শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

লালপুরে দেশি সীতাকুন্ডে বিদেশি পোশাকের কদর

জমজমাট ঈদ বাজার

অভ্যন্তরীণ ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০১৯, ১২:১৮ এএম

সারাদেশে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। আমাদের নাটোরের লালপুর উপজেলা ও চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলা সংবাদদাতার পাঠানো প্রতিবেদন-
লালপুর (নাটোর) থেকে আশিকুর রহমান টুটুল জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন, ঈদ উপলক্ষে নাটোরের লালপুর উপজেলার বিপনী বিতান ও গার্মেন্টসগুলিতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। লালপুরে দেশি জামার কদর বেশি।

রমজান শেষ হতে আর কিছু দিন বাঁকি থাকলেও নিজেদের চাহিদা মতো পছন্দের পোশাক কিনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীদের পাশাপাশি পুরষেরাও। উপজেলার লালপুর বাজার, গোপালপুর বাজার ও ওয়ালিয়া বাজারের বিপনী বিতান ও গার্মেন্টসের দোকান গুলিতে এখন উপচেপড়া ভীড়। ঈদের আনন্দ পরিবারের সকলের মাঝে ভাগা ভাগি করে নিতে বিপনী বিতান ও গার্মেন্টসে গুলিতে পরিবার নিয়ে ঘুরেছেন অনেকেই। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট গুলি ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি বিপনী বিতান গুলিতে বিভিন্ন অফারের ব্যানার আর লাল-নীল আলোক সোজ্জায় সাজানো রয়েছে। জৈষ্ট্যের ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করে শপিংমল ও মার্কেট গুলিতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীর ছিলো। ঈদ উপলক্ষে গার্মেন্টস দোকান গুলিতে সকল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচা-কেনা। ঈদের বেচা-কেনায় দোকানীরা এতটাই ব্যস্ত যেন দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। নিজের পছন্দের পোশাকটি খুঁজে পেতে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটছেন অনেকে। এসময় ঈদে কেনা-কাটা করতে আসা লিজা নামের এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের তিনি বলেন, ‘নিজ ও পরিবারের জন্য নতুন পোশাক কিনতে এসেছি, এখনো পছন্দ করে উঠেতে পারিনাই তাই দোকান গুলি ঘুরে দেখছি।’

লালপুর বাজারে ঈদের কেনা-কাটা করতে আসা রানা আহম্মেদ বলেন, ‘ঈদে নিজের জন্য একটি পাঞ্জাবী ও পরিবারের অন্যদের জন্য নতুন পোশাক কিনেছি। এবছর বাজারে অনেক নতুন পোশাক এসেছে তবে দামটা একটু বেশিই নিচ্ছে।’
গোপালপুর বাজারে ঈদের কেনা-কাটা করতে আসা সুমাই ইসলাম বলেন, ‘আম্মু ও আব্বু কে নিয়ে ঈদের মার্কেট করতে এসেছি। ছোট ভাইয়ের জন্য পাঞ্জাবী, আম্মুর জন্য শাড়ী, আব্বুর জন্য পাঞ্জাবী ও নিজের জন্য থ্রিপিস কিনেছে।’
এবছর মার্কেটগুলিতে শিশু, তরুণ-তরুণীদের জন্য ১ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে ফ্রক, জিপসি, লেহেঙ্গা, থ্রিপিচ, ফ্লোরটাচ, সিনথেটিক ফ্রক, ভারতীয় সিনেমার নায়িকাদের পোশাক, সাবিয়া জামা ও বোরকা বিক্রয় হচ্ছে। গ্যাস সিল্ক, দোতারী সিল্ক, সিল্ক জামদানী, মিরপুরের লেহেঙ্গ শাড়ী, টাঙ্গাইলের সুতিকাতান, বেনারসী কাতান, স্বর্ণ কাতান ও পাকিজা প্রিন্ট শাড়ী বিক্রয় হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে। ছেলেদের রাজশাহী সিল্ক পাঞ্জাবী, ইন্ডিয়া কিউজি পাঞ্জাবী, সুতি, খদ্দর, প্রিন্ট পাঞ্জাবী, সেরওয়ানী, তৈরী শার্ট, গেঞ্জী, প্যান্ট ও শার্টের পিচ বিক্রয় হচ্ছে পাঁচশত থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রয় হচ্ছে।

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদা জানান, শেষ মহুর্তে জমেছে সীতাকুণ্ডে জমজমাট ঈদবাজার। উপজেলার বিভিন্ন সপিং মলগুলোতে এখন ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড় লক্ষ্যকরা গেছে। রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে ক্রেতাদের যার যার পছন্দের শাড়ি কাপড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্যগুলো ক্রয় করতে এখানকার শপিংমলগুলোতে রীতিমত শিশুসহ সকলেই ভিড় জমাচ্ছে। প্রতিদিন সকাল হওয়া মাত্র ঈদের কেনাকাটার উদ্দেশ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভাস্থ এলাকা থেকে শপিং মলগুলোতে পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে ছুটে আসছেন।

এমনি এক ক্রেতা উপজেলা পৌরসদরের বটতল নামক এলাকা থেকে আসা ইসরাত জাহান তামান্না, নুছরাত জাহান তানজিলা ও রাজিয়া সুলতানা ডলি জানান, তারা প্রতিবছর ঈদের কেনাকাটা করার জন্য সীতাকুণ্ড পৌরসদর বাজারে আসেন। তারা বলেন, এ বছর কাপড়ের দাম অনেকটা হাতের নাগালের মধ্যে থাকলেও ইন্ডিয়ান ও বিদেশী কাপড়ের দাম একটু বেশি। সে ক্ষেত্রে দেশের পণ্য বিদেশী কাপড়ের চাইতে গুনগত দিকদিয়ে অনেক ভাল। তারা বলেন, সব কাপড়ই পছন্দ হচ্ছে। এ বছর গ্রাউন ও কাতান থ্রিপিসের চাহিদা একটু বেশি। তবে নতুন নতুন অনেক ডিজাইনের কাপড় আসছে এখানের বিভিন্ন শপিংমলে।

এদিকে সীতাকুণ্ড কলেজ রোডস্থ বদিউল আলম নিউ মার্কেট এর দ্বিতীয় তলায় শাড়ি বাজার এর মালিক বাবলু চক্রবর্তীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, এবছর রোজা ১২টি চলাকালে বিক্রি শুরু হয়েছে। দেশীয় তাঁতের শাড়ি ৫শ’ থেকে ৪ হাজার, জামদানি ৮শ’ থেকে প্রায় ৮ হাজার পর্যন্ত, ইন্ডিয়ান বেনারশি আড়াইহাজার থেকে ৪০ হাজার, ইন্ডিয়ান কাতান ১২শ’ থেকে একেবারে ১৬ হাজার পর্যন্ত, কান্সি কাতান আড়াই হাজার থেকে ৪০ হাজার, পাটি শাড়ি ১৫শ’ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন এবছর বিদেশী ইন্ডিয়ান শাড়ির চাহিদা গত বছর থেকে অনেক বেশি। তবে দেশীয় কাপড় বিদেশী কাপড় থেকে অনেক উন্নত। কাপড়ের দাম এবছর অনেকটা হাতের নাগালে আছে। এছাড়া ঢাকাইয়া হাফ শিল্কসহ বিভিন্ন রকম কাপড় আসছে সপিংমলে। যা ক্রেতারা যার যার ঈদপণ্য ক্রয় করে অনেক সন্তুষ্ট হচ্ছে। ওপর দিকে সীতাকুণ্ড পৌরসভাস্থ এলাকা থেকে ঈদের কাপর কিনতে আসা ক্রেতা ফারিহা জাহান মুন্নি ও রজিনা আক্তার বলেন, তারা দেশীয় সুতির থ্রিপিসসহ আরো অন্যান্য কাপড় কিনেছেন।

তারা বলেন, এবছর ইন্ডিয়ান কাতান শাড়িসহ বিভিন্ন থ্রিপিসের কদর অন্যান্য কাপড় থেকে অনেক বেশি। তাই ক্রেতারা বিদেশী কাপড়ের দিকে ঝুঁকছেন। তবে দেশীয় কাপড়ের ডিজাইন ও টেকসই অনেক ভাল। সকালে একটু বিক্রি কম হলেও বিকেলের দিকে ক্রেতাদের ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশী। অন্যান্য স্থান থেকে এ উপজেলা সদর সপিং মলগুলোতে কাপড়ের দাম অনেকটা কম। তাই বাইরে না গিয়ে এখানে চলে আসি।
এ বিষয়ে কলেজ রোডস্থ শাড়ি মেলার মালিক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, প্রথম থেকেই ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। দেশীয় থ্রিপিস ব্রুটিক্স বিক্রি হচ্ছে ৪শ’ থেকে ৬ হাজার, গ্রাউন ১৩শ’ থেকে ৬ হাজার টাকা। এছাড়া ইন্ডিয়ান বিনয়, ইন্ডিয়ান থ্রিপিস লাছা, কেটরিনা, চেন্নায়সহ ইন্ডিয়ান থ্রিপিসের দিকে নারীরা বেশী ঝুঁকছেন। তিনি বলেন, এখন বিক্রি ভাল হচ্ছে। অন্যদিকে কলেজ রোডস্থ মরিয়ম প্লাজায় আসা ক্রেতা লিমা আক্তার বলেন, ইন্ডিয়ান কাতান, হাফশিল্ক শাড়ি ও থ্রিপিস গ্রাউন, লাছা ও বিনয় ক্লাসিক কাপড়ের উপর মহিলা ঝুঁকছে বেশী। সরেজমিন সীতাকুণ্ড বিভিন্ন সপিংমল গুলোতে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে, শিশুদের বিভিন্ন রকম কাপড় থেকে শুরুকরে আরো অন্যান্য প্রশাধনী ক্রয়ের জন্য প্রত্যেক দোকানে ক্রেতারা দলে দলে এখন ভিড় করছে।

এ বিয়য়ে সীতাকুণ্ড পৌরসদর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বাজারে কোনো বিশৃঙ্খলা যেন না হয়, সে জন্য আমরা ও উপজেলা প্রশাসন সর্বত্রই সতর্ক রয়েছে। এখন পর্যন্ত বাজারে কোনো প্রকার অপ্রীকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তাই ক্রেতারা নির্ভিগ্নে কেনাকাটা করছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন