ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মান্দারীপাড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মকবুল হোসেনের সমর্থকদের উপর বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে নায়েব আলী খন্দকার নামে একব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মকবুল হোসেনের সমর্থকরা রাতে মান্দারীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী বৈঠক করছিলেন। এসময় নৌকার সমর্থকরা অতর্কিত গুলি চালায় ও যাওয়ার সময় একটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। গুলিতে মান্দারীপাড়া গ্রামের মৃত ইয়াজ উদ্দিন খন্দকারের ছেলে নায়েব আলী আহত হন। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মকবুল হোসেন অভিযোগ করেছেন, তার প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থী ফিরোজ আহমেদের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ জানান, এ ঘটনার সাথে আওয়ামী লীগ দায়ী নয়। স্থানীয় রামচন্দ্রপুর ক্যাম্প ইনচার্জ অজয় কুমার কুন্ডু জানান, রাত আনুমানিক ১২টার দিকে কে বা কারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে একটি হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এসময় এজকন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা ও বোমা বিস্ফোরণের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
১৪০ কেন্দ্রের সবগুলোই অধিক ঝুঁকিপূর্ণ
বাড়িঘরে হামলা, প্রতীকে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও হুমকি-ধমকির মধ্য দিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে আজ শনিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে সংঘাতময় হয়ে উঠেছে শৈলকুপা উপজেলা। ১৪টির মধ্যে ৮টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। হুমকি ও সন্ত্রাস সৃষ্টির ফলে বিএনপি প্রার্থীরাও কোটঠাসা হয়ে পড়েছে। শৈলকুপার মীর্জপুর ইউনিয়নের মান্দারীপাড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে গুলি ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নায়েব আলী খন্দকার নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। উপজেলার কাঁচেরকোল, দিগনগর ও দুধসর ইউনিয়নে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও নৌকায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ত্রাস সৃষ্টি ও পুলিশের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ভোট বর্জন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তার আহম্মেদ মৃধা। তিনি আবাইপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ছিলেন। অন্যদিকে শৈলকুপার ওসি মহিবুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে প্রত্যাহার করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্যমতে শৈলকুপার ১৪০টি ভোট কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শৈলকুপার ১৩ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র প্রার্থী রয়েছে। বর্তমান প্রার্থীর সংখ্যা ৪৪ জন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে ১৪০টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো শুরু হয়। সে সাথে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ, আনসার, ভিডিপি সদস্য ও নির্বাচনী কর্মকর্তারাও কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, নির্বাচন সুষ্ঠ করতে ঝিনাইদহ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। কেন্দ্রে কোন রকম বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে কঠোরভাবে দমনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, বিজিবি ও র্যাবের টহলের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন