শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

পর্যটকদের হাতছানি দিচ্ছে ‘আকাশনীলা’

প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে

আকাশনীলা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার। এখনও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। তারপরও হাতছানি দিচ্ছে পর্যটকদের। সুন্দরবন সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে ইনোভেশন ইন পাবলিক সার্ভিসের আওতায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) গড়ে তোলা হচ্ছে ট্যুরিজম সেন্টারটি। প্রাথমিক নির্মাণ কাজ শেষে আগামী মাসেই উদ্বোধন করা হবে নন্দিত এই বিনোদন ক্ষেত্রটি। আর এর মাধ্যমেই সাতক্ষীরার পর্যটন শিল্প বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সুন্দরবন দেখার জন্য এখানে রয়েছে পরিবেশবান্ধব সোলার বোট। প্রকৃতি থেকে পাওয়া সামগ্রী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ অন্যান্য স্থাপনা। মাছ ধরতে পারবে পর্যটকরা। এজন্য রয়েছে ফিশিং জোন। নির্মাণাধীন রয়েছে ফিশ মিউজিয়াম, হারবেরিয়াম, সংগ্রহশালা। সংগ্রহশালায় থাকবে স্থানীয় সংস্কৃতির পরিচয় বহনকারী বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্যসামগ্রী। সুন্দরবন দেখার জন্য নির্মাণ করা হবে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। আর চারপাশে সুন্দরবনের গাছ-গাছালি, মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। পর্যটক আবুল কাসেম আকাশনীলার সৌন্দর্যের বর্ণনা করে বলেন, ‘ঐ যে সুন্দরবন। কি চমৎকার পরিবেশ। খুবই ভালো লেগেছে। মনটা ভরে গেছে। আর মাছ ধরার মজাইতো আলাদা। পরিপূর্ণতা পেলে জেলার পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হবে আকাশনীলা।’ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের সুন্দরবন সংলগ্ন কলবাড়িতে জেলা প্রশাসনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ২৫০ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে আকাশনীলা ইকোট্যুরিজম সেন্টার। অবকাশ কাটাতে এখানে থাকবে রাতযাপনের সুযোগও। পর্যটক মননজয় ম-ল বলেন, আকাশনীলায় একবার যে আসবে, তার প্রিয় স্থানের তালিকায় স্থান পাবে জায়গাটি। উদ্বোধনের পর সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা করা গেলে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হবে এটি। এজন্য অবশ্যই পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। আকাশনীলায় ঘুরতে এসে কৃষ্ণ ব্যানার্জি নামের আরও একজন বলেন, সুন্দরবনের বড় অংশটি সাতক্ষীরায়। কিন্তু সুদীর্ঘকাল ধরে এখানে কোনো পর্যটন কেন্দ্র গড়ে না ওঠায় পর্যটকরা নানারকম বিড়ম্বনায় পড়তো। ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা সফরে এসে কোথাও বসারও জায়গা পেত না। এখন থেকে আকাশনীলায় আসতে পারবে। সেখান থেকে যেতে পারবে সুন্দরবনে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) গড়ে তোলা আকাশনীলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা জোয়ার ও ক্রেল। জোয়ারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহমান আকাশ জানান, সুুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প সম্প্রসারণে আকাশনীলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার সবার মন কাড়বে এই কারণে যে, এখানকার সবকিছু পরিবেশবান্ধব। প্রকৃতির সাথে একাকার হয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। উদ্বোধন না হলেও পর্যটকরা এখানে আসছে। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও নাগরিক নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, কক্সবাজারসহ অন্যান্য জেলা পর্যটনকে ঘিরে বিকশিত হলেও সাতক্ষীরায় কখনো সেই সুযোগ ছিল না। আমরা আশা করছি, সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা আকাশনীলার মাধ্যমে সেই সুযোগ তৈরি হবে। তবে, এজন্য জেলার রাস্তাঘাট তথা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম জানান, আকাশনীলা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার উপজেলা প্রশাসনের ইনোভেশন ইন পাবলিক সার্ভিসের একটি প্রকল্প। মূলত পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) এটি গড়ে তোলা হচ্ছে। এটি উদ্বোধনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আমরা আশা করছি, পর্যটন শিল্পকে আরো বিকশিত করতে আকাশনীলা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন