শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বাড়ছে গরম বাড়ছে রোগী

ভোলায় চিকিৎসক সঙ্কটে সেবার করুণ হাল

ভোলা থেকে মো. জহিরুল হক | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০১৯, ১২:৪৫ এএম

ভোলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলায় ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৩ গুণ রোগী নিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। ধারণ ক্ষমতার বেশী রোগী থাকায় সেবার মান ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালের বারান্ধায় রোগীদের চিকিৎসা নিতে হয়। অন্যদিকে ডাক্তার নার্সের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় ডাক্তার-নার্সদের চিকিৎসা দেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। রোগীদের সাথে বাক-বিতন্ডাও হচ্ছে প্রায় সময়।

গরমের কারণে রোগীদের চাপ বেশী বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে ডায়রিয়া রোগীদের চাপ অনেক বেশী। ভাইরাস জনিত রোগীর সংখ্যা প্রকট। রোগীর তুলনায় শয্যা কম থাকায় শয্যা সঙ্কটের কারণে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।

এছাড়াও চিকিৎসক সঙ্কট থাকায় মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ অন্যদিকে রোগীদের ভিড় থাকায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন রোগীর স্বজনরাও।

গত কয়েক দিন ধরে জেলার তাপমাত্রা কখনো ৩৭ আবার কখনো ৩৮ ডিগ্রীতে উঠা-নামা করছে। ১০০ শয্যার ভোলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখে গেছে, রোগীদের ওপচে পড়া ভিড়। ১০০ শয্যার বিপরীতে রোগী রয়েছে তিন শতাধিক।

বিশেষ করে ডায়রিয়া, মেডিসিন, শিশু ও গাইনি, মৌসুমি জ্বরের রোগীদের চাপ। একদিকে অসহনীয় গরম অন্যদিকে শয্যা সঙ্কট থাকায় ঠিকমত চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। ডাক্তার-নার্সরাও বিরামহীন চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৪৩ জন রোগী রয়েছে। সেখানে পর্যান্ত শয্যা না থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে রোগীদের। ফ্লোরে বিছানা করে কোন রকম চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। তবে পর্যাপ্ত নার্স না থাকায় রোগীরা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
একই চিত্র পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের। ডায়রিয়া ও মেডিসিন ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্সরা জানান, বেড সঙ্কট থাকায় অতিরিক্ত বেডে কিছু সংখ্যক রোগী থাকালেও রোগীদের চাপ একটু বেশী। তাই অনেকেই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সুত্র জানিয়েছে, ভোলা সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলছে ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে। এখানে ৬৫ টি নার্সের পদের বিপরীতে নার্স থাকলেও ডাক্তার রয়েছে চাহিদার অর্ধেক। এখানে ২২ টি ডাক্তারের বিপরীতে ডাক্তার রয়েছে মাত্র ১১ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে ইসিজি মেশিন মাঝে মধ্যেই বিকল হয়ে যায়। এছাড়াও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন দীর্ঘদিন থেকে বিকল অবস্থা পড়ে রয়েছে। এতে রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া বোরহান উদ্দিন, লালমোহন, তজুমুদ্দিনসহ বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বত্র প্রায় একই অবস্থা রোগীর সংখ্যা অনেক বেশী।

লালমোহন হাসপাতালের আরএমও ডা. মো. মহসীন খান জানান, প্রচন্ড গরম ও মৌসুমি রোগীর সংখ্যা অনেক বেশী। একদিকে রোগীর চাপ বেশী অন্যদিকে ডাক্তার ও শয্যা সঙ্কট। তারপরও দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছি রোগীদের সেবা দেয়ার।

ভোলার সিভিল সার্জন ডা. রথীন্দ্র নাথ মজুমদার বলেন, প্রচন্ড গরমের কারনে ডায়রিয়ার ও ভাইরাস জনিত রোগীর সংখ্যা খুব বেশী। শয্যা সঙ্কট থাকায় আমরা অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করেছি কিন্তু তারপরেও ৩ শতাধিক রোগী রয়েছে। আমাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। ডাক্তার সঙ্কট রয়েছে। ডাক্তার চেয়ে একাধিকবার উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে আমরা রোগীদের পর্যন্ত সেবা দেয়ার প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন