পানিবদ্ধতা আর স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে কুমিল্লার প্রধান খাদ্য সংরক্ষণাগার ধর্মপুর খাদ্যগুদাম। অথচ এখান থেকেই জেলার সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, রেল পুলিশ, আনসার ও ক্যাডেট কলেজের রেশন সরবরাহ করা হয়। পানিবদ্ধতার কারণে গুদামের ভেতর ও বাইরের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ হওয়ায় খাদ্য সংরক্ষণের নেই পরিবেশ। গুদাম এলাকার সড়ক ভাঙাচুরা ও গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় খাদ্য পরিবহনেও বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘদিন অচল অবস্থার পরও সংস্কারে নেই কোনো উদ্যোগ।
জানা গেছে, কুমিল্লা শহরের ধর্মপুর এলাকায় ১৯৬০ সালে ৭ দশমিক ৭২৫ একর জমির ওপর ১০টি খাদ্যগুদাম নির্মিত হয়। পরবর্তীতে খাদ্য সংরক্ষণের আওতা বাড়াতে নির্মিত হয় আরও ৪টি গুদাম। এসব গুদামের ধারণ ক্ষমতা ছিল ১০ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন। বর্তমানে এ সব গুদামের মধ্যে ৮টি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। বাকি ৬টির ৪টিতে ধান চাল সংরক্ষণ করা হচ্ছে। অন্য ২টির একটিতে বস্তা সংরক্ষণ এবং অপরটি সাময়িকভাবে অফিসের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
খাদ্যগুদামের সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা জানান, পানিবদ্ধতার ফলে সৃষ্ট সমস্যার কারণে খাদ্য সংরক্ষণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সমস্যাগুলো উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পানিবদ্ধতার কারণে জমাট বাধা দূষিত পানি দিয়ে মালামাল উঠানামা করতে গিয়ে চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শ্রমিকরা। গুদাম এলাকার চারপাশে নিরাপত্তা দেয়াল নিচু হওয়ায় রাতে মাদকসেবিদের আনাগোনায় বিঘি্নত হচ্ছে গুদাম এলাকার নিরাপত্তা। এদিকে খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত গুদামগুলোতে একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ে। এছাড়া আশপাশের এলাকায় বাড়ি-ঘর উঁচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি এসে গুদাম এলাকায় জমা হয় এবং গুদাম এলাকার পশ্চিম পার্শ্বে রেল সড়ক থাকায় পানি নিষ্কাশন হয় না। এ কারণে প্রায় পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে করে গুদামে সংরক্ষিত খাদ্য আদ্রতার কারণে মানসম্মত রাখতে সমস্যা হচ্ছে। পানিবদ্ধতার কারণে অফিস ভবন, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসভবনও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে। দারোয়ানদের আবাসিক ব্যবস্থা থাকলেও পানিবদ্ধতার কারণে সেগুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ গুদামে কোনো শ্রমিক শেড না থাকায় তাদের বসবাসে সমস্যা হচ্ছে। খাদ্যগুদামের সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা আবদুল গণি মিয়া দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, পানিবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যার কারণে খাদ্য সংরক্ষণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সমস্যাগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা গুদাম এলাকা পরিদর্শন করেছেন। চলতি অর্থবছরের মধ্যে এ সব সমস্যার সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন