শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি কাজিপুরের চরাঞ্চলে : যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনে একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি

প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

টিএম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে : সিরাজগঞ্জের ৫টি উপজেলার চরাঞ্চলের ২৬টি ইউনিয়নের ৫ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায় পুরো শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকে প্রায় ৮ মাস এ দুর্ভোগ থাকে। মাইলের পর মাইল বালুর চরের মধ্যেদিয়ে এবং কোথাও কোথাও হাঁটুপানি পার হয়ে গ্রামে গ্রামে যাতায়াত করতে হয়। মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে কৃষি পণ্য চর থেকে শহরে আনতে গিয়ে কৃষকগণ চোখের পানি ফেলেন। কৃষি পণ্য বিক্রির পর লভাংশের বেশিরভাগই পরিবহন ব্যয় হয়। চরাঞ্চলের পরিবহন বলতে এখনও প্রাচীন আমলের ঘোড়ার গাড়িই মালামাল ও যাত্রী পরিবহনের একমাত্র বাহন। চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও চরের বাসিন্দাদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার এক দশক পূর্ব থেকে যমুনা নদীর ডান তীর ভাঙনের মুখে পড়ে। রংপুরের কাউনিয়া থেকে পাবনার ভেড়াকোলা পর্যন্ত যমুনা নদী বিস্তত। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থেকে শাহজাদপুর পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকাই যমুনার ব্যাপক ভাঙনের মুখে পড়ে। স্বাধীনতার পরবর্তীতে চরাঞ্চলের ব্যাপকভাবে জনমানুষের বসতী স্থাপন হয়। যমুনার তীরবর্তী ৫টি উপজেলা হয়। যমুনার তীরবর্তী ৫টি উপজেলা কাজিপুর উপজেলার ৮টি, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৪টি, বেলকুচি উপজেলার ৪টি, শাহজাদপুর উপজেলার ৪টি এবং চৌহালী উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন চরাঞ্চলকে ঘিরে প্রতিষ্ঠিত হয়। চরাঞ্চলের বালি মিশ্রিত মাটিতে মরিচ, বাদাম, কালাই, আখ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন মসলার ও সবজির ব্যাপকভাবে আবাদ হয়ে থাকে। নগর জীবনের আধুনিক সভ্যতার অনেক কিছুই চরাঞ্চলবাসীর ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অধিক ফসল চাষ করে শহরে এনে তারা বিক্রি করে জীবনযাপনের অধিক প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটায়। কিন্তু বিদ্যুৎ পাওয়া তাদের স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। সোলার সিস্টেমে অনেকে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে নিলেও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নতর না হওয়ায় চরাঞ্চলবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর। কাজিপুরের চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক ও খাসরাজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি জানান, সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলের এখন স্কুলকলেজ মাদ্রাসাসহ নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নানা ফসল উৎপাদন হচ্ছে। বিশেষ করে মরিচ ও সবজির আবাদ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে পণ্য আনানেয়া এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদে প্রকল্প দেয়া হলেও তা আংশিক বাস্তবায়ন হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও সহযোগিতা পাওয়া যায় না। অথচ শুষ্ক মৌসুমজুড়েই জনগণের দাবি রাস্তা, ব্রিজ ও বাঁধ নির্মাণের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন