পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা : পঞ্চগড়ের কৃষকরা বোরো ধান রোপণ পুরোদমে শুরু করেছেন। গত শুক্রবার সকালে আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের মালিগাঁও গ্রামে বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত দেখা যায় কয়েকজন মহিলা শ্রমিককে। সকালের কনকনে শীত উপেক্ষা করে তারা কাদা পানিতে নেমে কাজ করে চলেছেন। কাজের মাঝে মহিলারা নানা ধরনের গাল-গল্প, হাসি-ঠাট্টা করে মনের লুকানো কষ্ট ঢেকে রাখেন। জানতে চাইলে হাসি মুখে শ্রীমতি কাঞ্চন রানী (২৭), রুপবান (৩৮) ও রীনা বালা বলেন, সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। তারপর পারিশ্রমিক হিসেবে শ্রেণিভেদে ১২০-১৫০ টাকা পাই। এ সময় কথা হয় শ্রী পরেশ চন্দ্র বর্মনের সাথে। তিনি একজন বর্গাচাষী। নিজের জমি না থাকায় আড়াই বিঘা জমি বন্ধক নিয়ে বোরো ধান রোপণ করছেন। দীর্ঘ ৫-৬ বছর ধরে তিনি এই জমিতে একই নিয়মে চাষাবাদ করে আসছেন। রসেয়া নদীর তীরে তুলনামূলক নিচু জমি হওয়ায় এ জমিতে বছরে একবারই ধান উৎপাদন করা যায়। পরেশ বলেন, ধান চাষ করে জমির মালিককে ২০ মণ ধান দিতে হয়। গত বছর আড়াই বিঘা জমিতে ৭০ মণ ধান পেয়েছি। এ বছর তিনি বাজার থেকে ২০ কেজি ধানের বীজ ক্রয় করে বীজতলায় ছিটিয়ে দিয়েছেন। বীজ ছিটানোর দুই মাস পর বীজতলা থেকে তুলে জমিতে রোপণের জন্য এনেছেন। এর আগে তিনি জমি তৈরিতে গরুর হাল দিয়ে ১ বার ও পাওয়ার টিলার দিয়ে ৩ বার চাষ দিয়েছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৪ হাজার টাকা। জমি তৈরির সময় ও বীজ রোপণের পর থেকে ধান পরিপক্ব হওয়া পর্যন্ত পানি সেচ দিতে ৯ হাজার টাকা চুক্তি দিয়েছেন। এছাড়াও বীজ রোপণ ও কাটা-মাড়া করতে শ্রমিকদের শরণাপন্ন হতে হয়। সব মিলিয়ে আড়াই বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে খরচ প্রায় ৩০ হাজার টাকা। পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৯৬ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ লক্ষ ৫ হাজার ২শ ৬১ মে. টন। যা গত বছরের তুলনায় কম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন