মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎকালীন (২০০১-২০০৭) পর্যন্ত দেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালীন তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন মো.আমজাদ হোসেন চৌধুরী। বর্তমানে তিনি চাঁদপুরের কচুয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত আছেন, বিপি নং ৬৭৮৬০০৬৬৫২। বর্তমানে তিনি মারাত্বক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ্য অবস্থায় কর্মরত রয়েছেন।
কর্মময় জীবনে তিনি পরিশ্রম, সততা, নিষ্ঠা ও সাহসীকতার সাথে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর স্পেশাল ব্যাঞ্চ ঢাকা, ডিএমপিসহ বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি এ থানায় এএসআই হিসেবে ২০ মাস যাবৎ সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
আমজাদ হোসেন চৌধুরী জানান, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের সময় শপথ নিয়ে ছিলাম সততা ও নিষ্ঠার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনের। এরই প্রেক্ষিতে পুরষ্কার হিসেবে ২০০১- ২০০৭ সাল পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী- তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রীর গানম্যান (দেহরক্ষী) হিসেবে নিয়োজিত ছিলাম। তিনি আরো জানান, ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিয়তে ভয়ানক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় আমি দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলাম। বিকট শব্দের আওয়াজে শত শত নেতা-কর্মীরা যখন ছুটাছুটি করছিল ঠিক সেই মুহুর্তে কাছে পাই তৎকালিন বিরোধী নেত্রীর এপিএস আলাউদ্দিন নাছিম ও পিএস নজরুল ইসলাম খানকে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে সাথে নিয়ে দ্রুত তার বাসা সুধাসদনে যান।
বর্তমানে কচুয়া থানার এএসআই মো. আমজাদ হোসেন চৌধুরী হৃদরোগে অনেকটা আক্রান্ত ভারাক্রান্ত। কাজ কর্মে ও চলাফেরায় অনেক কষ্ট হয়। একটু হাটলে কিংবা নিচু থেকে উচুতে উঠলে অনেক হাপিয়ে উঠেন। ইতিমধ্যে ২বার ষ্ট্রোক করে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নেন। কিন্তু অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেন না তিনি।
এ অবস্থায় তার কর্ম পরিচালনা, পরিবারের দায়িত্বভার ও সন্তানদের লেখাপড়ায় উচ্চতর ডিগ্রির জন্য আর্থিক অভাব অনটনের মধ্যেও সরকারের সামান্য বেতনে অসুস্থ অবস্থায় তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন ও সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, চাকুরি করে বড় বাড়ী-গাড়ীর মালিক হওয়ার কোন ইচ্ছা নেই। তবে সৎ ভাবে বেঁেচ থাকতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতায় আমার যে কোন একটি সন্তানকে এসআই হিসেবে নিয়োগ দিতে সহযোগিতা চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকা কালীন তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত ছিলাম। বর্তমানে আওয়ামীলীগ ৩ বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে দেশের ও পুলিশ বাহিনীর অনেক সুযোগ সুবিধা করে দিয়েছেন। আমি কখনো তাঁর কাছে যাইনি কিংবা কিছুই চাইনি। বর্তমানে আমার একটাই চাওয়া, আমার অভাবি সংসারের হার ধরতে আমার একটি ছেলেকে উপ পরিদর্শক পদে (এসআই) পদে চাকুরি দেয়ার দাবী করছি। নেত্রীর সাথে চাকরি করার তৎকালীন অনেক স্মৃতি জমা রয়েছে মনে। সুযোগ পেলে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে চাই এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।
উল্লেখ্য যে, হৃদরোগে আক্রান্ত মো. আমজাদ হোসেন চৌধুরী ১৯৬৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বি-বাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয় । তিনি ১৯৮৬ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তার বড় ছেলে মো.আমির হোসেন চৌধুরী মার্সেনডাইজে অর্নাস, ২য় ছেলে আফজাল হোসেন ৩য় ছেলে রায়হান চৌধুরী ফ্যাশন ডিজাইনার এবং একমাত্র মেয়ে আরাবিয়া চৌধুরী ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গালর্স স্কুল থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন