আশাশুনি উপজেলার কুল্যা, বুধহাটা, কাদাকাটি ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলাসহ ধুলিহর ইউনিয়নের বুকচিরে বয়ে যাওয়া বেতনা নদী পলি জমে আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে। অতি জরুরি হয়ে পড়েছে খনন করা।
নদীটির সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মধ্যে জোয়ার ভাটা নেই বললেই চলে। সদরের ধুলিহর ইউনিয়নের মাটিয়াডাঙ্গা, মাছখোলা এবং আশাশুনির কুল্যা-গুনাকরকাটি ব্রিজ সংলগ্ন, বুধহাটা বাজার সংলগ্ন, নওয়াপাড়া ও মহেশ্বরকাটি এলাকার বেতনা নদীতে পলি জমতে জমতে ভাটার সময় নদীর তলদেশ জেগে উঠে। ফলে নদীতে ভাটার সময় সাধারণ মানুষ পায়ে হেটে পারাপার হয়ে থাকে। নদীটি যশোরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে শার্শা উপজেলার নাভারনের কাছ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে একে বেকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা থেকে আশাশুনি উপজেলার কয়েকটি গ্রামের বুক চিরে খোলপেটুয়া নদীতে গিয়ে মিশেছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক বেতনা নদীটির পরিচিতি নম্বর নং ৬৪। আবহমানকাল থেকে বেতনা নদীটির দৈর্ঘ্য ১৯১ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫৫ মিটার। কালের বিবর্তনে বেতনা নদী আজ হারিয়ে নদীটির চার ভাগের তিনভাগই ভরাট হয়ে নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে। এছাড়া সাতক্ষীরা সদরের বিভিন্ন এলাকায় নদীটি একেবারেই শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে এবং আশাশুনির অনেক স্থানে ভাটার সময় নদী হেটেই পার হয় সাধারণ মানুষ। বেতনা নদী তার নাব্যতা হারানোর ফলে লোকালয়ের মৎস্য ঘের, খাল, বিলের চেয়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে উচু হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। উপরন্ত বর্ষা মৌসুমে সকল খালেরসুইচ গেটের পাট বন্ধ করে রাখতে হয়, যাতে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে। আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর সাথে সাথে বেতনা নদী বালু মহল ঘোষণা করা হলে অথবা নদীটি যথাযথ কর্তৃপক্ষ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করলে অনেককাংশে নাব্যতা ফিরিয়ে আসতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
না হলে অচিরেই বাংলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে এক সময়ের প্রমত্তা বেতনা নদী। বিষয়টি আমলে নিয়ে নদী খননের কাজ শুরু করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন