একটি দেখতে লাল, অন্যটি কালো। তাই সখ করে ওদের নাম রাখা হয়েছে লালু ও কালু। ৩ বছর ধরে চলছে ওদের লালন-পালন ও সেবা-যতœ। বর্তমানে এক একটির ওজন হয়েছে প্রায় ৩৫ মনের মতো। সামনে আসছে ঈদুল আযহা (কোরবানির ঈদ) বিক্রির জন্যই পরিবারের সবাই মিলে ওদের সেবাযতেœ ব্যস্ত সময় পার করছে।
বিশাল আকৃতির এই লালু-কালুকে দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে লোকজন ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের পথহারা গ্রামে বিদেশ ফেরত নূর মুহাম্মদ টেন্টুর বাড়িতে। নুর মুহাম্মদ টেন্টু মিয়ার ছেলে মানিক মিয়াই ৩ বছর ধরে লালন পালন করে প্রায় ৭০ মণ ওজনের বিশাল আকৃতির এই লালু কালুকে গড়ে তুলেছে।
ঐ লালু ও কালু নামে ষাড় দুটির মালিক মানিক মিয়া বলেন, আমি ৫ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান জাতের দুটি গাভী লালন পালনের উদ্দেশ্যে ক্রয় করে থাকি। পরে ওই গাভীর বাচ্চা দুটি পছন্দ হওয়ায় বাচ্চা দু’টি লালন পালন করতে থাকি। যা আজ প্রায় ৭০ মণ ওজনের বিশাল আকৃতির ষাড় গরুতে রুপান্তরিত হয়েছে। ষাড় দুটির গায়ের রং লাল ও কালো হওয়ায় তাদেরকে লালু ও কালু বলে অ্যাখ্যায়িত করা হয়েছে।
ব্যক্তিগতভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে পূর্বে এত বড় আকৃতির ষাড় গরু উপজেলার কোথাও সচরাচর দেখা মেলেনি। তাই পাশবর্তী এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত শত শত নারী, পুরুষ, ছোট বাচ্চারা আসে তাদের দেখতে। প্রতিনিয়ত মানুষের ভিড় দেখে গরুর মালিক একটু বিচলিত হতো প্রথম দিকে। তবে লালু কালোর প্রশংসা শুনে মন আনন্দ ভরে ওঠে বলে জানালেন গরুর মালিক মানিক মিয়া।
দেশীয় ব্যবস্থায় গরু দুটিকে লালন পালন প্রসঙ্গে গরুর মালিক বলেন, লাল কালুকে প্রতিদিন কলা, চোলা, খড়, ভুট্রা, আলু, মিষ্টি আলু, ভুষি, খুদ, কাচা ঘাস দিনে ৫ থেকে ৬ বার খাওয়ানো হয়। আর বিশাল আকৃতির হওয়ায় লালু কালোর শরীর ঠান্ডা রাখতে ৪ থেকে ৫ বার গোসল করানো হয়। এর জন্য বাড়িতে মোটর লাগানোসহ বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বাড়িতে জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও গরু দু’টিকে সারাক্ষণ বাতাসের মধ্যে রাখার জন্য ৪টি ফ্যানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
গরু দুটিকে দেখতে আসা মাসুদ সরদার নামের পাশের গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, ব্যক্তিগত ব্যবস্থায় বিশাল আকৃতির এই লালু কালু নাম শুনে আজ দেখতে এসেছি। এত বড় আকৃতির গরু আমার জীবনে এই প্রথম বার দেখলাম। আমার ধারণা গরু দুটির ওজন প্রায় ৭০ মণ হতে পারে। আর রংয়ের সাথে মিল থাকায় এদের নাম রাখা হয়েছে লালু-কালু তাই আরো বেশি আকর্ষন সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিন গরু দুটিকে ক্রয় করতে অনেক ক্রেতা ভিড় জমাচ্ছেন মানিক মিয়ার বাড়িতে।
লালু কালুর বিক্রির ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে গরুর মালিক মানিক বলেন, গরু দুটিকে হাটে নেওয়ার ইচ্ছা তেমন নেই। প্রতিদিন বাড়িতে গরু কিনতে ক্রেতা আসছে। আশা করি বাড়ি থেকেই ভালো দামে বিক্রি করা যাবে। তাই বাড়তি কোন চিন্তা করছি না।
অপর দিকে সমাজ জাতি গঠন (সজাগ) নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে ঈদের সামনে বিক্রির জন্য ৪৫টি ছোট-বড় ষাড় বড় করেছে। এক একটির ওজন হবে ৪ মন থেকে ৮মন। এ ষাড় গরু ওজন দিয়ে কেজি দরে বিক্রি করবেন বলে সজাগ প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণ খামারের ম্যানেজার আবুল হোসেন মন্টু জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন