মু. আব্দুল বাছির সরদার, দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা, আর বিদ্রোহীদের চাপে পড়ে কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত দলীয় প্রার্থীরা। দিরাই-শাল্লার ১৩টি ইউনিয়নের চিত্র হবে প্রায়ই একইÑএমন আভাষ দিয়ে অনেক ভোটার জানান, সময়মতো সঠিকভাবে দলীয় মনোনয়নে অর্থের বিনিময়ে প্রতীক পাওয়া বাণিজ্যের সঠিক জবাব দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র দাবি করেছে, এবারের নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী। সূত্র মতে, দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান খান (নৌকা), বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর চৌধুরী (আনারস), আল মামুন (মোটর সাইকেল), মহসিন রেজা (ঘোড়া) ও বিএনপির মো. আনিছুর রহমান (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নে মোট ৫৫টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬টি, সাধারণ সদস্য পদে ৩৭টি, সংরক্ষিত আসনে ১২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। ভাটিপাড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে বেলাল আহমেদ (ঘোড়া), মো. শাহজাহান কাজী (মোটর সাইকেল), আলমগীর বক্ত চৌধুরী (আনারস), আওয়ামী লীগের জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা) ও বিএনপির মো. আফজল হোসেন (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নে মোট ৪১টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬টি, সাধারণ সদস্য পদে ২৫টি, সংরক্ষিত আসনে ১০টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। রাজানগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে নওশেরান চৌধুরী (ঘোড়া), মো. রুনু মিয়া সর্দার (মোটর সাইকেল), জহিরুল ইসলাম (চশমা), মো. আব্দুল হক তালুকদার (আনারস), আওয়ামী লীগের সৌম্য চৌধুরী সমু (নৌকা), বিএনপির জুনায়েদ মিয়া (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নে মোট ৬২টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭টি, সাধারণ সদস্য পদে ৪৩টি, সংরক্ষিত আসনে ১২টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। চরনারচর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে পরেশ লাল দাস (আনারস), শাহিন সুলতান তালুকদার শাহজাহান (ঘোড়া), বিএনপির রতন কুমার দাস (ধানেরশীষ) ও আওয়ামী লীগের পরিতোষ রায় (নৌকা)। এ ইউনিয়নে মোট ৬৩টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪টি, সাধারণ সদস্য পদে ৪৫টি, সংরক্ষিত আসনে ১৪টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। দিরাই সরমঙ্গল ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান এহসান চৌধুরী (আনারস), মহানন্দ দাস (ঘোড়া), বিএনপির মো. মোয়াজ্জেম হোসেন (ধানেরশীষ), আওয়ামী লীগের কানুলাল দাস (নৌকা) ও জাসদের কৃষ্ণকান্ত রায় (মশাল)। এ ইউনিয়নে মোট ৫৩টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫টি, সাধারণ সদস্য পদে ৩৬টি, সংরক্ষিত আসনে ১২টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। করিমপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে শাহাজাহান সরদার (আনারস), আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান আছাব উদ্দিন সরদার (নৌকা) ও বিএনপির মো. আব্দুর রহিম (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নে মোট ৫৩টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩টি, সাধারণ সদস্য পদে ৩৭টি, সংরক্ষিত আসনে ১৩টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। জগদল ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলনের মো. সোলাইমান হাসান (হাতপাখা), স্বতন্ত্র হিসেবে মো. শিবলী আহমেদ বেগ (আনারস), আওয়ামী লীগের মো. হুমায়ুন রশিদ (নৌকা), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেএম তোফায়েল আহমদ (খেজুর গাছ) ও বিএনপির মো. কামরুল ইসলাম (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নে মোট ৬৯টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫টি, সাধারণ সদস্য পদে ৫৪টি, সংরক্ষিত আসনে ১০টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। তাড়ল ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান নূরুল হক তালুকদার (চশমা), রুহুল আমীন (ঘোড়া), দ্রুপদ চৌধুরী নুপুর (আনারস), মো. আকিকুর রেজা (মোটর সাইকেল), মো. আব্দুল কদ্দুছ (টেলিফোন), আওয়ামী লীগের আহমদ চৌধুরী (নৌকা), বিএনপির আলী আহমদ (ধানের শীষ) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের হাজী গিয়াস উদ্দিন (খেজুর গাছ)। এ ইউনিয়নে মোট ৬১টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৮টি, সাধারণ সদস্য পদে ৪০টি, সংরক্ষিত আসনে ১৩টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। কুলঞ্জ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আহাদ মিয়া (ঘোড়া), কাওছার গাজী চৌধুরী (চশমা), পবিত্র মোহন দাস (টেলিফোন), মো. একরার হোসেন (মোটর সাইকেল), মো. মিজবাহ উজ্জামান চৌধুরী (আনারস), আওয়ামী লীগের মিলন মিয়া (নৌকা) ও বিএনপির মো. মুজিবুর রহমান (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নে মোট ৬৯টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭টি, সাধারণ সদস্য পদে ৪৭টি, সংরক্ষিত আসনে ১৫টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। এদিকে শাল্লা উপজেলার বাহারা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিধান চন্দ্র চৌধুরী (নৌকা), নরেশ চৌধুরী (ঘোড়া) ও স্বতন্ত্র হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হোসেন (আনারস)। এ ইউনিয়নে মোট ৬৮টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪টি, সাধারণ সদস্য পদে ৪৯টি, সংরক্ষিত আসনে ১৫টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। হবিবপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সুবল চন্দ্র দাস (ঘোড়া) ও বিএনপির শৈলেন কুমার দাস (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নে মোট ৭৬টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪টি, সাধারণ সদস্য পদে ৫২টি, সংরক্ষিত আসনে ২০টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। আটগাঁও ইউনিয়নে স্বতন্ত্র হিসেবে হাজিরুল ইসলাম (টেবিলফ্যান), ফজলুর রহমান (দুটিপাতা), খুরশেদ মিয়া (আনারস), আব্দুর রহমান (ঢোল), জুবায়ের মনির (ঘোড়া), জাকির হোসেন (মোটর সাইকেল), আওয়ামী লীগের আবুল কাসেম আজাদ (নৌকা), বিএনপির আব্দুল্লাহ আল নোমান (ধানের শীষ) ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নজরুল ইসলাম (চশমা)। এ ইউনিয়নে মোট ৭৩টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১১টি, সাধারণ সদস্য পদে ৫১টি, সংরক্ষিত আসনে ১১টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। শাল্লা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের আব্দুল ছত্তার মিয়া (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জামান চৌধুরী ফুল মিয়া (আনারস), আবুলেইছ চৌধুরী (ঘোড়া) ও বিএনপির সিরাজুল ইসলাম সিরাজ (ধানের শীষ)। এ ইউনিয়নে মোট ৬৪টি, এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪টি, সাধারণ সদস্য পদে ৪৪টি, সংরক্ষিত আসনে ১৬টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছিল। উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পঞ্চম পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩ মে, মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ ও ৫ মে, আপিল দাখিল ৬ ও ৮ মে, আপিল নিষ্পত্তি ৯ ও ১১ মে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ ১২ মে, চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৮ মে ২০১৬ শরিবার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন