পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্রীণ সিটি আবাসিক প্রকল্পের বালিশসহ অন্যান্য পণ্য ক্রয়ে অস্বাভাবিকের চেয়েও অস্বাভাবিক মূল্য হওয়ায় দেশের মতো পাবনাতেও এখন এটি ‘টক দ্যা টাউন ।’
বিভিন্ন স্থানে এ নিয়ে সাধারণ মানুষ, প্রাজ্ঞজন কমবেশী আলোচনা-সমালোচনা করছেন। একটি বালিশের মূল্য ৫ হাজার টাকার উর্ধে আর সেটি তুলতে ৭৬০ টাকা ব্যয় বিস্ময়কর !! কেউ কেউ বলছেন, সাগর হজম নয়, পাবনার গণপূর্ত বিভাগ ভূ-মধ্যসাগর হজম করেছেন। দৈনিক ইনকিলাবসহ দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় এবং সোস্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে খবর প্রচারিত এবং বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় নানাজন নানা মন্তব্য ভাইরাল করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে দেশের মহামান্য প্রেসিডেন্ট ৫-৬ হাজার টাকা মূল্যমানের বালিশে ঘুমান কি? পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যে টাকায় বালিশ কেনা হয়েছে, টিভির মূল্য অস্বাভাবিক, বেতন সচিবের চেয়ে বেশী । দেশের সচিবের বেতন এখানকার মালির চেয়ে কম !! আমেরিকা প্রবাসী গোপাল স্যানাল ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ রাশিয়া থেকে টাকা লোন নিয়ে হরিলুট করা হচ্ছে।’ ইত্যকার নানা কথা। গঠিত তদন্ত কমিটি এখনও পাবনায় এসে পৌঁছাননি বলে জানিয়েছেন, পাবনা গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবাধায়ক প্রকৌশলী দেবাশীষ চন্দ্র সাহা। দৈনিক ইনকিলাবের পাবনাস্থ এই স্টাফ রিপোর্টার তাঁর সাথে আজ যোগাযোগ করে বালিশের দাম ও উত্তোলন খরচ নিয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘
মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন, এ নিয়ে কথা বলা যায় না, তারপরও যখন জানতে চাইছেন, তাহলে বলা যায়, ‘ এটি কোনো সাধারণ বালিশ এবং তুলার তৈরী দুই-তিনশত টাকা দামের বালিশ নয়। যে কারণে এতো হৈচৈ হচ্ছে , এই বালিশ আর্ন্তজাতিক মানের মেশিন মেড এবং ‘আর্টিফিসিয়াল ফাইবার’ দিয়ে তৈরী, যে কারণে তুলার বালিশের চেয়ে এই বালিশের দাম বেশী।’ জানতে চাইলাম, এই বালিশ কি খুবই ভারি যে একটি বালিশ উপরে তুলতে ৭শত টাকার বেশী ব্যয় হবে। তিনি বললেন, আর বেশী কিছু বলা ঠিক হবে না, তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, আমাদের যে বক্তব্য সেখানে তুলে ধরা হবে।’
প্রসঙ্গত : ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ডেলিগেটেড ওয়ার্ক হিসেবে গণপূর্ত অধিদফতর নির্মাণাধীন ৬টি ভবনে আসবাবপত্রসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য দাফতরিক প্রাক্কলন প্রণয়নপূর্বক ৬টি প্যাকেজে ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করে।’
প্যাকেজের প্রতিটির ক্রয় মূল্য ৩০ কোটি টাকার নিন্মে প্রাক্কলন করায় অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগ দেয় গণপূর্ত অধিদফতর। এক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলন প্রণয়ন, অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
আলোচ্য কাজের বিপরীতে এখনও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন