চরম অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে সাতক্ষীরার একমাত্র সরকারি বক্ষব্যধি ক্লিনিক। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন। একজন মেডিকেল অফিসার ভারপ্রাপ্ত থাকলেও ঠিক মত অফিস করেন না। প্যাথলজিস্ট নেই, টেকনিশিয়ান না থাকায় নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান এক্স-রে মেশিন। উচ্চমান সহকারী অন্যত্র ডেপুটেশনে রয়েছেন। রোগী এলে রোগের বিবরণ শুনে ব্যবস্থাপত্র লিখছেন একজন নার্স।
সাতক্ষীরা শহরের বাটকেখালী এলাকায় অবস্থিত বক্ষব্যধি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, ক্লিনিকে আগত রোগীদের ব্যবস্থাপত্র লিখছেন সনিয়া খাতুন নামে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা একজন স্টাফ নার্স। কিভাবে বক্ষব্যধির মত জটিল রোগীর ব্যবস্থাপত্র বা ওষুধ লিখছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ডাক্তার না থাকায় লিখতে হচ্ছে। কিন্তু এটি আসলে আমার কাজ নয়।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের হামিজদ্দীন জানান, গত কয়েকদিন ধরে তার কাশির সাথে রক্ত উঠছে। তাই জরুরীভাবে চিকিৎসা নিতে আসেন বক্ষব্যধি হাসপাতালে। কিন্তু এখানে এসে হতাশ হয়েছেন তিনি। ডাক্তার না থাকায় একজন নার্স ওষুধপত্র লিখে দেন তাকে। এমনকি বুকের এক্স-রে বা অন্যান্য পরীক্ষাও করতে পারেননি তিনি।
সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা বদর উদ্দীন জানান, বুকের চিকিৎসা করতে এসে ডাক্তার না থাকার কারণে পরপর দুই দিন ফিরে গেছি। এই হাসপাতালের একজন মহিলা অফিস সহায়কের পরামর্শে বাইরে থেকে বুকের এক্স-রে করে নিয়ে এসেছিলাম। এক্স-রে করার পর একজন নার্স তাকে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
ফার্মাসিস্ট নিভা মজুমদার জানান, এখানে বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। একজন মেডিকেল অফিসার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করলেও তিনি সপ্তাহে একদিন, বুধবার আসেন। সপ্তাহের অন্যান্য দিন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে থাকেন। এছাড়া টেকনিশিয়ান না থাকায় এ হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্যাথলজিস্টের পদও বহুদিন শূন্য থাকায় মুমূর্ষু রোগীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারছেন না। একইভাবে এ হাসপাতালের বড়বাবু বা উচ্চমান সহকারীও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন।
এ ব্যাপারে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীর আহমেদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, মূলত দেশব্যাপী সরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোতে ডাক্তারসহ অন্যান্য লোকবল সংকট রয়েছে। তারপরও সেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন