গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার আসামী বখাটে যুবক সোহেল আকন্দ (২১)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ১২ মে হোটেলে মাংস দিয়ে ভাত খাওয়ানোর কথা বলে এক কিশোরীকে ধর্ষণের সময় ওই কিশোরী কান্না শুরু করলে পালিয়ে যায় বখাটে সোহেল। এ ঘটনার পরদিন ১৩ মে ওই কিশোরীর দাদ বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। বৃহস্পতিবার রাতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা গেট চতুরঙ্গ মোরের পাশে একটি খাবার হোটেল থেকে সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এসপি প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া মিট দ্যা প্রেসে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
এসপি প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া জানান, পৈশাচিক এই ঘটনার ৮ থেকে ১০ দিন আগে সোহেল গোবিন্দগঞ্জের ফাঁসিতলা বাজারের রেশমী হোটেলে হোটেল বয় হিসেবে কাজ নেয়। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ওই কিশোরীকে ডাক্তার দেখানোর জন্য তার দাদা তাকে সাথে করে ফাঁসিতলা বাজারে নিয়ে আসেন। ডাক্তার দেখানোর পর ওই কিশোরীকে সুশীলের মুদি দোকানের সামনে রেখে তার দাদা ডাব বিক্রির টাকা তুলতে বাজারের ভেতরে চলে যান। এ সময় সোহেল সুকৌশলে ওই কিশোরীকে ওই বাজারের পশ্চিম পাশে আশরাফুলের আখখেতে নিয়ে গিয়ে এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটায়। এই ঘটনার পর সোহেল গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরের চৌমাথা মোড়ে মায়ামনি হোটেলে গিয়ে হোটেল বয়ের কাজ নেয়। ১৪ মে ওই কিশোরীর পরিবারের লোকজন থানায় কাজ শেষে মায়ামনি হোটেলে নাস্তা করতে গেলে ওই কিশোরী সোহেলকে শনাক্ত করলে সোহেল দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে ওই হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সোহেলের পরিচয় খুঁজে বের করে তাকে গ্রেপ্তারে তৎপর হয় পুলিশ। পরে ১৫ মে বগুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার আরেকটি হোটেলে কাজ নেয় সোহেল। এর পরদিন ১৬ মে গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালী হোটেলে গিয়ে কাজ নেওয়ার সময় রাত ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোহেল আকন্দকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পুলিশের কাছে সোহেল ঘটনার দায় স্বীকার করে। সোহেল আকন্দ পাশ্ববর্তী বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ধাপাকান্দি মাঠেরহাট এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় সোহেলকে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে ফাঁসিতলা বাজারে গত ১৫ মে মানববন্ধন করে ওই কিশোরীর সহপাঠী ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গতকাল বিকেলে বলেন, সোহেলকে কাজ দেওয়ার সময় কোন হোটেল মালিকই তার ঠিকানা লিখে না রাখায় তাকে গ্রেপ্তারে হিমশিম খেতে হয়। তাই কাউকে কাজ দেওয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে তার পূর্নাঙ্গ ঠিকানা লিখে রাখা উচিত। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য সোহেলকে গাইবান্ধা আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন