পাহাড়ের বিশালতা পাহাড়ী নদীর কলতানে মুগ্ধ হবার সাধ আস্বাদন করার লোভটা থাকে প্রায় প্রতিটি মানুষের মধ্যে। কেননা বিশালতার মধ্যে ম্রিয়মাণ থাকে অপরুপ সৌন্দর্যের কারুকার্য। যার রূপে বিমোহিত হই আমরা সবাই অনেকটা দূর থেকে ঝাপসা দেখার পর থেকে। আর কাছে গেলে তো অবাক। তেমনটা সৌন্দর্য থেকে বাদ পড়েনি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে গড়া আমাদের এই অপরুপ রুপবতী বাংলাদেশ। এদেশের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ জুড়ে রয়েছে পাহাড়ী অঞ্চলের বিশাল বিস্তৃতি।
সেই বিশাল পাহাড়ের বিশাল রুপময়ী রুপ অবলোকনের আশায় সর্বদা ছুটে যায় ভ্রমণপিয়াসী মানুষ। তাই ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ (বৃহস্পতিবার) তিনশত ষাট আউলিয়ার দেশ সিলেটে ভ্রমণ সম্পন্ন করেছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম ও একমাত্র সাংবাদিক সমিতি সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস)।
এক দিনের ভ্রমণে জাফলং, লালাখাল, সিলেট শহর ও মাজার ভ্রমণের পাশাপাশি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ সম্পন্ন করে। আনন্দভ্রণের শুরুহয় রাত ১০টায়। নির্দিষ্ট সময়ে ধামরাইয়ের আশরাফ রেন্ট এ কার থেকে ভাড়া করা গাড়ি উপস্থিত হলে যাত্রা শুরু হয়। সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দূর থেকে পাহাড় দেখে মুগ্ধ হয়ে ঘোরে পড়ে যায় সবাই। কনকনে শীতের সকালে জাফলং-এ পাহাড়ী নদীর ঠান্ডা পানির ছোয়ায় ঘোর কাটে সবার।
বাংলাদেশের সীমান্তে মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা ঠান্ডা পানির প্রবল স্রোত থরে থরে সাজানো পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলে। ঠিক যেন মৃদুমন্দ বাতাসের সাথে ভেসে চলা একটি পাথুরে নদী। পাথরের উপর দিয়ে হেটে যেতে পা ব্যাথা পেল অনেকে। তবে তাতে কি! ভ্রমণ আনন্দের তোড়ে তুচ্ছ সব কিছু।
শীতকালে নদীর কিছু অংশ শুকিয়ে সমুদ্র সৈকতের বালুর তীরের দৃশ্যের কিছুটা রুপ নেয়। তা দেখতে দেখতে বাসনা হল নদীতে ডিঙ্গি নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর। নৌকায় ঘুরেই জাফলং-কে বিদায় জানালো গবিসাসের সদস্যরা, আর যাত্রা শুরু হল লালাখালের উদ্দেশ্যে। পথমধ্যে যাত্রা বিরতি হল জাফলং-এর পাহাড়ের গায়ের ছাট ছোট চা বাগানের বুকে। তার সাথে পাহাড়ের চূড়ায় পদার্পণের সাধ নেয়া।
হঠাৎ ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে বলল- “ঐ যে নদী। আর এটা লালাখাল।” নীল পানির স্নিগ্ধ নদী যেন শান্ত কোলাহলমুক্ত সবুজ মনোরম অঞ্চলের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ঘোরের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিল। গোসলের প্রস্তুতি নিয়ে নদীতে ঘুরে ঠান্ডা পানিতে স্নান করতেই এক নতুন অনুভূতির সাথে পরিচয় পাওয়া গেল।
এরপর শাহ-জালালের মাজার আর সিলেট শহরের বিস্তার ও তার সান্ধ্য জীবনযাত্রা দেখে শেষ করে পৌঁছলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষ করে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা আর প্রাণবন্ত আড্ডায় মেতে উঠল দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকেরা। অবশেষে আবারও রাত ১০টায় শুরুহল যাত্রা শেষ করার উদ্দেশ্যে যাত্রা। রাস্তায় কুয়াশা বার বার রথ করছিল গতি। তবুও চলছিল ছুটে চলা নীড়ের আশায়।
ষ মেহেদী তারেক
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন