প্রাচীন জনপদের নাম নাটোর। জেলার সাতটি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে কালেরসাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে, বটবৃক্ষসহ নানা প্রকৃতির গাছ-গাছড়া এবং রাজা-জমিদারের বহু নিদর্শন। তবে সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের দুলশী গ্রামে একটি ‘অচিন’ গাছকে ঘিরে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। গাছটি কেটে ফেলতে গিয়ে সাহেব আলী নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা বন কর্মকর্তারাও গাছটি সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে পারেননি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সমতল ভ‚মি থেকে ১৫ ফিট উচুতে প্রায় ৫০ ফিট উচ্চতা ও চতুর্পাশের আয়তন প্রায় ১৫০ স্কায়ার ফিট। চারদিকে মাটির সাথে কামড়ে রয়েছে অসখ্য শেখর-বাকর। বৈশাখের প্রচন্ড তাপদাহে এলাকার ছেলে বুড়ো সবাই বিশ্রাম নেন ওই অচিন গাছতলায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ৬০ বছরের বৃদ্ধা আবুল কালাম জানান, গাছটির ঠিক কত বছর আগের তার বাপ-দাদারাও বলে যেতে পারেনি। এলাকার আরেক বাসিন্দা ৬৫ বছরের মোকছেদ আলী জানালেন, গাছটিতে আঙুর ফলের মতো ছোট ছোট ফল ধরে। বৈশাখ মাসের শেষের দিকে ফলগুলো পাকে, পাকাফল খেতে অত্যন্ত সুস্বাদ। লাইলী বেগম নামে এক বৃদ্ধা নারী জানান, অনেক আগে গাছটি কেটে ফেলতে গিয়ে সাহেব আলী নামে ব্যক্তি মারা গেছেন। তখন থেকে গ্রামবাসী এই গাছটির উপরে একটি বিশ্বাস স্থাপন করে। দিনে দিনে রহস্যও বাড়তে থাকে। মানত করে অনেকে নাকি জটিল-কঠিন রোগবালাই থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। তাই গ্রামবাসী ও আশে-পাশের এলাকার মানুষের বিশ্বাসের একটি বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে এই অচিন গাছটি। মাঝে মধ্যে দূর-দূরান্তের লোকজন চাল-ডাল ও খাসি জবাই করে মানত করে যান। ঐতিহ্যবাহী চলনবিলের উত্তর-পূর্ব কোনে অবস্থিত স্থানীয়দের বিশ্বাসী এই অচিন গাছটি রক্ষায় একটি আবেদন করা হয়েছে বন মন্ত্রণালয়ে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপিকে জানানোর পর তিনি গাছটির চারপাশ বাঁধাই (পাকা) করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু অদ্যবধি ওই আশ্বাস বাস্তবায়ন করা হয়নি। স্থানীয়দের কারো কারো ধারনা এই অচিন গাছটির নাম ‘খিরির’ গাছ।
সিংড়া উপজেলা বন কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, অচিন ওই প্রাচীন বৃক্ষটি সম্পর্কে কোন তথ্য আমাদের জানা নেই। তবে গাছটির পাতা এবং ডালসহ বিস্তারিত তথ্য আমরা গবেষনাগারে প্রেরণ করেছি যাতে গাছটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন