বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের রাজনৈকিভাবে কিছুটা সক্রিয় করার চেষ্টা করছে। আগামী বৃহস্পতিবার বরিশালে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রথম বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব ছাড়াও শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপি সভাপতি মুজিবুর রাহমান সারোয়ার এ মহাসমাবেশ আয়জনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে সমাবেশের প্রাকÑপ্রস্তুতি প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দও সমাবেশের লক্ষে কাজ করছেন।
গত বছর ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি নির্বাচন ও ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের আগে-পড়ে বরিশাল সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বিএনপি ও এর অংগ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নজিরবিহীন হয়রানি এবং নির্যাতনের শিকার হন। তা থেকে বেরিয়ে এসে রাজনৈতিকভাবে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার কোন পদক্ষেপ এতদিন অনুপস্থিত ছিল। যদিও এর পেছনে পুলিশÑপ্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই ‘পুলিশ ও প্রশাসনকে জনগনের বা প্রজাতন্ত্রের সেবকের পরিবর্তে একটি দলের অতি উৎসাহী কর্মী’ বলে অভিযোগ করে আসছে বিরোধী দল। যার প্রমান হিসেবে বিগত বরিশাল সিটি নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে পুলিশ-প্রশাসনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকাকে তুলে ধরা হচ্ছে বার বার।
এ অবস্থাতেই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে ১৮ জুলাই বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে বিতর্কিত দুটি নির্বাচন পরবর্তি বড় ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করতে যাচ্ছে বিএনপি। সমাবেশে বরিশাল ছাড়াও পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠীর জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। এ বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমেই মাঠ পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করারও চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। তবে ‘দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এখনো বিরোধী রাজনৈতিক কর্মকান্ডে যেভাবে বাধা বিঘœ রয়েছে, তাতে পরিস্থিতির কতটা পরিবর্তন হবে’, সে ব্যাপারে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে সংশয় থাকলেও এসমাবেশেকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন মহলটি। তাদের মতে, ‘সব নিপীড়ন মেনে নিয়ে রাজনীতির মাঠে টিকে থাকতে আরো কৌশলী ভূমিকা গ্রহনের কেন বিকল্প নেই’।
আর ১৮ জুলাই’র বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের নেতা-কর্মীদের মাঝে কিছুটা হলেও রাজনৈতিক মনোভাব ফিরে আসতে পারে। তবে এক্ষেত্রে সব কিছুর আগে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দকে মতপার্থক্য ভূলে নিজেদের চেয়ে সংগঠনের স্বার্থে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। মাঠকর্মীদের সুখে দুঃখে পাশে থাকা সহ তাদেরকে প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচীতে কাজে লাগানোরও তাগিদ দিয়েছেন মহলটি।
পাশাপাশি এখনো দক্ষিণাঞ্চলে বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচীতে প্রতিপক্ষ দলের চেয়ে দলবাজ ও দলদাশ আইনÑশৃংখলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যকে দায়ী করা হচ্ছে বিরোধী দল থেকে। এসব অভিযোগ খন্ডন করতে পুলিশÑপ্রশাসন কি ভূমিকা গ্রহন করবে, তা দেখারও অপেক্ষায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
আর এসব কিছুর পরেও ১৮জুলাই বরিশালে বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশ দলের সাংগঠনিক ভীতকে মজবুত করতে যথেষ্ঠ সহায়ক হতে পারে বলেও মনে করছেন মহলটি। এমনকি এতেকরে জনপ্রত্যাশা পুরোপুরি পুরন না হলেও একটি সংগঠিত বিরোধী দল সম্পর্কে জনমনে হতাশা কিছুটা হলেও হৃাস পেতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন