আবদুল আউয়াল ঠাকুর
দেশের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেদিকে নজর না দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ইস্যুকে সামনে আনা হচ্ছে। এর পেছনে প্রকৃত উদ্দেশ্য কী তা পরিষ্কার না হলেও এটা পরিষ্কার যে, শক্ত সুতার টান রয়েছে। আচমকাই দেশের রাজনীতিতে ইসরাইল ইস্যু ঢুকে পড়েছে। কে কোথায় কার সাথে কী নিয়ে কথা বলেছে অথবা কী হয়েছে না হয়েছে সেসবের পূর্ণ বিবরণ জানতে আরো অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ইতোমধ্যে এ নিয়ে পানি অনেক দূর গড়িয়েছে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ইসরাইলি লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি সাফাদির সাথে একজনের বৈঠকের সূত্র ধরে কথিত সরকার উচ্ছেদের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার এবং এ নিয়ে যখন সরব আলোচনা চলছে তখন উঠে এসেছে আরো একটি নতুন তথ্য। বিবিসির পক্ষ থেকে আলোচিত এই ইসরাইলি নেতার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হলে তিনি আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সঙ্গে তার বৈঠকের কথা জানিয়েছেন।
আলোচ্য বৈঠকগুলো সম্পর্কে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে তা পরস্পরবিরোধী। সরকারের পক্ষ থেকে সরকার উচ্ছেদের কথা বললেও সাফাদি তা অস্বীকার করেছেন। সেই সাথে তিনি কোনো দলের প্রতিনিধির সাথে বৈঠক করেননি বলে জানিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আবহ সৃষ্টির প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় যে ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকের কথা বলেছেন, সেখানেও নানা প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশে ইসরাইলি মিশন বা মোসাদের সাথে সম্পর্ক নিয়ে ইতোপূর্বেও নানা ধরনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। একবার সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী ইসরাইল গিয়েছিলেন বলেও খবর রেরিয়েছিল। বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, ইসরাইল বাংলাদেশে কী চায়, তার স্বরূপ কী এবং সেজন্য সে কতটা করতে সক্ষম। এটা পরিষ্কার যে, ইহুদিদের প্রধান কাজ হচ্ছে মুসলমানদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা। একবার ব্যাংকক সফরে গিয়ে সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দেখতে বেরিয়ে টিমের সাথে একজন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎ হয়েছিল। যে সময়ের কথা বলছি তখনও বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলছিল। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, সে সময়ের পরিস্থিতি এখনকার চেয়ে ভাল ছিল। আলোচনার শুরুতেই ইহুদি শিক্ষার্থী বললেন, তোমাদের দেশে তো গণতন্ত্র নেই। এ ব্যাপারে কোনো মতামত দেয়ার আগেই সে বলল, তোমাদের মেয়েদের তালাক দেয়ার ক্ষমতা নেই। একটু খটকা লাগল তালাকের সাথে গণতন্ত্রের মিল-অমিলের কথা শুনে। কারণ এভাবে কখনো ভাবিনি। এই প্রথম এ বিষয়টি শুনে তার কাছেই ব্যাখ্যা চাইলাম। তার মতে, মেয়েদের তালাক দেয়া একটি মৌলিক অধিকার। এটা না থাকলে দেশে গণতন্ত্র আছে তা বলা যাবে না। জবাবে শুধু তাকে এটুকু জানালাম, মুসলমানদের বিবাহ হয় শরিয়তি আইনে। আমাদের দেশের নাগরিকরা তাদের নিজস্ব ধর্মীয় বিধানে বিবাহ করে। সুতরাং সেটাকে রাজনীতির সাথে মিলিয়ে দেখা আমাদের দেশের রীতিতে নেই। এ আলোচনা অনেক দূর না এগোলেও সম্প্রতি বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে ইসরাইলি প্রসঙ্গের যেসব কথাবার্তা হচ্ছে তা যে রীতিমতো আশঙ্কার তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পক্ষ-বিপক্ষ যাই হোক, এটা কিন্তু ঠিক, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন আর জনগণের নিয়ন্ত্রণে নেই। কেবল যে ইসরাইলিদের সাথে বৈঠকের প্রসঙ্গ রয়েছে তাও ঠিক নয়। প্রতিবেশী ভারতের নানা পর্যায়ের নেতারা তো এদেশে এমনভাবে ঘোরাঘুরি করছেন যেন এটা তাদের নিজেদের দেশ। আবার সেই সাথে কোনো মুসলিম দেশের কেউ কোথাও গেলেই তাদের হতে হচ্ছে জঙ্গি। সে কারণে ঠিক কী ঘটছে সে আলোচনাই গুরুত্বপূর্ণ।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে যেসব অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করা হয়েছে সেখানে চলমান রাজনীতির বিষয় ও উঠে এসেছে। এ কথা বর্তমান সময়ে কাউকে বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দেশে মূল্যবোধ ও বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসীদের কোথাও দাঁড়ানোর জায়গাও নেই। যাকে যেখানে পাওয়া যায় তাকেই কোনো না কোনো মামলায় জড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। তা সত্ত্বেও প্রতিবারের মতো এবারও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে জিয়ার মৃত্যুবার্ষির্কীতে প্রধান আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় বক্তারা বিএনপি ধ্বংসের নানামুখী ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলে বলেছেন, হাজারো জুলুম-নির্যাতনের মুখেও বিএনপির একটি নেতাকর্মী দল ছেড়ে যাননি। এটাই প্রমাণ করে বিএনপি আছে, থাকবে। গণতন্ত্র ফেরাতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে নতুন প্লাটফর্ম গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন বিএনপির নেতারা। তারা বলেছেন, বিএনপির সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। জিয়াউর রহমান যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আজকের ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হারানো গণতন্ত্র ফেরানো বিএনপির একার পক্ষে সম্ভব নয়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সব গণতান্ত্রিক দল, পেশাজীবী, বৃদ্ধিজীবী. ছাত্র সুশীলসমাজÑ সব শ্রেণীর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন প্লাটফর্ম তৈরি করার কথাও নেতারা উল্লেখ করেছেন। তারা এই মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, বিএনপির প্রতি দেশের জনগণের যে জনসমর্থন রয়েছে তাতে এই প্লাটফর্ম তৈরি করতে পারলে সফলতা আসবে। একই দিনে প্রাসঙ্গিক সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে বিবিসি থেকেও। সে আলোচনার বিশ্লেষক মনে করেন, বর্তমান বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের ওপরই দাঁড়িয়ে আছে। প্লাটফর্ম সম্পর্কে বিশ্লেষক মনে করেন, বিএনপি এখন নিজেই যথেষ্ট শক্তিশালী। পুরনো ফর্মে তার প্লাটফর্ম গঠনের কোনো প্রয়োজন নেই। এ আলোচনায় যে বিষয়টির নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে তা হলো বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে। তিনি মনে করেন বিএনপি এখন নেতৃত্বের শূন্যতার দিকে যাচ্ছে, যেটি গভীর আশঙ্কার। সেই সাথে চলমান রাজনীতিতে যা ঘটছে বা ঘটতে যাচ্ছে বলে অনুমিত হচ্ছে সে প্রেক্ষিতে নানা বিবেচনা হয়তো থেকে থাকতে পারে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র হিসেবে আজকে মিথ্যা মামলার মাধ্যমে সমগ্র দেশকে গণতন্ত্রহীন করা হচ্ছে। ভাববার রয়েছে, বিএনপির সফল সম্মেলন সমাপ্ত হওয়ার পর যেখানে নেতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন কোন মহল থেকে তোলা হয়নি সেখানে এখন এ প্রশ্ন কেন নানা মহল থেকে উঠছে? এ কথাও নতুন করে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই যে, প্রেসিডেন্ট জিয়া এবং বেগম জিয়ার মধ্যে ব্যক্তি হিসেবে কোন পর্যায়ে কতটা মিল-অমিল রয়েছে সেটি রাজনীতিতে হয়তো বড় নয়। বড় হচ্ছে রাজনীতি। বিএনপি তার রাজনীতিতে অটল-অবিচল রয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, সামগ্রিক রাজনীতিতেই এক বড় ধরনের ব্যত্যয় ঘটেছে। মূলত যে আলোচনা রয়েছে বা চলছে তা নিয়ে নতুন করে কোনো কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। সম্প্রতি সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার সম্পর্কে প্রকাশ্যে যাই বলা হোক মূলত এটি করা হয়েছে বেগম জিয়ার সাথে তার রাজনৈতিক সম্পর্কের সূত্র ধরেই। এর অন্য অর্থ হচ্ছে বেগম জিয়াকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা। অন্যদিকে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক আমলে তার বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে নি¤œ আদালতে আত্মসমর্পণের কথা বলা হলেও, এ নিয়েও নানা প্রসঙ্গ রয়েছে। প্রাসঙ্গিক আলোচনায় সরকারি কোনো কোনো মহল এমন একটা ভাব দেখাচ্ছেন যেন তারা ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানেন না। তাদের কেউ কেউ বলছেন। আমরা এসব ব্যাপারে কিছুই জানি না। ওই সরকারের করা মামলাগুলো কেন করা হয়েছিল তা কারো জানা নয়। দেশকে রাজনীতি বিযুক্ত করাই ছিল প্রধান লক্ষ্য। ক্ষমতায় গিয়ে আপনাদেরগুলো প্রত্যাহার করলেন। তাহলে বেগম জিয়া ও বিএনপিরগুলো করলেন না কেন? মূলত এখানেই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। নিজেদের আর মামুদের থাকার ব্যবস্থা করে এমন একটা ভাব দেখাচ্ছেন যেন মজা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন।
রাজনীতির উপরি অঙ্গনে যখন এক ধরনের নিশ্চিহ্নকরণ প্রক্রিয়া সরকারি উদ্যোগে চলছে তখন গভীর প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে দেশের নির্বাচন কমিশন। তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচন করতে গিয়ে এত কিছুর পরেও এক এলাকায় এমপির হাতে মার খেয়েছেন নির্বাচনী কর্মকর্তা। নির্বাচন করতে গিয়ে সহিংসতার শিকারে পরিণত হয়েছেন এমন একটি পরিবারের আকুল আর্তি প্রকাশিত হয়েছে মিডিয়ায়। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে স্ত্রী প্রশ্ন তুলছেন। তাদের পরিবারটির কী হবে? এ প্রশ্ন কেবলমাত্র একটি বা দুটি পরিবারে নয়। এ পর্যন্ত শতাধিক নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এবারই বোধহয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে আবহমান কাল ধরেই এ ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়ে আসছে। তাহলে এবার এ অবস্থা কেন? অনেকে এ প্রশ্নের জন্য দলীয় প্রতীকের কথা বলে দায় এড়িয়ে যেতে চান। প্রকৃত বিবেচনায় তা নয়। প্রতীক এবং সাধারণ অবস্থার মধ্যে নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুব একটা তারতম্য হওয়ার কথা ছিল না। প্রাণহানি ও সামগ্রিক অসহায়ত্বের মূলে রয়েছে তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রবণতা। এ বিষয়টি জাতীয় রাজনীতি থেকে অলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, তৃণমূল পর্যায়ের এই নির্বাচন মূলত নিয়ন্ত্রণ করছেন নাকি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী। তিনিই নাকি ঠিক করে দিচ্ছেন কে কোথায় নির্বাচিত হবেন। সে বিবেচনায় এটি অবশ্যই তদন্ত করে দেখার বিষয়। নির্বাচন কমিশন হত্যার দায় নিতে চাচ্ছে না। অথচ নির্বাচন করতে দ্বিধা করছে না। পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার জন্য একটি বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতে পারে। উচ্চতর আদালত দেশের সাধারণ মানুষের মানবাধিকার রক্ষার্থে ৫৪ ধারা ও ১৬৭ ধারা নিয়ে যে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন সে আলোকেই তারা একটি কমিটি গঠন করে দিতে পারেন। জনগণের আজ জানা খুবই জরুরি, কেন এবং কী কারণে নির্বাচনের মতো মত প্রকাশের প্রাথমিক ইউনিটে এ ধরনের মানবতাবিরোধী কর্মকা- ঘটছে। মূলত এর মধ্য দিয়ে আগামীতে যে কোনো নির্বাচন নিয়েই এক ধরনের নেতিবাচক বার্তা দেয়া হচ্ছে। এটাও এখানে উল্লেখ করা দরকার সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট নীতির কারণে ভেঙে পড়েছে প্রশাসন। লুট হয়ে গেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ। আমলাতন্ত্রে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে। অন্যদিকে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ করে বিনিয়োগে খরা অব্যাহত রয়েছে। অর্থনীতি ও রাজনীতি মূলত এখন ভারতনির্ভর হয়ে পড়েছে।
২০১৪ সালের অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সূত্র ধরে দেশে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছে তা টিকিয়ে রাখতে শীর্ষমহল থেকে শুরু করে প্রশাসনিক পর্যায়ে এক ধরনের মোসাহেব তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলনরত বেগম জিয়া ও বিএনপির ওপর চলছে নির্যাতন নিবর্তন। প্রাপ্ত তথ্যমতে বেগম জিয়াকে প্রধান আসামি করে এ পর্যন্ত অন্তত ২০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে তো আগে থেকেই দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি যাতে দেশে আসতে না পারেন সেজন্য তাকে আসামি করে অন্তত ৭৬টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মামলায় তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কমপক্ষে ৭৮টি মামলার আসামি করা হয়েছে। বাস্তবত বিএনপির এমন কোনো নেতা নেই যার বিরুদ্ধে ১০-২০টি মামলা নেই। শুধু বিএনপি নয়, জোটের অংশভুক্ত সবার ভাগ্যেই একই রূপ ‘পুরস্কার’ জুটেছে। গণতন্ত্রপন্থিদের নির্মূল করতে যে প্রক্রিয়া প্রবণতা সক্রিয় রয়েছে কার্যত তার অংশ হিসেবেই বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার ষড়ষন্ত্র যেমন এখন সবার কাছেই দৃশ্যমান তেমনি বিএনপিসহ ইসলামি মূল্যবোধ ও বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসীদের শেকড়শুদ্ধ নির্মূল করার চক্রান্তও কারো কাছে অস্পষ্ট নয়। জাতীয় ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাস্তবতা এবং সরকারি নীতি-কৌশলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে যদি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দিকটিকে বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে বোধহয় এ কথা না বলে কোনো উপায় নেই যে, অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষার দুর্গ ভেঙে বা তছনছ করে দিয়ে এখন কোনো মহল হয়তো অপেক্ষা করছে বা সময় নিচ্ছে। এটি সামগ্রিক বিবেচনায় গভীর উদ্বেগের বিষয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হতে হবে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা। এলোমেলো করে লুটেপুটে খাবার জন্য যারা অপেক্ষায় রয়েছে তাদের ব্যাপারে সজাগ হতে হবে। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে আপস-মীমাংসার পরিবর্তে বোধকরি অজ্ঞাত ভীতিতে দেশের রাজনীতিকে কঠিনতর বাস্তবতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
awalthakur@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন