মদন মন্ডল বয়স ১০৫ বছর। স্ত্রীর বয়সও ৮০ বছর, ছেলে সন্তান থেকেও নেই, নেই ভালোমতো থাকার কোনো জায়গা। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন। একা একা চলতে ফেরতে অনেক কষ্ট হয়। বেঁচে থাকতে যে মৌলিক চাহিদার প্রয়োজন তারও নূন্যতম পূরণ করতে পারছেন না তিনি। পাচ্ছেন না সরকারি কোনো সহায়তা।
মদন মন্ডল হিন্দু সম্পাদয়ের প্রবীণ ব্যক্তি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বিষন্নতায় ভুগছেন। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশে মদন মন্ডল চেষ্টা করেও পাচ্ছেন না বয়স্ক ভাতা। তাইতো তার একটাই প্রশ্ন আর কত বয়স হলে মিলবে আমার বয়স্ক ভাতা?
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন নিজের কষ্টের কথা। গণমাধ্যম কর্মী দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, ‘আর কত বয়স হলে আমরা দুজন বয়স্ক ভাতা পাব? অনেকবার আমি ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির কাছে একটা ভাতার কার্ড করে দেয়ার অনুরোধ করেছি। কোনোভাবে একটা বয়স্ক ভাতার কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি।
করুণ আকুতি আর জলেভেজা চোখে তিনি আরও বলেন, সমাজের অনেকের কাছে আমার স্ত্রীর ধরণা দিয়েছে কিন্তু মিলছে শুধু বছরের পর বছর আশ্বাস ‘আগামীতে আসলে পাবেন’। এই আশ্বাসটুকু ছাড়া আর কিছুই পাননি তিনি। ছেলে সন্তান থাকার পরেও তারা আমার ভরণপোষণ বা ঔষধ কেনার টাকা পর্যন্ত দেয় না। বাধ্য হয়ে মেয়ে আমাকে তার সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতা করে। তিনি সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে একটা বয়স্ক ভাতার কার্ডের দাবি করেন।
মদন মন্ডলের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কার্তিকপুর গ্রামে। হতদরিদ্র মদন মন্ডলের একে বারেই চলাচল করতে পারে না তাই তার স্ত্রী এখন জীবনের তাগিদে অন্যের বাড়িতে ফাইফরমাশ খাটেন। কখনো কখনো ছোট মেয়ের বাড়িতে থেকে দিনাতিপাত করছেন।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য জোসনা রানী বলেন, সত্যিই মদন মন্ডল একেবারে অসহায়। তবে আগামীতে বয়স্ক ভাতাতে তার নাম তালিকাভুক্ত করা হবে।
এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ আসেনি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে তালিকা পাঠানো হয় তার ভিত্তিতেই আমরা কার্ড সরবরাহ করে থাকি। এর বাইরেও বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার কার্ড পাওয়ার যোগ্য কেউ থাকে তাহলে আমি ব্যবস্থা করে দিবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন