গরমে শারীরিক সমস্যাগুলো একটু বেশি দেখা দেয়। প্রথম ঋতু পরিবর্তন এবং দ্বিতীয় গরম অর্থাৎ তাপমাত্রাজনিত সমস্যা। এ সময়ের প্রধান অসুখ ভাইরাল ফিভার, জন্ডিস, চিকেন পক্স, ডায়রিয়া। এছাড়া বাতাসে প্রচুর ধূলাবালি থাকার কারণে ডাস্ট এলার্জি, এজমা, নাক দিয়ে পানি পড়া ও সাইনোসাইটিসের সমস্যা দেখা যায়।
গরমের কারণে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। এজন্য শরীরে পানির স্বল্পতা ও ইলেক্ট্রোলাইটের অসাম্যতা দেখা যায়। ফলে সহজেই শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং অবসাদ বোধ করে।
গরমের এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এ সময়ের কিছু ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঔষধের পাশাপাশি সঠিক খাদ্য পথ্য ও ফলমূল গ্রহণে রোগ আরোগ্য দ্রæত হয়। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় এসব ফলমূল নিয়ে।
আম : পাকা আম নানা রকম পুষ্টি দেয় ও রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। আমের মধ্যে রয়েছে আয়রন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন-সি। এগুলো শরীরের নানা উপকারে আসে। আমে পটাশিয়াম থাকায় হার্টবিট ও রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ত্বক সুন্দর রাখে ও লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আমে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, ভিটামিন, মিনারেল ও এন্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ হওয়ায় হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, লিউকেমিয়াসহ
প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
কাঁঠাল : পাকা আম নানা রকম পুষ্টি দেয় ও রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। আমের মধ্যে রয়েছে আয়রন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন-সি। এগুলো শরীরের নানা উপকারে আসে। আমে পটাশিয়াম থাকায় হার্টবিট ও রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ত্বক সুন্দর রাখে ও লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আমে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, ভিটামিন, মিনারেল ও এন্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ হওয়ায় হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, লিউকেমিয়াসহ প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
জাম : জাম গাছ নিবিড় ছায়াদানকারী এবং এর কাঠ আর্দ্রতা সহিষ্ণু, দৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী। বাংলাদেশে এ গাছ ফলের জন্য লাগানো হয়। ফল পাকলে এর বাইরের অংশ ঘন ও কালো রঙের হয় এবং ভেতরের অংশ লাল রঙের রসে ভরে উঠে। পাকা জাম বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। পরিস্রুত জামের রস সিরকার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জামের রস রক্তবর্ধক ও রক্তপরিস্কারক।
তাল : তাল গাছ খুব বড় হয়। এ গাছের কোন শাখা প্রশাখা নাই। তাল গাছের ফল গ্রীস্মকালে পাঁকে। পাঁকা ফলে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন আছে। এ ফল খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাকা তালের রসের পিঠা গ্রামীণ বাংলাদেশের অনেকেরই প্রিয় খাদ্য, তাল গাছের রস ঘন ও উন্নত পানীয়। এ রস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এ রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করা যায়। এ ছাড়া তালের রসের চিনি থেকে তালমিছরি প্রস্তুত করা হয়। তালমিছরি কাশির জন্য উপকারী।
তরমুজ : তরমুজ আমাদের দেশের একটি অতি পরিচিত এবং সবার প্রিয় ফল। তরমুজে আছে লাইকোপেন, এমানো এসিড, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং পানি। অতিরিক্ত ঘাম এবং তৃষ্ণা দূর করতে তরমুজের রস খুবই কার্যকর। কাজের কারণে ক্লান্তি যতই আসুক তরমুজের রস খেলে অল্প সময়েই ক্লান্তি দূর হয়। এছাড়া তরমুজের বীজ বেটে ঠান্ডা পানিতে চিনিসহ মিশিয়ে খেলে প্রস্রাবের জ্বালা, প্রস্রাবের স্বল্পতা দূর হয় এবং প্রস্রাবের ফ্লো ঠিক রেখে কিডনি পরিষ্কার রাখে। ব্রংকাইটিস বা এজমা, হেপাটাইটিস এবং হজমেও তরমুজ সাহায্য করে।
পেঁপে : পেঁপে প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় তবে এটা মূলত গরমেরই ফল। পেঁপেতে আছে প্যাপাইন নামক এক প্রকার হজমকারক উপাদান। পানি কম খাওয়ার জন্য অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়। এ সমস্যা দূর করতে পাকা পেঁপে অত্যন্ত কার্যকর। কাঁচা পেঁপে ডায়রিয়া ও জন্ডিসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাঁচা পেঁপে সবজি হিসেবে এবং পাকা পেঁপে জুস করে খাওয়া যায়। পেঁপের জুস খুবই পুষ্টিকর এবং প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ও রক্ত পাইল্স নিরাময়ে কার্যকর।
লেবু : লেবুর শরবত কার না ভাল লাগে। প্রচন্ড মাথাব্যথার সময় এক কাপ লেবু চা যে কি উপকারী তা বলে বোঝানো যাবে না। গরমে ঘামার পর লেবুর শরবত দেহে আনে প্রশান্তি। পেট ফাঁপা, পেটে সমস্যা, ঠান্ডা, সর্দি-কাশিতে লেবু খুবই উপকারী। লেবুতে আছে ভিটামিন সি, লিমোনিন, টারপিন ও অন্যান্য উপাদান। জ্বর ও মুখের ঘা দূর করতে লেবুর ভূমিকা অনন্য।
ফ্রুটি/বাঙ্গি : ফ্রুটি আমাদের দেশের আরেকটি জনপ্রিয় ফল। ভিটামিন বি ও সি সমৃদ্ধ এই ফল গরমে আনে ¯িনগ্ধতা। এই ফলের রংও চমৎকার যা দেখলে মন ভাল হয়ে যায়। জ্বরের সময় দেহের তাপমাত্রা কমাতে এই ফলের জুস খুবই কার্যকর। এই ফল পেটের সমস্যা দূর করে, বমি নিবারন করে এবং হজম করতে সাহায্য করে। ত্বকের সমস্যায়ও এই ফল কার্যকর। প্রস্রাবের সমস্যা হলে এই ফলের রস উপকারী ভূমিকা পালন করে এবং দেহে পানির সাম্যতা ঠিক রাখে।
ডা. আলমগীর মতি
হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক
চেয়ারম্যান, মডার্ণ হারবাল গ্রুপ।
ফোন ০১৯১১৩৮৬৬১৭
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন