্তা প্রদানের কাজ করে থাকে। ৩ পার্বত্য জেলার ১৫৩৫ কিমি রোড নেটওয়ার্কের অর্ধেকই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্মাণ করেছে। আলীকদম-থানচি সড়ক, সাজেক, নীলগিরি সড়কের মতো উঁচু সড়ক নির্মাণ করে দেশবাসীর প্রশংসা অর্জন করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন খাতের উন্নয়নে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিকমানের পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রামের অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক উৎপাদন ও পাচার, জঙ্গি তৎপরতা দমন, অবৈধ অস্ত্র বাণিজ্য, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস দমনে অসামান্য ভূমিকা পালন করছে।
যুক্তির খাতিরে ধরা যাক পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করে নেয়া হলো। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামে এর পরিণতি ও প্রভাব কী পড়তে পারে তা ভেবে দেখা জরুরি। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের শর্তানুযায়ী এ পর্যন্ত একটি ব্রিগেডসহ ২৩৮টি বিভিন্ন ধরনের সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যেসব এলাকা থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে সেসব এলাকা পুনরায় পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। বিজিবি বা পুলিশ থাকার পরও সন্ত্রাসীরা ঐ সকল অঞ্চলে ঘাঁটি গাড়তে সক্ষম হয়েছে। পার্বত্য বাঙালি গণমঞ্চের নেতা শওকত আকবরের মতে, তাদের অঞ্চল থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করার পরই বাঙালিদের উচ্ছেদ করে তাদের বিপুল পরিমাণ বৈধ জমি পাহাড়ীরা দখল করে নিয়ে সশস্ত্র তৎপরতা শুরু করেছে। সন্ত্রাসীদের অবস্থানের ৫শ গজের মধ্যেই পুলিশ রয়েছে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা পুলিশকে থোড়াই কেয়ার করছে, আর পুলিশও সেদিকে ভ্রƒক্ষেপ করছে না। এরকম ঘটনা তিন পার্বত্য জেলার সর্বত্রই। তবে ভিন্ন মতও আছে। শওকত আকবরের মতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পরিপূর্ণভাবে সেনাবাহিনী চলে আসলে বাঙালিরা নিজেরাই আত্মরক্ষার্থে অস্ত্র হাতে তুলে নেবে এবং পাহাড়ীদের দখল থেকে তাদের বৈধ জমি উদ্ধার করবে। বর্তমানে সেনাবাহিনীর বাধার কারণে তারা সেটা করতে পারছে না। এই বাঙালি নেতার কথা ধর্তব্য মনে করলে একথা বলা যায়, সেনাবাহিনী চলে আসলে সেখানে ব্যাপকভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হবে। ৬টি সেনানিবাসের বাইরে যদি আর কোনো স্থাপনা পার্বত্য চট্টগ্রামে না থাকে তাহলে দূরবর্তী স্থানসমূহে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ঘটনা ঘটলে কিংবা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগলে স্থায়ী সেনানিবাস থেকে সেনাবাহিনী পাঠিয়ে তা নিয়ন্ত্রণের সময় পাওয়া যাবে কি? পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো সড়কে নির্ভয়ে যানবাহন চলবে কি? পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারী প্রকল্প ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে কি? পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যৎইবা কী হবে ভেবে দেখবার অবকাশ থাকে। সে কারণে ব্যাপকভাবে অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের পর সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে তা নির্মোহভাবে তদন্ত করে দেখা জরুরি। নিরাপত্তা বিশ্লেষকগণ জানেন, অবস্থান ও দুর্গমতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লোভনীয় স্থান। সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হলে এ অঞ্চল ভয়ঙ্কর যুদ্ধাস্ত্রে সজ্জিত মিয়ানমার ও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার মিয়ানমার ও সমুদ্র সন্নিহিত উপজেলাগুলোতে তথাকথিত জঙ্গিদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি, বিদেশী ইন্ধন ও তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মোকাবেলা করে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখা নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে কতটুকু সম্ভব সেটা গভীরভাবে ভেবে দেখা জরুরি।
মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত আমাদের সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে লব্ধ অভিজ্ঞতা দিয়ে বিশ্বের বুকে সেবা ও পেশাদারিত্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করেছে। এ কথা সত্য যে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। সেনাবাহিনীর দায়িত্ব দেশ রক্ষা। সেনাবাহিনীর স্থায়ী ও স্বাভাবিক নিবাস সেনানিবাস। সেনাবাহিনী সেনানিবাসে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। দেশের প্রয়োজনে সেনাবাহিনী ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে এসে দেশরক্ষার কাজে আত্ম নিয়োগ করে এটাই প্রচলিত রীতি। কিন্তু ভূপ্রকৃতি, ভৌগোলিক অবস্থান, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্রমবর্ধমান অপতৎপরতার কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের একাংশকে ক্যান্টনমেন্টের আয়েশি জীবন পরিত্যাগ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম বৈরী পরিবেশে জীবনযাপন করতে বাধ্য হতে হচ্ছে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনে। এ প্রয়োজন যতদিন অনুভূত হবে ততদিন সেনাবাহিনী প্রচলিত আইনের আওতায় দেশের মধ্যে যেখানে যেমন প্রয়োজন তেমনভাবেই অবস্থান করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইনসার্জেন্ট এলাকাগুলোতে এভাবেই সেনাবাহিনী অবস্থান করে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমান্তের ওপারে ভারতের সেভেন সিস্টার্স ও মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের ইনসার্জেন্ট দমনে সে দেশের সেনাবাহিনী একইভাবে অবস্থান করছে। রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা কোনো ছেলের হাতের মোয়া বা হেলাফেলার বিষয় নয়, যে কোনো উপায়ে তা রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখন, কোথায়, কিভাবে কতদিন থাকবে সেটা নির্ধারণ করবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টগণ তথা সরকার।
Email: palash74@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন