শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দেশে ফিরেই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সিলেটের ১৩ যুবক

ছেলের অপেক্ষায় ব্যাকুল রুবেলের মা

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৯, ২:৪৮ পিএম

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া সিলেটের ১৩ জনসহ ১৫ যুবক দেশে ফিরেছেন। বাকী দুইজন মাদারীপুরের বাসিন্ধা বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান ১৫ বাংলাদেশি। বিমানবন্দরে এসেই পড়তে হয় বিভিন্ন সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের ‘গ্যাড়াকলে’। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের কারণে বিমানবন্দরেই কেটেছে সারাদিন। এখনো তারা ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। তাদের পরিবারের মধ্যে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সন্তানকে ফিরে পাবার ব্যাকুলতায় পথ চেয়ে বসে আছেন মা।

সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের ঘোপাল গ্রামের রুবেল আহমদের মাতা রাজিয়া বেগমের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

বুধবার ২টার দিকে রুবেল বাড়ি ফিরেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওই মা জানান, ‘নারে বাবা, এখনো আমার ফোয়া (ছেলে) বাড়ি আইছে না। আজ সকালে (বুধবার) আইডি কার্ড নেওয়াইছে, সবে আমার ফোয়ার (ছেলের) লাগি দোয়া করিও।’

তিনি আরো জানান, বিশ^নাথের রফিক নামে একজনের সাথে ৯ লাখ টাকায় চুক্তি করেছিলেন তারা।

দেশে ফেরত আসাদের মধ্যে রয়েছেন সিলেট সদর উপজেলার ঘোপাল এলাকার মো. চমক আলীর ছেলে রুবেল আহমদ, দক্ষিণ সুরমার লালারগাঁও এলাকার জাবের, বিশ্বনাথ উপজেলার পালরচক গ্রামের মাছুম আহমদ এবং বিয়ানীবাজারে আরেক যুবকসহ সিলেটের ১৩ জন রয়েছেন বলে জানান রুবেলের ভাই রাসেল।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওই ১৫ জন দেশে পৌঁছান। শাহজালালে আসার পর রুবেলের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বিমানবন্দরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তিনি বলেন, রুবেলের সঙ্গে একই ফ্লাইটে দেশে আসা সিলেটের ১৩ জনই বিশ্বনাথ উপজেলার কাঠলীপাড়া গ্রামের চমক আলীর ছেলে আদম ব্যাপারী রফিকুল ইসলাম রফিকের মাধ্যমে ইতালি যেতে চেয়েছিলেন।

রুবেলের মামা আবুল হোসেন জানান, ২০১৮ সালের জুন মাসে ১০ রমজান আদম ব্যাপারী রফিকুল ইসলাম রফিকের মাধ্যমে রুবেলকে লিবিয়া পাঠানো হয়। রফিক লিবিয়ায় থাকা তার পুত্র পারভেজের মাধ্যমে ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করে। লিবিয়ার পৌঁছার আগে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা নেয় রফিক।

এরপর গত ৯ মে লিবিয়া থেকে ইতালি পাঠানোর আগে তাদের কাছ থেকে আরও সাড়ে তিন লাখ টাকা নেয় তারা। ওই টাকাগুলো নিজের বসতঘরের পাশের চার শতক জায়গা বিক্রি করে দেয়া হয়। সবমিলিয়ে ৯ লাখ টাকা দালালের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

তিনি আরো জানান, দালাল রফিক তাদের সাথে কথা রাখেনি। কথা ছিল বাংলাদেশ থেকে বিমানে লিবিয়া এবং সেখান থেকে মাছ শিকারের জাহাজে করে তাদের ইতালি পাঠানো হবে। প্লাস্টিকের বেলুনের মতো নৌকায় তুলে সাগর পাড়ি দেয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য, সংঘাতময় লিবিয়ার জুয়ারা থেকে অবৈধভাবে ইতালিতে যাওয়ার পথে গত ১০ মে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৩৯ বাংলাদেশির একটি তালিকা সরকারের পক্ষ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত পাচারকারীচক্রের তিন সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এছাড়া নৌকাডুবে নিহত একজনের পরিবারের পক্ষ থেকে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন