শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে ছিল আদরের ছোট বোনের বিয়ে। গত বৃহস্পবিার হয়েছে গায়ে হলুদ। রাতেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল উবার চালক আরমানের। কিন্তু আর ফেরা হলো না তার। রাজধানীর উত্তরায় গাড়ির ভেতরে থেকে তার গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ৫২ নম্বর বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার খবর পেয়ে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনি ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। পরে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে রাখা হয়েছে। গতকাল রাত পর্যন্ত পুলিশ এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
নিহত উবার চালকের নাম আরমান ওরফে আমান (৩৭)। তিনি পাবনার ঈশ্বরদী থানার ফতে মোহাম্মদপুরের আব্দুল আব্দুল হাকিমের ছেলে। মিরপুরের ১১ নম্বরে ১২ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর লেনের ১৬ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি।
উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই মুশফিকুর রহমান বলেন, উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কে কে কা কারা গাড়ির ভেতর একজনকে গলা কেটে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। নিহত আরমান যে গাড়ির চালক ছিলেন, সে গাড়ির মালিক মিরপুর ১১ নম্বরের ৬ নম্বর লেনের ১২ নম্বর সড়কের এক ব্যবসায়ীর। তার ৭টি প্রাইভেটকার রয়েছে। সবগুলোই উবারে ভাড় দেয়া।
গাড়ির মালিকের ছোট ভাই অন্তর সাংবাদিকদের বলেন, রামপুরার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২১ মিনিটে উবারে কল পেয়ে যাত্রী নিয়ে উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরে আসেন চালক আরমান। সেখানে ১২টা ৪ মিনিটে তার ট্রিপ শেষ করে মিরপুরে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু রাত ১টার বেশি বেজে গেলেও তার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় আমি ড্রাইভার আরমানকে ফোন দিই। তখন অন্য একজন ফোন রিসিভ করে জানান, তার দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর আমাকে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। পরবর্তীতে আমি আরেকটি গাড়ি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি গাড়ির ভেতর আরমানের গলাকাটা লাশ।
তিনি আরো বলেন, আরমান প্রায় এক বছর যাবৎ আমাদের গাড়ি চালাতেন। সর্বশেষ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে আমরা দুই জন মিরপুরের একটি হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করেছিলাম। পরে সে আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়। এর পর রাতেই হত্যা করে কে বা কারা তাকে গলা কেটে হত্যা করেছে।
আরমানের স্বজনরা জানান, শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে তার ছোট বোনের বিয়ে। বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই গাড়ির মালিকের কাছে বুঝিয়ে সেখানে যাবার কথা ছিল আরমানের। কিন্তু রাতের আধারে কে বা কারা তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবিসহ বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করছে। খুব শীঘ্্রই অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন