শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

জাবিতে শীতের পিঠা

প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আমি সব পিঠা বানাতে পারি। বাড়ি থাকলে মায়ের সাথে পিঠা বানাতাম। পরিবারের সবাই মিলে মজা করে খেতাম। আসলে নিজের হাতের পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। এভাবেই বর্ণনা করছিলেন, বটতলায় পিঠা খেতে আসা ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী জান্নাত জিমু।
ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র রিফাত বিল্লাহ বলছিলেন, এই শীতে চাঁদর গায়ে দিয়ে মায়ের পাশে বসে আগুন পোহাতাম। মা খেজুরের মিঠাই আর বিভিন্ন ধরনের শীতের পিঠা বানাত। তা গরম গরম খাইতাম। কত্ত মজা লাগতো! কিন্তু এখন খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শুধু মায়ের কথা মনে পড়ছে। মাঝে মাঝে তাই এই পিঠা চত্বরে এসে পিঠা খাই। তার বাড়ি বরিশাল অঞ্চলে। দুর্গম নদী পাড়ি দিয়ে সে এসেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার জন্য। তাদের এলাকায় প্রচুর খেজুরের রস হয়। তা সকালে ঘুম থেকে উঠে খাওয়ার স্মৃতি তার শুধু এখন মনে পড়ছে। আর অপেক্ষায় আছে কবে বাড়ি যাবে। তার মতো এরূপ বহু শিক্ষার্থী আছে যাদের একই ভাবনা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এ শীতের পিঠার চাহিদা মিটানোর জন্য পিঠার আসর বসেছে বটতলায়, শহীদ মিনার ও অমর একুশের প্রাঙ্গণে এবং ট্রান্সপোর্ট চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায়। বিক্রি করা হচ্ছে নানান ধরনের পিঠা। যেমন পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, কাঠি কাবাব, পাতার চপ, ডুনার পিঠা, আলু পিঠা, ডিম পিঠা, মাংস পিঠা, ইত্যাদি। সন্ধ্যায় কনকনে শীতে যখন গাঁ শিহরিত হয়ে উঠে। ঠিক তখন ভিড় জমে এ পিঠা চত্বরের চারপাশে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, গল্প তার সাথে গরম গরম পিঠা খেতে খেতে হারিয়ে যায় অন্য এক জগতে।
তাছাড়া শীতের এই সময়টায় মেয়েদের হলেও চলে পিঠা বানানোর হিড়িক। চালের গুঁড়া আর গুড়, চিনি দিয়ে নানা ধরনের পিঠা তৈরিতে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে থাকে তারা। আর এই পিঠার স্বাদ গ্রহণ করে বন্ধুবান্ধব আর তাদের প্রিয় মানুষটি। কথা বলেছিলাম ঘুরতে আসা দর্শনার্থী বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয়ের সাথে। তিনি বলেছিলেন বিকেএসপি ও এলাকার অনেক কাছের কয়েকজন বন্ধু থাকায় আগেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এসেছি। তবে এবার শীতের পিঠা খেয়ে মুগ্ধ হয়েছি। এর আগে পরিবারের সাথে এখানকার বটতলার খাবারও খেয়েছি। তবে এবার সন্ধ্যায় পিঠা খেয়ে এবং রাতে বটতলায় চায়ের আড্ডা আর গানে আমি মুগ্ধ। সন্ধ্যায় ভাসানী হলে ব্যাডমিন্টন খেলেও অনেক মজা পেয়েছি।
প্রকৃতির এই সুন্দর সাজ দেখতে প্রতিদিনই তারকাদের আনাগোনা প্রায় দেখা যায়। তারা এ নৈ¯^ির্গক ভূমি জাবিকে উপভোগ করার সাথে সাথে শিতের পিঠার স্বাদ নিতে ভুল করেন না।
এই নানা ধরনের রসালো পিঠা যারা প্রতিনিয়ত সরবরাহ করছে। মায়ের হাতের পিঠা খাওয়ার ¯্রতিকে যারা ভুলিয়ে রাখছে। তাদের হয়তো বা এটাই জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উৎস। তাই প্রতিবছর এই শীতের অপেক্ষায় থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের হতদরিদ্র এ পিঠা কারিগরগুলো।
ষ মাহবুব আলম

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন