মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, ছাগলনাইয়া (ফেনি) থেকে
আগামীকাল ছাগলনাইয়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত। ভোটাররা বলছেন, মেয়র পদে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ মোস্তফা ও বিএনপি প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. আলমগীর বিএর মধ্যে। অপর মেয়র প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আলহাজ রহমত উল্লাহ পাটোয়ারী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনিও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পারেন বলে অনেকের ধারণা। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের চাপা আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ভোট গ্রহণের দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে মেয়র, কাউন্সিলর ও সাধারণ ভোটাররা। জানা গেছে, ২০০২ সালে ছাগলনাইয়া পৌরসভা গঠনের পর এই তৃতীয় নির্বাচনে মেয়র পদে তিন জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ইতোমধ্যে ৯নং ওয়ার্ডে মুন্সী নুর হোসেন এবং সংরক্ষিত ৩নং ওয়ার্ডে সাহেনা আক্তার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। তারা দু’জনই আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ১নং ওয়ার্ডে চার জন, ২নং ওয়ার্ডে ৫, ৩ নং ৫, ৪ নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৫ জন, প্রার্থী কাউন্সিলর পদে লড়ছেন। এছাড়া সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে ৩ জন ও ২নং ওয়ার্ডে ২ জন মহিলা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৮.৫০ বর্গকিলোমিটার আয়াতনের ছাগলনাইয়া পৌরসভায় মোট ভোটার ২৯ হাজার ৯৪৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৩৭৪ জন ও ১৪ হাজার ৫৭৫ জন নারী ভোটার রয়েছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোস্তফা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় পৌর এলাকার উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজয়ী হতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির প্রার্থী মো. আলমগীর বিএর অভিযোগ আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীরা তার নির্বাচনী পোস্টার ছিড়ে ফেলেছেন। মাইকে প্রচারণা চালানোর সময় বাধাসহ নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির লক্ষ্যে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কেন্দ্র দখল করাসহ বিভিন্ন গুজবে সুষ্ঠু নির্বাচন ও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন বলে আলমগীর বিএর অভিযোগ। প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান, তিনি আরো বলেন, পৌর এলাকায় যত উন্নয়ন কাজ হয়েছে তা তার হাত দিয়ে হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আবারো মেয়র নির্বাচিত হলে অবশিষ্ট কাজ করে ছাগলনাইয়া পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলে নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ মোস্তফা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির প্রার্থী পরাজয়ের আশঙ্কায় আবোল-তাবোল কথা বলতে শুরু করেছেন। বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্র দখল করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে চিহিৃত সন্ত্রাসীদের জড়ো করছেন। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসনের কাছে অভিযোগও দিয়েছি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ। তিনি বিজয়ী হলে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য আলাদা পুল-কালভাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পানি বন্ধতা নিরসন, রাস্তাঘাট সংস্কার, বিদ্যুতের লাইটিং, ভাসমান টয়লেট ও পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করা হবে। সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. মাইনুল হক বলেন, ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে এসে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারেন সেজন্য পৌর এলাকায় বিজিবি ও র্যাব মোতায়ন থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনাচার্জ (ওসি) মো. রাশেদ খান চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত। বিশৃঙ্খলাকারী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। পৌরসভার ১০টি ভোট কেন্দ্রই অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন