শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

গোপালগঞ্জের বেসিনে বারি-৬ জাতের মুগ ডালের বাম্পার ফলন

প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা
গোপালগঞ্জে বেসিনে  বারি-৬ জাতের মুগ ডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত এ জাতের মুগডাল আবাদ করে কৃষক প্রতি বিঘায় ৭ মন  ফলন পেয়ে অর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। ক্ষেত থেকে মসুর উঠানোর পরই বারি মুগ ৬ এর আবাদ করা যায়। মুগ কাটার পর আমন ধান আবাদ করা যায়। কৃষক একই জমিতে পরপর ৩ ফসল ফলিয়ে লাভবান হতে পারেন। বারি মুগ-৬ আবাদ করে মাত্র ৬০/৬৫ দিনে ফলন পাওয়া যায়। মুগের গাছ ও পাতা মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে জৈব সার তৈরি হয়। পরবর্তী ফসলের ভাল ফলন পাওয়া যায়। জমির উর্বর শক্তি সংরক্ষণ থাকে। গোপালগঞ্জ বেসিন পাইলট প্রজেক্ট, গাজীপুর ডাল গবেষণা উপকেন্দ্র, কৃষি গবেষনা ফাউন্ডেশন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। গোপালগঞ্জ বেসিন পাইলট প্রজেক্ট সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ৭শ’ বিঘা জমিতে  বারি-৬ জাতের মুগ ডালের আবাদ করা হয়েছে। সুকতাইল গ্রামের কৃষক গাউস আলী শেখ বলেন, এ বছর আমি ২ বিঘা জমিতে বারি ৬ জাতের মুগ আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় ৭ মন ফলন পেয়েছি। বাজারে প্রতিমন মুগ ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে প্রতি বিঘায়  সাড়ে ১১ হাজার ৪০০ টাকার মুগ উৎপাদিত হয়েছে। প্রতি বিঘায় মুগ আবাদে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। খরচ বাদে লাভ হবে সাড়ে ৭ হাজার ৪শ’ টাকা। ক্ষেত থেকে মসুর উঠানোর পরই বারি মুগ ৬ আবাদ করা যায়। মুগ কাটার পর জমিতে আমন ধান বপন করা যায়। একই জমিতে পরপর ৩ ফসলের চাষ করা যায়। বারি মুগ-৬ আবাদ করে মাত্র ৬০ দিনে বাম্পার ফলন পেয়েছি। আগে আমরা এ জমিতে পাটের আবাদ করতাম। পাট কাটার পর আমন ধান আবদ করতে দেরী হয়ে যেত। তিন ফসল করা সম্ভব হতো না। কিন্তু লাভজনক মুগ চাষ করলে তিন ফসল আবাদ করা যায়। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রণজিৎ বিশ্বাস বলেন, গোপালগঞ্জে বেসিনে মুগডালভিত্তিক শস্য চাষাবাদ  আগে হতো না। কারাণ এখানকার কৃষক মুগরে উন্নত জাত এবং অধুনিক চাষাবাদ জানত না। বারি মুগ ৬ জাতের অন্যতম উদ্ভাবক ড.মোঃ আশরাফ হোসেন গোপালগঞ্জ বেসিন পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমে বীজসহ অন্যান্য উপকরন গোপালগঞ্জের কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে সরবরাহ করেন। প্রকল্প ও কৃষি বিভাগের তত্ত্ববধানে এ জেলার কৃষক এ বছর প্রথম বারি ৬ জাতের মুগ আবাদ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। এখন মুগ বিক্রি করে তারা কাঁচা  পয়সার ঘরে তুলছেন। বারি মুগ ৬ জাতের অন্যতম উদ্ভাবক ড.মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, বারি মুগ-৬ অল্প সময়ে বাম্পার ফলন দেয়। এ মুগে পোকার আক্রমন হয়না। স্থানীয় জাতের তুলনায় বারি জাতে ৩ গুন ফলন পাওয়া যায়। মুগ তোলার পর মুগের গাছ ও পাতা মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে জমিতে জৈব সার তৈরী হয়। পরবর্তী ফসলের ভাল ফলন পাওয়া যায়। জমির উর্বর শক্তি সংরক্ষণ থাকে। ডাল চাষে অন্য যে কোন সফলের তুলনায় সেচ ও সার কম প্রয়োগ করতে হয়। ডাল ফসল শেকড়ের গুটির মাধ্যমে বায়ু ম-লে নাইট্রোজেন আবদ্ধ করে মাটির উর্বরতা বাড়ায়। ডাল খাদ্যের গুণগতমান বৃদ্ধি করে। ডাল ফসল নিরাপদ খাদ্য ও নিরাপদ  পৃথিবীর অন্যতম নিয়ামক। কৃষক নিজের, মাটির, পশুর স্বাস্থ্য রক্ষা ও নিরাপদ পৃথিবীর জন্য আগামীতে আরো বেশি বেশি করে বারি মুগ আবাদ করবেন। গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সমীর গোস্বামী বলেন, গোপালগঞ্জে ডাল আবাদের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।  কৃষক বারি মুগের চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছে। এ জেলার কৃষি উন্নয়ন ও উৎপাদ বৃদ্ধিতে বারি মুগ ৬ ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন