ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই ভিন্নতা। কোন বাঁধাই যেন বাঁধা নয় আনন্দ ভ্রমণের কাছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ঈদের সেই আনন্দ উপভোগ করতে সব বয়সের মানুষের পদভারে মূখরিত মীরসরাই পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। মেঘলা দিন উপেক্ষা করে শরতের স্বচ্ছ আকাশ দেখতে পেলেই দল বেঁধে দর্শকরা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছিল মীরসরাই উপজেলাস্থ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহামায়া লেক ও ঝর্ণা এবং মহুরী প্রকল্প গুলোতে উপচে পড়া জলে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক মহামায়া এবং দেশের সর্বাধিক রুপসমৃদ্ধময় ঝর্ণা খৈয়াছরা ও রুপসি ঝর্ণায়, মহুরী প্রজেক্টে মানুষের ঢল পড়ে গেছে এবারের ঈদের পরদিন থেকেই। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ঝর্ণা গুলো ফুলে ফেঁপে অনেক মোহনীয় হয়ে থাকে। আর তাই সৌন্দর্য্য পিপাষুদের অনেকে এই সময় ঝর্ণার জলে অবগাহনে যেন আত্মহারা।
উপজেলার দর্শনীয় স্থান তথা মহামায়া লেক এবং উপজেলার দর্শনীয় বিভিন্ন ঝর্ণায় উপচে পড়ে দর্শনার্থীরা। কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন দিনভর মহামায়া লেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় করে। কেউ নৌকায় চড়ে লেকের দর্শনীয় স্থান ঝর্ণা, মনোমুগ্ধকর লেক আর প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যায়। পাহাড়, জল আর নীল আকাশে নিজেদের একাকার করে হারিয়ে যায প্রকৃতিতে। কেউ বা দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে খৈয়াছরা ঝর্ণা, বড় কমলদহ রুপসী ঝর্ণা, মীরসরাই হয়ে বোয়ালিয়া ঝর্ণা সহ বিভিন্ন ঝর্ণা দেখতে দলে দলে ছুটে আসে। ঢাকা, চট্টগ্রাম , কুমিল্লা, ফেনী, সহ দূর দূরান্ত থেকেই এই সবদর্শনার্থীর অধিক আগমন লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া স্থানীয় দর্শনার্থী ও রয়েছে অনেকে। আবার মুহুরী প্রকল্প এলাকায় ও দর্শনার্থীদের বেশ সমাগম ঘটে।
মহামায়া লেকের আগত পর্যটকের এখন মূল আকর্ষণ কায়াকিং করা। গত কয়েক বছর ধরে কায়াকিং এ দেশে ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। সেখানে কায়াকিং পরিচালনাকারী সংস্থা মহামায়া কায়াকিং পয়েন্টের প্রধান কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে সকল টুরিস্টদের বিনোদনের প্রধান খোরাক মিটাচ্ছে এ কায়াকিং। তাছাড়া আমরা টুরিস্ট্যদের রাত্রিযাপনের জন্য তাবু গেড়ে ক্যাম্পিং করার ব্যবস্থা করে আসছি। তাবু গেড়ে রাত্রি যাপন এবং কায়াকিং উপভোগের জন্য সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মহামায়াতে আসা ট্যুরিস্টদের ভিড় বাড়ছে।
ঈদের দ্বিতীয় দিন বৃহস্প্রতিবার (৬ জুন) মহামায়া লেকে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আফসানা ইয়াছমিন আঁখি, বলেন এখানে প্রকৃতির মাঝে নীরব সৌন্দর্য দেখে আমরা আবিভূত, তাই পরিবারে সবাইকে নিয়ে বেড়াতে এসেছি। নৌকা নিয়ে সকাল থেকে লেকের উত্তরাংশ দেখে পাখিদের আনাগোনা, কিছু গহীন বনাঞ্চল, ঝর্ণার কলকল মুগ্ধকর আবেশ নিয়ে ফিরছি আমরা।
যান্ত্রীক জীবনের অনেক অবসাদ যেন কেটে গেছে এই প্রকৃতির অপরুপতায়। শুক্রবার (৭ আগষ্ট) খৈয়াছরায় ঝর্ণা দেখতে ঢাকা গাজীপুর থেকে আসা মিজারুল ইসলাম বলেন এই ঝর্ণাটি আমাদের সকল সহকর্মীদের অনেক আনন্দ দিয়েছে। ভোরে রওনা হয়ে ঝর্ণার জলে দুপুর পর্যন্ত আনন্দ করে এখন আমরা ফিরছি। পুরো এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে আমরা বিমোহিত। বড় বড় পাথর, ঝর্ণার অবিরাম ঝরে পড়া জল মন কেড়েছে। আমরা যেন বিশুদ্ধ হয়েই ফিরছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন