এম. হাসানুল হক উজ্জ্বল, বিয়ানীবাজার (সিলেট) থেকে
আগামী ৪ জুন অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত শুক্রবার নির্ধারিত সময় থেকেই রিটার্নিং কর্মকর্তারা ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যান, সদস্য পুরুষ ও সদস্য মহিলা প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন। এদিকে প্রতীক বরাদ্দকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিশাল শোডাউন নিয়ে উপজেলা চত্বরে এসে উপস্থিত হন। এ সময় তাদের সমর্থিত নেতাকর্মীদের নানা স্লোগান আর মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে উঠে আশপাশ এলাকা। কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী অভিযোগ করে বলেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীসহ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশাল শো ডাউন করেছেন। এদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। প্রার্থীদের প্রচারণা ও সমর্থকদের দৌড়ঝাপে এলাকাগুলোতে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়ে গেছে। ভোটারগণ তাদের নিজ নিজ প্রার্থী পছন্দ নিয়েও আলাপ-আলোচনা এবং বর্তমান ও অতীতের হিসেব নিকেশ মিলাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ৪ জুন অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে শেষ পর্যন্ত ৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তন্মধ্যে নিবন্ধিত ৫টি রাজনৈতিক সংগঠনের দলীয় ২৬ জন প্রার্থী ছাড়াও রাজনৈতিক সংগঠন সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র মোট ২২ জন। এদিকে সাধারণ সদস্য পদে ৩৮৩ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৬৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১০ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতীক বরাদ্দ পাওয়া ৪৮ জন প্রার্থীর মধ্যে- ১নং আলীনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম জায়গীরদার (নৌকা) ও বিএনপির দলীয় প্রার্থী মামুনুর রশীদ মামুন (ধানের শীষ)। ২নং চারখাই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মাহমদ আলী (নৌকা), জামায়াত সমর্থিত আমির হোসেন চৌধুরী (চশমা), হোসেন মুরাদ চৌধুরী (আনারস)। ৩নং দুবাগ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আবদুস সালাম (নৌকা), বিএনপির দলীয় প্রার্থী নুরুল কিবরিয়া (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নাজিম উদ্দিন (আনারস), জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মাওলানা নুরুল ইসলাম (খেজুর গাছ)। ৪নং শেওলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী জহুর উদ্দিন (নৌকা), বিএনপির দলীয় প্রার্থী আকতার খান জাহেদ (ধানের শীষ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী আব্দুল হামিদ (খেজুর গাছ), শাকিল হোসেন (আনারস), জাসদের প্রার্থী আহমদ আব্দুল হাই (মশাল)। ৫ নং কুড়ার বাজার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হাজী মাহমদ আলী (নৌকা), বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবু তাহের (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি প্রার্থী আলকাছ আলী (লাঙ্গল), আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তুতিউর রহমান (আনারস), আসলাম আহমদ (চশমা), আজিজুল ইসলাম (মোটরসাইকেল)। ৭নং মাথিউরা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী শিহাব উদ্দিন (নৌকা), বিএনপির দলীয় প্রার্থী জাকির হোসেন সুমন (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী কছির আলী আব্দুর রব (আনারস), আব্দুল ফাত্তাহ বকসী (ঘোড়া), আমিনুল এহসান সাহেদ (চশমা)। ৮নং তিলপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী এমাদ উদ্দিন (নৌকা), বিএনপির দলীয় প্রার্থী মোঃ আব্দুস ছাত্তার (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ ইসলাম উদ্দিন (ঘোড়া), আব্দুল্লাহ সুফিয়ান (মোটরসাইকেল), মোঃ আজিম উদ্দিন (অটোরিক্সা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান (চশমা), হাফিজ আব্দুল বাছিত জবলু (আনারস)। ৯নং মোল্লাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম (নৌকা), বিএনপির দলীয় প্রার্থী এম এ মতলিব (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এম এ কাদির (ঘোড়া), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মান্নান (আনারস), জাকারিয়া আহমদ (মোটরসাইকেল)। ১০নং মুড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সামছুদ্দিন মাখন (নৌকা) এবং বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থী ছাদ উদ্দিন সোনা মিয়া (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওহিদুর রেজা মাসুম (ঘোড়া), আব্দুল হাছিব (চশমা), জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী আবুল খায়ের (আনারস)। ১১নং লাউতা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী এম এ জলিল (নৌকা), বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থী আব্দুল হক আক্তার (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি প্রার্থী আজিজুল ইসলাম লুকু (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী গৌছ উদ্দিন (আনারস), জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন (ঘোড়া)। এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচন সমন্বয়ক মুহ. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রার্থীরা প্রচারণা শুরুর সাথে সাথে যাতে কোথাও কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কিংবা কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারে সে জন্য প্রশাসন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। কেউ কোন অভিযোগ করলে তা সাথে সাথে তদন্ত করে মোবাইল কোর্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন