বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, চাল আমদানির মাধ্যমে সরকার তাদের সমর্থক ব্যবসায়ীদের টাকা পাচারের সুযোগ করে দিয়েছে। সবদিক থেকে সরকার দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করছে। ন্যায্য মূল্য না পেয়ে কৃষকরা তাদের পাকা ধানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে। এটা ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। গতকাল বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশের বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের সঙ্গে এ শুভেচ্ছা বিনিময়ের আয়োজন করা হয়। প্রতিবছর বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশের বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের সঙ্গে এই শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তিনি কারাগারে থাকায় তার পক্ষ থেকে এ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, কৃষকরা তাদের ধানের মূল্য পাচ্ছে না। এ কারণে তাদের পাকা ধান পুড়িয়ে ফেলছেন। এটা আমাদের বাংলাদেশের জন্য খুবই অশুভ সংকেত। আর এটা ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। কিন্তু সরকার এটা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি।
তিনি বলেন, গুঞ্জন আছে, বাংলাদেশ থেকে যারা টাকা বিদেশে পাচার করে দিতে চাচ্ছেন, তাদের সুযোগ করে দেয়ার জন্য চাল আমদানির ঘটনা ঘটছে। ধান মজুদ থাকার পরও কেন চাল আমদানি করা হচ্ছে? কারণ এখানে টাকা পাচারের ষড়যন্ত্র আছে। আর যারা এটা করছে, তারা বর্তমান সরকারের ব্যবসায়ী, খোঁজ নিয়ে দেখেন।
বিএনপি সংকটে- সরকারের মন্ত্রীদের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি সংকটে নয়। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তার ইশারায় এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দল পরিচালনা করছে।
ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপির আগে যে জনসমর্থন ছিল, সরকারের অত্যাচার নির্যাতনের কারণে এই জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যদি এখন দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করি তাহলে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ নিরাপদ নয়। মানুষের কোন শান্তি ও কথা বলার অধিকার নেই। দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার নেই। একটি দেশে যদি গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার না থাকে তাহলে ধর্ম-কর্মের অধিকার কি থাকে? তাই আজকে ধর্ম-কর্মের অধিকারও নাই। কারণ আজকে বাংলাদেশকে ধর্মহীনতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
স¤প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া প্রধানমন্ত্রীর একটি ফোনালাপের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি সংযত না হয় তাহলে তার মা সারাজীবন কারাগারে থাকবে। একথা বলার পরে আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, কোনো আইনের কারণে নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমান সরকার বেগম জিয়াকে কারাগারে রেখেছে।
বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, বরকত উল¬াহ বুলু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তী, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম আব্দুস সাত্তার, জন গোমেজ, অমলেন্দু বিশ্বাস অপু, কৌন্ডান্য ভিক্ষ্য মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার রাঙামাটির পঙ্কা বংশ ভিক্ষ্য, চাকমা রাজা রাম বিহার রাঙামাটির সুশীল বড়ুয়া, সুভাষ চন্দ্র চাকমা প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন