মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঠায় দাঁড়িয়ে বোধ হারিয়ে দেখি আজব তামাশা

ফুয়াদ খন্দকার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৯, ১২:৪৪ পিএম

এদেশের খুব প্রচলিত একটা কথা "রোগীর চেয়ে ডাক্তার বেশি"। কেউ অসুস্থ হলেই যে যার মতো চিকিৎসা পদ্ধতি বাতলে দিতে একদম ই সময় নেন না। কিন্তু এবার বোধহয় এ কথাটি বদলানোর সময় এসেছে। এখন পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে মিলিয়ে বলা যেতেই পারে " অভিনেতার চেয়ে ক্যামেরাম্যান বেশি"। এবং এই কথাটি যে একদম ই যথার্থ তা আশে পাশে তাকালেই বেশ মিলিয়ে নেয়া যায়। প্রযুক্তির কল্যানে এখন সবার হাতে হাতেই মোবাইল। যার ফলে কোন ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই আমরা সামাজিক মাধ্যমে এর ভিডিও চিত্র দেখতে পারি। এতে যে আমাদের লাভ হচ্ছে না তাও কিন্তু নয়। কিন্তু সবচেয়ে লজ্জার ব্যপার এই যে মাঝে মাঝে ব্যাপারটি এতটাই দৃষ্টিকটু হয়ে দাঁড়ায় যা আসলেই আমাদের বিবেক কে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে। কোথাও কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে? মানুষজন সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে।কিন্তু কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছে না। সবাই মোবাইলে চিত্রটি ধারণ করতে ব্যস্ত। অথচ তখন ভিডিও এর চেয়ে অনেক অনেক বেশি প্রয়োজন ছিলো আক্রান্ত মানুষটি কে সাহায্য করা। এটা যেন আমাদের দেশে একটা নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে গেছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই একই ঘটনা লক্ষ করা যায়। এ দেশের মানুষের বিবেক যেনো স্তব্ধ হয়ে গেছে। অথচ এই জাতির কাছেই আছে পৃথিবীর একমাত্র ভাষার জন্য আন্দোলন ও জীবন দান। নিজের দেশকে মুক্ত করতে ৭১ এর মতো যুদ্ধ। আমরা সেই সে জাতি। তাহলে আজ কেনো আমাদের এই অবস্থা? আমরা কেনো আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে পারছি না? সত্যকে সত্য বলতে কেনো আমাদের এত ভয়?

গতকাল প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনায় রিফাত শরীফ নামে এক যুবক কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শত শত মানুষের সামনে তাকে ধারালো চাপাতি দিয়ে আঘাতের পর আঘাত করে নির্মম ভাবে হত্যা করে হয়েছে। তার স্ত্রীর আর্তচিৎকার রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা সে মানুষ গুলোর বিবেক কে স্পর্শ করতে পারেনি। অথচ সেখানে যদি আজ কোন চোর ধরা পরতো তাহলে হয়তো এ মানুষগুলোর গণপিটুনি তে জীবন হারাতে হতো। অথচ এত বড় হত্যাকান্ড হয়ে গেলো কিন্তু একটা মানুষ ও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসলো না। তবে কি শুধু দুর্বলের বিপক্ষেই আমাদের সুপ্ত বিবেক জাগ্রত হয়?

এ ধরনের হত্যাকান্ড যে এদেশের মাটিতে আগেও হয়নি এমনটি ও নয়। বহুবার বহু সময় এ রকম ঘটনা আমরা দেখেছি। কিন্তু বেশীরভাগ সময় ক্ষমতার প্রভাবে অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়। এত বছরেও বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার হয়নি। রিফাতের ভাগ্যে কি আছে আমার জানা নেই। শুধু মন থেকে একটাই চাওয়া অপরাধীদের যেনো এভাবেই প্রকাশ্য দিবালোকে শাস্তি দেয়া হয় যেনো আর কেউ এধরনের জঘন্য ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়।

পাশাপাশি আমাদের এই মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে সার্কাস দেখার স্বভাবের পরিবর্তন দরকার। কারণ আজ অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে আপনি ঠায় দাঁড়িয়ে ভিডিও করতে ব্যস্ত আছেন। কাল হয়তো একই রকম ঘটনায় আপনার ভিডিও সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হবে। আপনাদের এই অবস্থা থেকে কবিতার কয়েকটি লাইন চলে আসে,

ঠায় দাঁড়িয়ে, বোধ হারিয়ে

মারতে থাকা দেখি,

ক'দিন পরেই, আমার ঘরেই

লোকটা আমি একি!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Redowan ২৭ জুন, ২০১৯, ১:০৯ পিএম says : 0
Sir, Apni thaklee ki korten???? Boren, at bolen desh ar somajuk obusta kothai..
Total Reply(0)
রুবেল ২৭ জুন, ২০১৯, ২:১৭ পিএম says : 0
সেই দিন যদি বিশ্বজিৎকে কোপিয়ে হত্যাকারী সন্ত্রাসী দের রাস্ট্র শাস্তি দেওয়া ব্যাবস্থা করতো! তাহলে আজকে এই নরপিচাশদের তান্ডবলীলা দেখতে হতো না।
Total Reply(0)
Asaduzzanan ২৭ জুন, ২০১৯, ২:২৮ পিএম says : 0
এই সেই স্বাধীন দেশ। যে দেশ স্বাধীন করতে ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহীদ হন।দুই লক্ষ মা বোন নির্যাতিত হন। আমরা কোন স্বাধীন দেশে আছি? কেন তারা যুদ্ধ করেছিল?
Total Reply(0)
SaiNuL ২৭ জুন, ২০১৯, ৩:৩৩ পিএম says : 0
Lekha r bastobota ek na vai. Apni keno apnar puro gosthio jodi okhane thakten ami jor golai bolte pari apnio ............
Total Reply(0)
আল্লাহর বান্দা ২৭ জুন, ২০১৯, ৮:৫৮ পিএম says : 0
এদেরকে সকলের সামনে শাস্তি দেওয়া উচিত
Total Reply(0)
Nazrul ২৭ জুন, ২০১৯, ৯:৩১ পিএম says : 0
যারা এই হত্যাকান্ড ঘটালো ওদের অবশ্যই কোন না রাজনৈতিক পরিচয় আছে।
Total Reply(0)
ZAkir alHossain Himel ২৮ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম says : 0
সবার আগে দুর্ভাগা লোকটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ....আমার পরামর্শ ::: আমাদের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে ....তাছাড়া উপযুক্ত প্রমান সাপেক্ষে আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে জনসম্মুখে শাস্তি দাবি করছি .....
Total Reply(0)
Mohammad Ali Delowar ২৮ জুন, ২০১৯, ১:১৬ এএম says : 0
রিফাত, পরপারে যদি বিশ্বজিৎতের সাথে দেখা হয় তাকে বলিও তোমার বিচার তুমি পাওনি।
Total Reply(0)
Masud rana ২৮ জুন, ২০১৯, ৩:৩৫ পিএম says : 0
আমরা কিছু মানুষ অসহায় প্রতিবাদ করার সাহস থাকলেও করতে পারিনা তারও যথেষ্ট কারন আছে ূ
Total Reply(0)
Shafiq Nur ৩ জুলাই, ২০১৯, ১০:৪৭ এএম says : 0
মানবতা আজ কোথায়
Total Reply(0)
Chanchal Mostofa ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
প্রিয় স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ অল্পকাল সময়ের মধ্যে স্বাধীনতা পাওয়ায় অভ্যস্ত হওয়ায় (৯ মাসে স্বাধীনতা লাভ) দীর্ঘকাল কিছুটা পরাধীনতায় অর্থাৎ গণতন্ত্রের নামে অনেকটা গৃহবন্দিত্ব আবরণে বসবাসের কারনেই আমাদের কমবেশি সকলেরই মানসিক শক্তি'র মেরুদণ্ড দুর্বল হতে হতে, মানসিক প্রতিরোধ শক্তি ভেঙ্গে পরেছে। আর যে কারনেই বর্তমানের সময়ে আমাদের চোখের সামনে অনেক নিঃসংশ ঘটনা ঘটলেও তাৎক্ষণিক প্রতিরোধের ইচ্ছা জাগ্রত হওয়ার আগেই সেখানে একটি আতঙ্ক জাগ্রত হয়, আর তা'হলো ; না জানি আমি নিজেই আবার রাষ্ট্রিয়ভাবে কোন ঝামেলায় পড়েযাই! ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তারপরেও কিছুকিছু মানুষ এখনো অবশিষ্ট রয়েছে, যাঁহারা ঘটনার একটি মূহুর্ত্বে হলেও নিজস্ব অবচেতনমনে মধ্যস্তায় বা বাঁধা প্রদানের জন্য জাগ্রত হয়ে মাঝখানে উপস্থিত হয়ে পড়েন। যেমনটা বরগুনা'র এই রিফাত শরীফ-এর হত্যাকান্ডের সময়, যখন উপস্থিত জনতা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে নিজেদেরকে বাঁচানোর চেষ্টায় নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, এমনিতর একটি সময়ে একজন যুবক নিজ থেকে অগ্রসর হয়ে হত্যাকারীদের প্রতিরোধ করলেন। আর নয়তোবা হয়তো রিফাত শরীফ-এর নিথরদেহ ঐ রাস্তাতেই পড়ে থাকতো। কিন্তু সেই পরোপকারী যুবকটির নামধাম কি সমগ্র দেশবাসী ততোটা জানতে পেরেছে? না। কারন ; এখানেও রাজনৈতিক আবরণের প্রতিবন্ধকতা। তবে আর পরোপকারী মানুষ পাওয়া যাবে কোথায়??? সকলেইতো নিজেকে সানলানোর কাজেই ব্যস্ত থাকবেন।
Total Reply(0)
Chanchal Mostofa ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
প্রিয় স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ অল্পকাল সময়ের মধ্যে স্বাধীনতা পাওয়ায় অভ্যস্ত হওয়ায় (৯ মাসে স্বাধীনতা লাভ) দীর্ঘকাল কিছুটা পরাধীনতায় অর্থাৎ গণতন্ত্রের নামে অনেকটা গৃহবন্দিত্ব আবরণে বসবাসের কারনেই আমাদের কমবেশি সকলেরই মানসিক শক্তি'র মেরুদণ্ড দুর্বল হতে হতে, মানসিক প্রতিরোধ শক্তি ভেঙ্গে পরেছে। আর যে কারনেই বর্তমানের সময়ে আমাদের চোখের সামনে অনেক নিঃসংশ ঘটনা ঘটলেও তাৎক্ষণিক প্রতিরোধের ইচ্ছা জাগ্রত হওয়ার আগেই সেখানে একটি আতঙ্ক জাগ্রত হয়, আর তা'হলো ; না জানি আমি নিজেই আবার রাষ্ট্রিয়ভাবে কোন ঝামেলায় পড়েযাই! ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তারপরেও কিছুকিছু মানুষ এখনো অবশিষ্ট রয়েছে, যাঁহারা ঘটনার একটি মূহুর্ত্বে হলেও নিজস্ব অবচেতনমনে মধ্যস্তায় বা বাঁধা প্রদানের জন্য জাগ্রত হয়ে মাঝখানে উপস্থিত হয়ে পড়েন। যেমনটা বরগুনা'র এই রিফাত শরীফ-এর হত্যাকান্ডের সময়, যখন উপস্থিত জনতা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে নিজেদেরকে বাঁচানোর চেষ্টায় নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, এমনিতর একটি সময়ে একজন যুবক নিজ থেকে অগ্রসর হয়ে হত্যাকারীদের প্রতিরোধ করলেন। আর নয়তোবা হয়তো রিফাত শরীফ-এর নিথরদেহ ঐ রাস্তাতেই পড়ে থাকতো। কিন্তু সেই পরোপকারী যুবকটির নামধাম কি সমগ্র দেশবাসী ততোটা জানতে পেরেছে? না। কারন ; এখানেও রাজনৈতিক আবরণের প্রতিবন্ধকতা। তবে আর পরোপকারী মানুষ পাওয়া যাবে কোথায়??? সকলেইতো নিজেকে সানলানোর কাজেই ব্যস্ত থাকবেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন