বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের পেঁয়াজের বাজার ভারত থেকে আমদানি ওপর নির্ভরশীল। ভারতে দাম বাড়ার কারণে আমদানিকারকরা নতুন করে পেঁয়াজ আমদানি করতে সাহস পাচ্ছেন না। খুলনার সোনাডাঙ্গাস্থ পাইকারি বাজার ও বড় বাজারের কদমতলায় বিদেশি পেঁয়াজ আমদানি ৬০ শতাংশ কমেছে। ফলে সারা দেশের মতো খুলনায়ও পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
অন্যদিকে খুলনায় পেঁয়াজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মসলার দাম। পেঁয়াজ ও মশলার ঝাঁজে দিশেহারা সাধারণ মানুষ, নেপথ্যে রয়েছে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। তারা ঈদুল আজহা সামনে রেখে নানা অজুহাতে পেঁয়াজের পাশাপাশি মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খুলনা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, মহানগরীতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গতমাসে দর ছিল দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২০-২৪ টাকা এবং আমদানিকৃত পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২০-২২ টাকা। সেই হিসেবে, এ কয়েকদিনে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে। আর দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুণে পৌঁছেছে। শুধুমাত্র নগরীতেই নয়, জেলার সকল পাইকারি ও খুচরা বাজারে একই হারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
এদিকে পেঁয়াজের ন্যায় লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে সব ধরণের মসলা পণ্যের। মহানগরীর বড় বাজারে মসলার দোকানগুলোতে প্রতি কেজি এলাচ ২৩শ’ থেকে ২৪শ’ টাকা, লবঙ্গ ৯শ’ টাকা, দারুচিনি ৩৪০ টাকা, গোলমরিচ ৫৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অথচ খুচরা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি এলাচ ২৮শ’ টাকা, লবঙ্গ ১২শ’ টাকা, দার”চিনি ৪শ’ টাকা, গোলমরিচ ৮শ’ দরে বিক্রি করছে ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা। যা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি এলাচ ১৫শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা, লবঙ্গ ৮শ’ থেকে সাড়ে ৮শ’ টাকা, দারচিনি ৩শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
মহানগরীর ময়লাপোতা বাজারে আসা এম রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, কোরবানী এলেই বাজারে পেঁয়াজসহ গরম মসলার দাম বেড়ে যায়। কোনভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, দফায় দফায় বেড়ে এখন দেশি বা বিদেশি পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ। আর এ বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত জেলা টাস্কফোর্স কমিটি।
এ মাসের প্রথম সপ্তাহের তুলনায় খুচরা বাজারে দেশি-বিদেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি গড়ে ১৩ টাকা। রোববার স্থানীয় বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।
খুলনার পাইকারি ব্যবসায়ী তাজ ট্রেডিংয়ের ম্যানেজার মহিউদ্দিন মঈন জানান, ভারত থেকে আমদানির ওপর দক্ষিণাঞ্চলের পেঁয়াজের বাজার নির্ভরশীল। সে দেশে মূল্য বেশি হওয়ায় খুলনার পাইকারি বাজারগুলোতে দাম বেড়েছে। লোকসান এড়াতে আমদানিকারকরা চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ আমদানি করছেন না। চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজ আমদানি ৬০ শতাংশ কমেছে।
সোহেল ট্রেডিংয়ের মালিক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, পেঁয়াজের পাশাপাশি রসুনের মূল্যও বেড়েছে। এবারে দক্ষিণাঞ্চলে রসুনের চাষ কম হয়েছে। শনিবার পাইকারি বাজারে দেশি রসুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা এবং চীন থেকে আমদানি করা রসুন ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন